এত বড় সাহস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এসে আশ্বাস দিয়ে গেছেন, তাও অনশন তোলেনি স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা। যার জেরে লজ্জাজনক পুলিশি হুমকির মুখে পড়ল অনশনকারী স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার মধ্যে উঠে যাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মমতার পুলিশের তরফ থেকে। যদিও পুলিশের কোন বড় কর্তা ফোন ধরতে চাননি।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ ২৮ দিনে টনক নড়ল মমতার, স্কুল সার্ভিস অনশন মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী
২৮ দিন পর টনক নড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এঁর। বুধবার বিকালে স্কুল সার্ভিস অনশন মঞ্চে যান মুখ্যমন্ত্রী। দিলেন ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পুরো ব্যপারটা দেখতে বললেন। এখন ভোটের আদর্শ আচরণবিধি চলছে, তাই ভোটের পর এই ব্যপারে ব্যবস্থা নেবার ভরসা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনশনকারীরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আশ্বাস পাওয়ার পর কি করা উচিত, সেই নিয়ে চলে আলোচনা। তারপর অনশন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারাই শুনবে স্কুল সার্ভিস কেলেঙ্কারির ঘটনা
আর এতেই ক্ষেপে যায় মমতার পুলিশ। অভিযোগ গভীর রাতে পুলিশ গিয়ে সমস্ত ত্রিপল ও অন্যান্য আচ্ছাদন খুলে দিয়ে আসে। অনশনকারীদের সকাল ৭ টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। ওই সময়ের মধ্যে এলাকা ছেড়ে চলে যাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ করেছেন অনশনকারী স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা।
আর এতেই অবাক হয়ে গেছেন অনশনকারী স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এসে আশ্বাস দিয়ে গেছেন। তার ৫ ঘণ্টা পরে তারই পুলিশ এসে কি করে এই ধরণের চূড়ান্ত ন্যাক্যারজনক কাণ্ড ঘটাতে পারে? উঠেছে প্রশ্ন। কি করে এতটা প্রতিহিংসা পরায়ণ হতে পারেন একটা রাজ্যের এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রী? প্রশ্ন করেছেন অনশনকারী স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ খোলা রাস্তায় বসে মমতার ঘেরাটোপ অনশনের রেকর্ড ভাঙল স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা
কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন বুধবার পা দেয় ২৮ দিনে। দিন যত গড়াচ্ছে ততই জটিল আকার নিচ্ছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন। আজ ২৮ দিনে পড়ল তবু অনশন জট কাটল না। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় অনশনকারীরা। এবার ২৮ দিন পর সাড়া মিলল সিঙ্গুর কাণ্ডে ধর্মতলায় টানা ২৫ দিন অনশন আন্দোলন করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার রাজপথে অনশনে বসেছেন এই যুবক-যুবতীরা। উল্লেখ, শুরুতে প্রায় ৪৫০ জনকে নিয়ে অনশন শুরু করেছিলেন এসএসসি-র ওই চাকরি প্রার্থীরা। অনশন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেক প্রার্থী। গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হওয়ায় গর্ভপাত করতে হয়েছে একজন অনশনকারীর। দুই অন্তঃসত্ত্বাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হসপিটালে ভর্তি করতে হয়েছে ৫৮ জনকে।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ বাংলা এখন লাশের রাজনীতিতে অভ্যস্থ, শুধু একটা লাশ চাই আমাদের
অনশনরত মোট ১০০ জনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা একজন ভুগছে রক্ত আমাশায়। এখনও প্রতিদিন গড়ে ২০০ জন করে প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন অবস্থানে বসে। তাঁদের বক্তব্য, “এসব সত্ত্বেও আমাদের লড়াই থামবে না”। প্রায় ৩৫০ জন এখনও অনশন মঞ্চে আছেন।
মমতা যাওয়ার পরই রাতে আসরে নামে মমতারই পুলিশ বাহিনী। এই আন্দোলন ভাঙতে পুলিশ পাঠিয়ে ভয় দেখাচ্ছে মমতার সরকার, অভিযোগ উঠেছে এমনটাও। এমন লজ্জার দিন পরিবর্তনের সরকারের আমলে দেখতে হবে, ভাবতেও পারিনি, জানিয়েছেন অনশনকারী স্কুল সার্ভিস উত্তীর্ণরা।
স্কুল সার্ভিস নিয়ে আরও পড়ুনঃ এসএসসি চাকরির আন্দোলন বন্ধের নির্দেশ, জোর করে তুলে দেবার হুমকি পুলিশের
তবে তাঁরা পুলিশের কোন হুমকির সামনেই তাঁরা মাথা নোয়াতে রাজি হয়নি। পুলিশ কি ব্যবস্থা নেয় সেটা দেখার জন্যই এখন অপেক্ষা। ভোটের মুখে লজ্জার হাত থেকে বাঁচতেই এই কলঙ্কজনক অধ্যায় ঘটাল মমতা সরকার, জানিয়েছে বিজেপি, সিপিএম।
আরও পড়ুনঃ নির্বাচন কমিশনের নতুন অ্যাপ সি ভিজিল, জনতার অভিযোগে ১০০ মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।