সমস্ত তর্জন গর্জন সার, তৃণমূলের বাতিল সাংসদকে দলে নিয়ে মুখ রক্ষা মুকুলের। সেই তৃণমূলের বাতিল সাংসদ অনুপম হাজরাকেই মঙ্গলবার বিজেপিতে যোগদান করালেন মুকুল রায় ও কৈলাশ বিজয়বর্গীয়।
ঘোষিত হল আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দিল্লিতে মুকুল রায় এবং বিজেপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরা।
আরও পড়ুনঃ লাস্যময়ী নুসরত ও সুন্দরী মিমিই এবার মমতার চমক
তার সঙ্গেই হবিবপুরের ৩ বারের জয়ী সিপিএমের বিধায়ক খগেন মূর্মূ এবং বাগদার কংগ্রেসের বিধায়ক দুলালচন্দ্র ভরও বিজেপিতে যোগ দেন। এর বাইরে উল্লেখযোগ্য কাউকেই বিজেপি মঞ্চে মঙ্গলবার যোগ দিতে দেখা যায়নি। এমনকি বিজেপিতে যাবার কথা অস্বীকার করেছেন কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাসমুন্সিও।
আরও পড়ুনঃ প্রচুর চমক, রাজ্যের ৪২টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের ৪২জন প্রার্থী কে কে
মুকুল রায় তৃণমূল ছাড়ার পর থেকেই বহুবার দাবি করে এসেছেন, তার সাথে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দলগুলোর অনেক তাবড় তাবড় সাংসদ ও বিধায়ক তলায় তলায় যোগাযোগ রাখছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বহুবার একই দাবি করেছেন। কিন্তু দল ভাঙানোর যাবতীয় দায়িত্ব ছিল মুকুলের হাতেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন বড় নেতাকেই দলে নিতে পারেননি মুকুল রায়।
আরও পড়ুনঃ পুলিশে ভরসা নেই, একমাস আগেই বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী
একদা তৃণমূল দলে ‘চাণক্য’ নামে খ্যাত মুকুল রায়ের কথার ওপর ভর করে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন দেখার অপেক্ষায় নজর রেখেছিল বাংলার রাজনৈতিক মহল। কখনো পুজোর পর, আবার কখনো মমতার ব্রিগেডের পরেই তৃণমূলে ধস নামবে, প্রায়ই মুকুলের এরকম বক্তব্যে আশায় বুক বেঁধেছিলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।
আরও পড়ুনঃ জঙ্গি মাসুদ আজহারকে ‘মাসুদ আজহার জী’ বলে সম্বোধন করে বিতর্কে রাহুল
শেষ অবধি প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই তৃণমূলের অনেক বড় নেতাই দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেবেন। কিন্তু তার কিছুই হল না। উল্টে তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ অনুপম হাজরাকে দলে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল বিজেপিকে। দল থেকে বহিষ্কৃত হবার পরে রাজনৈতিক কেরিয়ার সচল রাখতে অনুপমের গন্তব্য হবে বিজেপি, তা আগে থেকেই একপ্রকার নিশ্চিত ছিল।
আরও পড়ুনঃ বাংলার কোন লোকসভা আসনে কবে ভোট দেখে নিন
সম্প্রতি প্রাক্তণ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ও কংগ্রেসের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির পত্নী দীপা দাশমুন্সির বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা ঘিরে তুমুল জল্পনা তৈরি হয়েছিল। মুকুল রায়ের সাথে অধীর চৌধুরীর দিল্লির বাসভবনে সাক্ষাতের বিষয়েও আলোচনা হয়। কিন্তু গত রবিবারই অধীর চৌধুরী সেই দাবিকে গুজব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। এদিকে আজ মঙ্গলবার দীপা দাশমুন্সিও জানিয়ে দেন, বিজেপিতে যোগদানের কোনও সম্ভাবনাই তাঁর নেই।
আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে পাকিস্তানে ফের একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে
এর আগে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বিজেপিতে সামিল হওয়ার ব্যাপারেও বিতর্ক তৈরি হয়। মুকুল রায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাৎও করেন। মাত্র ১ দিন পরেই তিনি জানিয়ে দেন, তিনি বিজেপিতে আসছেন না। উল্টে মুকুলের উদ্দেশ্য তিনি বুঝতে পারেননি বলে তিনি মন্তব্য করে মুকুল রায়কে চরম লজ্জায় ফেলে দেন সব্যসাচী।
আরও পড়ুনঃ গেরুয়া ভোটে থাবা বসাতে অধিকাংশ আসনেই ব্রাহ্মণ প্রার্থী ঘোষণা দলিত নেত্রী মায়াবতীর
আগে রাজ্য বিজেপির তরফে বলা হয়েছিল, তৃণমূল ত্যাগ করে অন্য দলে নাম লেখালেই তাদের নামে রাজ্য পুলিশ মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। উল্লেখ্য, অনুপম হাজরার সাথে একই সময়ে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান। পরে সৌমিত্র খানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা দায়ের করা হয়। এই আশঙ্কা থেকেই অনেকে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না বলে সাফাই দেওয়া হয় বিজেপির তরফে।
আরও পড়ুনঃ রমজান মাসে নির্বাচনে কোনও সমস্যা নেই, ববিকে পাল্টা দিলেন ওয়েসি
কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষন ঘোষণা হয়ে গেলেও মুকুলের বক্তব্যের সাথে বাস্তবের ফারাকই বেশি নজরে আসছে। এখনও উল্লেখযোগ্য কাউকেই সেভাবে মুকুল রায় তাঁর ম্যাজিকে বশ করতে পারেননি। এখন মুকুল ম্যাজিক দেখার আশার বিজেপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে বিজেপি কর্মীরা।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।