প্রজাতন্ত্র দিবসের পতাকাটাও উত্তোলন করতে পারেন নি ওঁরা। তার আগে রাত থেকেই পাক জঙ্গিদের সঙ্গে চলছে গুলি গ্রেনেডের লড়াই। প্রজাতন্ত্র দিবসের সকালেও উত্তপ্ত ভূস্বর্গ। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই শ্রীনগরে ঢুকে পড়েছে একাধিক জঙ্গি। চলছে প্রবল লড়াই। সেনার গুলিতে ইতিমধ্যেই ২ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে খবর। শ্রীনগরের কোলমোহ গ্রামে একটি বাড়িতে লুকিয়ে জঙ্গিরা। এলাকা ঘিরে ফেলেছে সেনা।
আরও পড়ুনঃ জয় হিন্দ, ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের সোনার অক্ষরে লেখা ইতিহাস
জানা গিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে বা বলা যায় ইংরেজি ক্যালেন্ডারে শনিবার দিন শুরুর সময়ই দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার রাজপুরা এলাকায় পুলিশ এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের উপরে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এর আগে টহল দেবার সময় শুক্রবারই এক পুলিশ কর্মী গ্রেনেড হামলায় জখম হন। জখম পুলিশকর্মীর নাম ফিরদৌস আহমেদ। জঙ্গিদের খোঁজে সমগ্র এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। স্থানিয় এক বাসিন্দার বাড়িতে ঢুকে পড়েছে জঙ্গিরা, এমনটাই জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়
রাষ্ট্রীয় রাইফেলস এর জওয়ান, সিআরপিএফ, কাশ্মীর পুলিশের মিলিত অভিযান চলছে গোটা শ্রীনগর জুড়েই। উপত্যকায় জঙ্গিদের হামলা গত দুদিন ধরেই ক্রমাগত চলছে। উদ্দেশ্য প্রজাতন্ত্র দিবস ভেস্তে দিয়ে সেনার মনোবল কমানো। শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট ৫ জায়গায় হামলা চালান হয়েছে। এর মধ্যে অনন্তনাগ বাস স্ট্যান্ডে পুলিশের উপর ও সিআরপিএফ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালান হয়।
আরও পড়ুনঃ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আগে কোন কোন বাঙালি ভারতরত্ন হয়েছেন
শুক্রবার অনন্তনাগে পুলিশের এক টহলদার বাহিনীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে জঙ্গিরা। এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হন। জখম পুলিশকর্মী ফিরদৌস আহমেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর একটি ঘটনায় পুলওয়ামাতে সিআরপিএফের ক্যাম্পে গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। উত্তর কাশ্মীরের সোপোর শহরে সিআরপিএফের বাঙ্কারের কাছেও আরও একটি বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।
আরও পড়ুনঃ কালামের নামে ছাত্রদের তৈরি হালকা উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়ে নজির ভারতের
সেনা সূত্রে খবর, গতকাল যে জঙ্গিরা কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটায়, তারাই শনিবার দিনের আলো ফোটার আগেই শ্রীনগরের খোনমোহে লুকিয়ে পড়ে। এলাকার এক মানুষের বাড়িতে ঢুকে পরেছে জঙ্গিরা। বাড়িটি ঘিরে চলছে গুলির লড়াই।
আরও পড়ুনঃ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মা দুর্গার সাক্ষাৎ অবতার, পোস্টার কংগ্রেসের
গভীর রাতেই গ্রামে ঢোকে জঙ্গিরা। পরপর জঙ্গি হামলার জেরে, প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে কাল রাত থেকে আরও কড়া হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা বলয়। বিভিন্ন সেনা সেক্টর সহ কাশ্মীরের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তার মধ্যেই ঘটে চলেছে একের পর এক সন্ত্রাসবাদী হামলা।
আরও পড়ুনঃ জন্মদিনে নেতাজি সুভাষের মৃত্যুদিন নিয়ে ছেলেখেলা রাহুলের কংগ্রেসের
প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেই বিভিন্ন এলাকায় ঘন ঘন জারি ছিল সেনা টহলদারি। শনিবার ভোরে সেই টহলদারি চলার সময়ই সেনাদের উপর গুলি চালায় জঙ্গিরা। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনা। আপাতত খোনমোহ গ্রামটি খালি করেছে সেনা। গ্রামবাসীদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে বাড়িটিতে জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে সেটিকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে সেনা। মুহুর্মুহু গুলির লড়াই চলছে।
আরও পড়ুনঃ মোদীর মাস্টারস্ট্রোকে দেশ পেতে পারে প্রথম মহিলা বাঙালি সিবিআই প্রধান
প্রজাতন্ত্র দিবসে জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি নাশকতার ছক কষার আভাস আগেই দিয়েছিল গোয়েন্দারা। স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে পাক জঙ্গিদের হামলা এখন খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। তাই এবার আগে থেকেই সজাগ থাকতে উপত্যকার বেশ কয়েকটি সেনা ক্যাম্প প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনে বিরত থাকে। মূলত শ্রীনগেরই আছে মূল কর্মসূচি। এবার সেই শ্রীনগরেই হামলা চালাল জঙ্গিরা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুজন জঙ্গিকে নিকেশ করেছে সেনা। বাকিদের খোঁজে চলছে জোর তল্লাশি। জঙ্গিদের লুকিয়ে থাকা বাড়িটি ঘিরে চলছে গুলির লড়াই।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।