অবশেষে খোঁজ পাওয়া গেল নিখোঁজ নোডাল অফিসার অর্ণব রায়ের। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে হাওড়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অর্ণব রায়কে। নিখোঁজ হবার আটদিন পরে খোঁজ পাওয়া গেল নিখোঁজ অফিসারের। তবে এই নিয়ে এখনও কিছু বলতে রাজি নয় প্রশাসন। অর্ণব রায়কে হাওড়ায় শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর স্ত্রী অনিশা যশকেও ডেকে পাঠান হয়েছে। পারিবারিক কারনেই তিনি চলে গিয়েছিলেন এই ধারণাকেই সত্যি মনে করছে প্রশাসন। ঘটনার দিকে কড়া নজর রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
জেলায় যখন ভোটের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ঠিক তখনই রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান নদিয়ার নোডাল অফিসার অর্ণব রায়। কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে ইভিএম ও ভিভিপ্যাট-এর ওসি হিসেবে কাজ করছিলেন অর্ণব। গত বৃহস্পতিবার দুপুর দুটো পর্যন্ত কৃষ্ণনগর শহরের বিপ্রদাস পালচৌধুরী কলেজে ছিলেন ওই নির্বাচনী আধিকারিক। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর।
একটি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে আসে পুলিশের। সেই ফুটেজে আনুসারে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলতে বলতে কৃষ্ণনগরের বিপ্রদাস পালচৌধুরী কলেজ থেকে বেরিয়ে যান নোডাল অফিসার অর্ণব রায়। দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁর ফোনের টাওয়ার লোকেশন ছিল শান্তিপুর।
এই নিয়ে রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক গত শুক্রবার বলেছিলেন, “ব্যক্তিগত কারণে, হতাশার কারণে তিনি চলে গেছেন”। নদিয়া জেলা প্রশাসনের তরফ থেকেও তাই বলা হয়। প্রশাসনের অনেকেই স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে কথা বলা শুরু করেন। তারপরেই ফেসবুকে পোস্ট করে মুখ খোলেন অনিশা যশ। নদিয়ায় ভোটের নোডাল অফিসার স্বামীর উধাও হওয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনকেই তোপ দেগেছিলেন স্ত্রী অনিশা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তাঁর স্বামী কোন হতাশায় ভুগছিলেন না। পরে ক্যামেরার সামনেও আনিশা বলেন তাদের মধ্যে কোন সমস্যা ছিল না। ঘটনার দিন ফোনে বার ছয়েক ফোনেও কথা বলেছেন তাঁরা। অর্ণব রায়ের স্ত্রী পরিষ্কার জানান যে প্রশাসন নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে তাদের পারিবারিক গণ্ডগোলের কথা বলছে।
সাংবাদিকদের কাছে কোনওমতে কান্না চেপে আনিশা জানিয়েছিলেন, তিনি শুধু চান, তাঁর স্বামী যেন দ্রুত ফিরে আসে। এদিকে, নোডাল অর্ণব রায়ের ঘটনায় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল নদিয়া জেলা প্রশাসন। নিখোঁজ আধিকারিকের গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা থেকে শুরু করে অর্ণব রায়ের খোঁজ পেতে রাজ্যময় চিরুনি তল্লাশি চালায় পুলিশ প্রসাশন। ইতিমধ্যে নির্বাচনের কাজ সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক অর্ণব রায়ের জায়গায় অন্য এক আধিকারিককে নদিয়া জেলার নোডাল অফিসার পদে নিয়োগ করেন।
ভোটের আগে জেলার নোডাল অফিসারের নিখোঁজের নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেতে শুরু করেছিল নদিয়া জেলার বিরোধী দলের নেতারা। নদিয়া জেলাশাসক ও রিটার্নিং অফিসার সুমিত গুপ্তার সঙ্গে নোডাল অফিসার অর্ণব রায়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না বলেও গুজব উড়েছিল। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেন জেলাশাসক। তাঁর দাবি, জেলার নোডাল অফিসারের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগই ছিল না।
আপাতত নোডাল অফিসার অর্ণব রায়কে রাখা হয়েছে তাঁর হাওড়ার শ্বশুরবাড়িতে। পরে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রী আনিশা জশকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তে যদি পারিবারিক তত্ত্বের কথাই প্রমাণ হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের চরম শাস্তির মুখে পরতে পারেন অর্ণব রায়।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।