সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের অভিশাপেই নাকি কাসভের হাতে হেমন্ত কারকারের মৃত্যু

516
সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের অভিশাপেই কাশাভের হাতে কারকারের মৃত্যু/The News বাংলা
সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের অভিশাপেই কাশাভের হাতে কারকারের মৃত্যু/The News বাংলা

ফের বিতর্কে মালেগাঁও বিস্ফোরণ অভিযুক্ত এবং ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর। শুক্রবার তিনি বললেন, মুম্বাইয়ের এটিএস চীফ হেমন্ত কারকারে মারা যান তার দেওয়া অভিশাপের কারনেই। এদিন সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেন “আমি তাকে বলেছিলাম তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে, আর দুই মাসেরও কম সময়েই জঙ্গিরা তাকে হত্যা করে”। সাধ্বী প্রজ্ঞার এই মন্তব্যের জেরেই শোরগোল পড়ে গেছে গোটা দেশে। তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুনঃ ধর্ষণ করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হল ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রী মধুকে

২০০৮ সালে মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে মোট ৭ অভিযুক্তের মধ্যে প্রজ্ঞার নামও যুক্ত হয়। সাধ্বীর অভিযোগ, মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ এলেও তাঁকে ছাড়তে রাজি হননি তদন্তের নেতৃত্বে থাকা কারকারে। আর এরপরেই নিজের কারাজীবনের কথা বলে তিনি জানান, মুম্বাইয়ের এটিএস চীফ হেমন্ত কারকারে কে তিনিই অভিশাপ দেন। আর তার জেরেই জঙ্গিদের গুলিতে মারা যায় কারকারে। এরপরেই তাঁকে সমালোচনায় বিদ্ধ করে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি।

আরও পড়ুনঃ মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞা ভোটযুদ্ধকে ধর্মযুদ্ধ বললেন

ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর বর্তমানে জামিনে আছেন। মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিরুদ্ধে তদন্ত বোর্ড গঠন করা হয়, যে তদন্ত করেছিলেন মুম্বাইয়ের এটিএস চীফ হেমন্ত কারকারে। সাধ্বী বলেন, সেই সময় এটিএস প্রধানকে তিনি নাকি অভিশাপ দিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, “তোর সর্বনাশ হবে”। এর কয়েক দিন পরেই ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় গুলিতে নিহত হন হেমন্ত কারকারে। সাধ্বীর দাবি, তাঁর অভিশাপেই এটিএস প্রধানের অকালমৃত্যু ঘটেছিল।

আরও পড়ুনঃ বিজেপি নেত্রী লকেটের বাড়ি ভাংচুর, বিজেপি তৃণমূল তরজা

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ভয়াবহ মুম্বই হামলায় শহিদ হয়েছিলেন মহারাষ্ট্র সন্ত্রাস দমন শাখার (এটিএস) প্রধান হেমন্ত কারকারে, মেজর সন্দীপ উন্নিকৃষ্ণন, মুম্বইয়ের অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার অশোক কামতে এবং সিনিয়র পুলিশ ইন্সপেক্টর বিজয় সালাসকর।

আরও পড়ুনঃ ভোটের মধ্যেই কংগ্রেস ছেড়ে শিবসেনায় প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী

ভোপালের একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর দাবি করেন, বাকি তদন্ত দল হেমন্ত কারকারকে বলেছিল, “যদি আপনার কাছে প্রমাণ না থাকে তবে সাধ্বী প্রজ্ঞাকে ছেড়ে দেওয়া হোক”। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, “সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেতে সব কিছু করব। কিন্তু তাকে যেতে দেওয়া হবে না”। তাঁর দাবি, যেনতেন প্রকারে তাঁকে সন্ত্রাসবাদী সাজানোর চেষ্টা করেছিলেন কারকারে।

আরও পড়ুনঃ ভোটের দায়িত্বে থাকা অর্ণব রায়ের উধাও হওয়া ফিরিয়ে এনেছে রাজকুমার রায়ের স্মৃতি

তিনি এ কথাও যোগ করেন যে, এটি তার ঘৃণা ছিল হিন্দুত্বের প্রতি এবং তিনি জাতিবিরোধী এবং ধর্ম বিরোধী ছিলেন। সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর দাবি করেন যে তাকে গ্রেফতার করার সময় থেকেই কারকারের জন্য খারাপ সময় শুরু হয়েছিল এবং মারা যাওয়ার পরই শেষ হয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ নদিয়ায় ইভিএমের দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার নিখোঁজ, ভোটকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য

২০০৮ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণের জেরে তিনি যখন কারাগারে ছিলেন তখন কর্মকর্তারা তাকে নির্যাতন করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর। দলীয় সম্মেলনে কারাগারের অত্যাচারের কাহিনী বর্ণনা করেন তিনি। সেখানে তিনি এমনও দাবি করেন যে জোর করে তাঁকে মালেগাঁও বিস্ফোরণে যুক্ত বলানোর জন্য কম চেষ্টা করেনি জেল কর্তৃপক্ষ। জেলের অত্যাচারের স্মৃতি রোমন্থন করে কেঁদে ফেললেন সাধ্বী প্রজ্ঞা।

আরও পড়ুনঃ ভোটের পরেও অশান্ত চোপড়ায় গুলির লড়াই, গুলিবিদ্ধ সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র

মালেগাঁও বিস্ফোরণের সাথে যুক্ত সন্দেহে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি জামিনে মুক্তি পাবার পরেই মধ্যপ্রদেশের ভোপাল লোকসভা কেন্দ্রে তাঁকে বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এই নিয়েও কম সমালোচনা হচ্ছে না।

আরও পড়ুনঃ মমতার সভা আলো করে বসে দাগী সমাজবিরোধী, নির্বাচন কমিশনে গেল বিরোধীরা

সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের এই মন্তব্যের পরেই দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। হেমন্ত কারকারে দেশের জন্য শহিদ হয়েছিলেন, একজন শহিদ দেশের গর্ব। তাঁকে নিয়ে এই ধরণের নিম্নমানের মন্তব্য কি করে কোনও প্রার্থী করতে পারে? বিরোধীরাও এই ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবার আবেদন জানিয়েছে। তবে তাতে বিশেষ কিছু হেলদোল নেই প্রজ্ঞার।

আরও পড়ুনঃ ভুল করে বিএসপি কে ভোট না দিয়ে নিজের হাতের আঙুল কেটে প্রায়শ্চিত্ব
আরও পড়ুনঃ দুদফায় ভোট থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলায় তৃতীয় দফায় সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন