রাজ্য পুলিশে ভরসা নেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই প্রথম বাংলার কোন লোকসভা কেন্দ্রের ভোটে ১০০% বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। সোমবার আসানসোল ঘুরে দেখে পরিষ্কার জানিয়ে দেন রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক। আগেই তৃতীয় দফার ভোটে ৯২ শতাংশ বুথে বাহিনী থাকবে বলে জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আসানসোলের ক্ষেত্রে সেটা ১০০ শতাংশ বলেই ঘোষণা করে দেওয়া হল।
সোমবার সারাদিন আসানসোল ঘোরেন রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক। বিভিন্ন থানায় গিয়ে রিপোর্ট নেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে আসেন বিভিন্ন দলের নেতারা। সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখেন। তারপরেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেবার সিদ্ধান্ত করেন তিনি। এর ফলে বিজেপি নেতা কর্মীদের মুখে হাসি ফুটেছে। ফের সমালোচনা করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুনঃ ভোট যুদ্ধে আকাশ দখলের লড়াইয়ে কংগ্রেসকে শুইয়ে দিল বিজেপি
লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায় রাজ্যের ৫ লোকসভা কেন্দ্রের প্রায় ৯২ শতাংশ বুথেই দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, এমনটাই জানিয়েছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী দফতর। এই উপলক্ষ্যে রাজ্যে এসেছে ৩২৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই প্রথম রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর কথা মেনে নিল নির্বাচন কমিশন। বিরোধীদের দাবী ছিল বাংলায় সব বুথেই রাখা হোক কেন্দ্রীয় বাহিনী। জানান হয়েছিল, যতটা সম্ভব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।
রাজ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রথম দফা ভোটের আগে থেকেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের দাবি উঠেছিল। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোটকর্মীরা কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। কিন্তু বেশিরভাগ কেন্দ্রেই কেন্দ্র ও রাজ্য পুলিশকে যৌথভাবে নিয়োগ করা হয়। অনেক বুথেই শুধু রাজ্য পুলিশ ছিল। সেখানে ঝামেলাও হয়েছে প্রচুর।
আরও পড়ুনঃ নরেন্দ্র মোদীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের হুঁশিয়ারি দিলেন কংগ্রেস নেতা
প্রথম দফার নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি আরও জোরালো হয়। কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানিক দুই শতাধিক বুথে ছাপ্পা ও বুথ জ্যামের অভিযোগ তোলেন। নির্বাচন কমিশনের দরবারে গিয়ে মাটিতে বসে ধর্ণা দেন মুকুল রায়। মুকুলের নেতৃত্বে দাবিতে অনড় থাকেন বিজেপির রাজ্যের প্রতিনিধিরা। কিন্তু দ্বিতীয় দফার ভোটেও সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না। ঝামেলাও হয় সেই সব বুথে।
আরও পড়ুনঃ হারবেন বুঝেই নির্বাচন কমিশনকে টার্গেট মমতার, কটাক্ষ অমিতের
যদিও চাপের মুখে দ্বিতীয় দফায় ৮০ শতাংশ বুথে নিয়োগ হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। তা সত্ত্বেও রাজ্যে ৩ লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। ভোটের দিন ভয় দেখানো, অবরোধ, বোমাবাজি, হামলা পাল্টা হামলা, এসবই টিভির পর্দায় প্রত্যক্ষ করেছে রাজ্য সহ রাজ্যবাসী। দ্বিতীয় দফায় ভোট শুরুর পরেই এক সাংবাদিকের মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়।
এই অবস্থায় অভিযোগ খতিয়ে তৃতীয় দফার নির্বাচনে প্রায় ৯২ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করতে সচেষ্ট ছিল নির্বাচন কমিশন। আগামীকাল ২৩শে এপ্রিল রাজ্যের তৃতীয় দফার নির্বাচন। ভোট অনুষ্ঠিত হবে বালুরঘাট, মালদহ উত্তর, মালদহ দক্ষিণ, জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদ এই ৫ লোকসভা কেন্দ্রে।
আরও পড়ুনঃ ভোটের মধ্যেই চরম লজ্জা, চৌকিদার চোর বলায় ক্ষমা চাইতে হল রাহুল গান্ধীকে
আগে ঠিক হয়েছিল, ২৭৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। কিন্তু পরিস্থিতি বিচার করে এই ৫ কেন্দ্রের প্রায় ৯২ শতাংশ বুথে মোট ৩২৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হচ্ছে কমিশনের তরফে। এদিকে সোমবারই জানিয়ে দেওয়া হল আসানসোল লোকসভা ভোটে থাকবে ১০০ শতাংশ কেন্দ্রীয় বাহিনী।
আরও পড়ুনঃ পুলিশের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করলেন বাবুল সুপ্রিয়
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।