লজ্জার বাংলা, সাড়ে ৭ লাখ টাকায় টেট ফেল করাকে, স্কুল শিক্ষিকার চাকরি বিক্রি। টাকা দিয়েই শিক্ষকের চাকরি, স্বীকার খোদ শিক্ষিকার স্বামীর। শুধু তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের অভিযোগ নয়, টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার ব্যাপারে এবার স্বীকারোক্তিও মিলল এক শিক্ষিকার স্বামীর কাছ থেকেই। বাগদার চন্দন মণ্ডল ওরফে ‘সৎ রঞ্জনের’ বিরুদ্ধে, টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন উপেন বিশ্বাস। ‘টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া’ ওই শিক্ষিকার স্বামী, এবার সেটাই জানাল সিবিআই-কে।
সাড়ে ৭ লক্ষ টাকায় স্কুলের চাকরি বিক্রির অভিযোগ উঠল, বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের বিরুদ্ধে। টাকা দিয়ে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়ার কথা স্বীকার করল, নদিয়ার কল্যাণীর বাসিন্দা পাপিয়া মুখোপাধ্যায়ের স্বামী জয়ন্ত বিশ্বাস। ২০১৭-য় নদিয়ার হবিবপুরের পানপাড়ার রাঘবপুর কনভার্টেড জুনিয়র প্রাইমারি স্কুলে, শিক্ষিকার চাকরি পায় কল্যাণীর বাসিন্দা পাপিয়া মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেল রাজ্য, ২৬৯ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল
তার স্বামী জয়ন্ত বিশ্বাস সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, বাগদার মামা-ভাগিনা গ্রামে তাঁর পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। সেই সূত্রে বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দনের সঙ্গে তার চেনাজানা। জয়ন্তর দাবি, ২০১৫-য় চন্দনকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার পর, ২০১৭-য় চাকরি পায় তাঁর স্ত্রী। সেই সংক্রান্ত তথ্য এবং বক্তব্য শুক্রবার প্রাথমিক নিয়োগ মামলায়, বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লোপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে উল্লেখও করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, পাপিয়া মুখোপাধ্যায় ২০১৪ সালে ‘টেট’ বা শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা না-দিয়ে, নগদ সাড়ে সাত লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষিকার চাকরি পায়। টাকা নিয়েছিল, বাগদার মামাভাগিনা গ্রামের বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল। পাপিয়া ২০১২ সালে টেট পাশ করতে পারেনি, ২০১৪-য় টেটে বসেনি। ২০১৫-র অগস্টে জয়ন্তের বাবা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী দীননাথ বিশ্বাসের পেনশন অ্যাকাউন্ট থেকে, সাড়ে সাত লক্ষ টাকা তুলে চন্দন মণ্ডলকে দেওয়া হয়। তার বিনিময়েই ২০১৭ সালে, প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পায় পাপিয়া।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে একের পর ঘটনা সামনে আসছে, যা চমকে দিচ্ছে রাজ্যের মানুষকে। গান্ধী মূর্তির নিচে, ৫৫০ দিন ধরে বসে যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা, যাদের চাকরি গিয়েছে চুরি। আমাদের বাংলায় শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে চুরি। লজ্জার অন্ধকারে ডুবেছে, বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা।