বাজপেয়ীর হাতে শুরু চীনা ব্যবসা বাংলায় শেষ মোদীর আমলে

526
Image Source: Google

শিলিগুড়ি: এবার চীনা মাল থেকেও কি মুখ ফেরাল বাংলা ? দক্ষিনবঙ্গের পাশাপাশি এবার চীনা মালের বিক্রি কমল উত্তরবঙ্গেও। কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন বাংলার ব্যবসায়ীরা। অটলবিহারী বাজপেয়ীর হাত ধরে শুরু ব্যবসা কি শেষ নরেন্দ্র মোদীর আমলে?

আরও পড়ুনঃ উত্তরবঙ্গের জনবহুল স্টেশনেও কি লুকিয়ে আছে বিপদ

শারদোৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই আসন্ন দীপাবলি বা কালীপুজোর জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি তুঙ্গে গোটা রাজ্য জুড়ে। কোথাও মন্ডপ নির্মানের প্রস্তুতি কোথাও বা প্রতিমা নির্মানের প্রস্তুতি, কোথাও আবার আলোকসজ্জ্বার প্রস্তুতি চলছে। আর দীপাবলী মানেই আলোর রোশনাইয়ের উৎসব।

The News বাংলা

সমাজের যত অন্ধকার আছে তা দুর করে গোটা সমাজকে আলোকমালায় ভরিয়ে তোলার নামই দীপাবলি। হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকদিন বাকি এই আলোর উৎসবের। এই উৎসবে আলোর রোশনাইয়ে আলোকিত করতে শিলিগুড়ির বাজারে নতুন নতুন চাইনিজ আলোকের সম্ভার থাকলেও তেমন কোন ক্রেতার দেখা নেই বাজারগুলিতে। কমে গেছে চীনা মালের বিক্রি।

আরও পড়ুনঃ রাম মন্দির না বাবরি মসজিদ, লড়াই পিছিয়ে গেল

প্রতিবছর প্রত্যেকটি গৃহস্থের বাড়ি নতুন কোন বৈদ্যুতিক আলোর উপকরনে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা শুরু হয়ে যায় লক্ষ্মীপুজোর দিন থেকেই। তার জন্য শিলিগুড়ির বিধানমার্ক, হংকং মার্কেট সহ বিভিন্ন বাজারগুলি ও অন্যান্য বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিক্রির দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকত লক্ষ্মী পুজোর পর থেকেই।

The News বাংলা

কিন্তু গত দু-তিন বছর থেকেই ভিড় এখন হাতে গোনার মত। শুধু ক্রেতা নয়, নতুন কোনো উপকরনও এখন দোকানিরা সেভাবে আনতে পারেন নি। পুরোনো মজুত যা আছে তাই নিয়েই দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা। অনেক দোকানির বক্তব্য, এখন কি? সময় তো আছে পরে নতুন উপকরন তুলব। অনেকে কোনো প্রশ্নের জবাব দিতেই নারাজ।

আরও পড়ুনঃ ভাইরাল ছবির জেরে ‘দুধের বাচ্চা’ নিয়ে বদলি মহিলা পুলিশ

তবে অনেকেই বলছেন আসল কথা। কেন্দ্র সরকার চাইনিজ মালপত্র আমদানির ওপর বেশ কড়াকড়ি করার জন্য, চোরা পথে মাল আনতে হচ্ছে। তাছাড়া জিএসটির প্রভাবে মালের দাম ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিক মুল্যের জন্য তেমনভাবে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

The News বাংলা

তবে চাইনিজ সামগ্রী বিক্রির ক্ষেত্রে রাজ্যের অন্য কোথাও কেনাবেচার ওপর প্রভাব পড়লেও শিলিগুড়িতে কিন্তু বরাবরই চাইনিজ সামগ্রীর রমরমা অবস্থা ছিল। সে বিভিন্ন ধরনের দেওয়ালীর লাইট হোক কিংবা খেলনা, কিংবা হরেকরকম রংবাহারী জিনিসপত্র। তবে এবারই চাইনিজ সামগ্রীর প্রতি সাধারন মানুষের আকর্ষণ আগের তুলনায় অনেক কমেছে। চীনা মালে বিমুখ বেশীরভাগ মানুষই।

আরও পড়ুনঃ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতীয় ক্রিকেটারদের দাবি ‘কলা আর বউ’

দাম বাড়াটাই বিক্রি কমার কারন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই চাইনিজ লাইট বর্জন করাটা মুখ্য বিষয় নয় এবছর বিক্রি কম হওয়ার। দামের অনেকটা তারতম্যই বিক্রি কমে যাওয়ার প্রধান কারন বলে মনে করেন প্রায় সমস্ত দোকানদাররাই।

The News বাংলা

রাতের অন্ধকার দূর করে দীপের আলোয় আলোকিত করে সমস্ত অন্ধকার নাশ করতে দীপাবলী উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে কয়েকশ বছর ধরে। দিন বদলেছে, বদলেছে আলোকিত করার উপকরন। অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার চীনের সঙ্গে ভারতের ব্যবসার দ্বার উন্মুক্ত করার পর পরই বাজারে ছেয়ে যায় বিভিন্ন চাইনিজ আলোক সজ্জ্বা ও সামগ্রীতে। আর নরেন্দ্র মোদী সরকার শুল্ক ও অন্যান্য কর বাড়িয়ে সেই ব্যবসায় রাশ টানলেন।

আরও পড়ুনঃ স্বীকৃতি না রাজনৈতিক ফায়দা, নেতাজীকে নিয়ে বিতর্কে মোদী

এখন শুধু নিয়ম রক্ষার তাগিদেই কয়েকটি প্রদীপ জ্বালানো হয় দীপাবলি উৎসবে। বাকি সমস্তটাই থাকে চাইনিজ লাইটের প্রদর্শনী। কার বাড়িতে কে কত ভালো লাইট দিয়ে সাজাতে পারে, চলে তার নীরব প্রতিযোগিতা। চোখ ধাঁধানো আলোর রোশনাইয়ে ভরে ওঠে গোটা রাজ্য। পিছিয়ে নেই ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিও।

Image Source: Google

ইতিমধ্যেই দীপাবলি উৎসবে শব্দবাজী ফাটানোর ওপর অনেক কড়া হয়েছে প্রশাসন। এবার কি নিজেরাই আলোতেও রাশ টানতে চলেছে গোটা দেশের আপামর জনসাধারন? তবে রাজ্যবাসীর মনে একটা প্রশ্ন শোনা যাচ্ছে, এক বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে চীনা মাল দেশে ব্যবসা শুরু করে, আর এক বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরেই কি সেই ব্যবসার অবলুপ্তি ঘটবে?

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন