গেরিলা আক্রমনে মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলিতে; এক গাড়ি চালক সহ ১৫ জন নিরাপত্তা কর্মী শহিদ হন। আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে; হামলা চালানো হয় সেনা জওয়ানদের গাড়িতে। পরের দিনই ছত্তিশগড়ের সুকমায় মাওবাদীরা গ্রামে ঢুকে; দুজনকে পুলিশের ‘গুপ্তচর’ সন্দেহে খুন করে। এই ঘটনাগুলির পর; ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নির্বাচন কমিশন। সেই সূত্রে এখনই ৫০ কোম্পানি বাহিনী; পাঠানো হল জঙ্গলমহলে।
গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রকাশ; ঝাড়খন্ড থেকে জঙ্গল পথে এরাজ্যে ঢুকছেন মাওবাদীরা। গত বছর জুনে আদিবাসীদের ‘রেল রোকো’ ও ‘হুল দিবস বয়কট’ সাড়া ফেলে দেয়। গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে; বিগতে পাঁচ বছরে জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের তত্পরতা দেখা যায়নি। তবে ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানায়; মাওবাদীদের বেশ কয়েকটি গ্রুপ এখনও রয়েছে। যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন; এই বাংলারই তরুণ মাওবাদী নেতারা।
মাও শীর্ষনেতা কিষনজি নিহত হওয়ার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন; “জঙ্গলমহল হাসছে”। তবে গত নভেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন; “বেলপাহাড়ির কয়েকটা অঞ্চলে কেউ কেউ ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদীদের নিয়ে আসছে। আবার চাইছে ঝাড়গ্রাম রক্তাক্ত হয়ে যাক”।
কেন্দ্রীয় পুলিশ পর্যবেক্ষেক বিবেক দুবে রাজ্যে এসে বেশকিছু বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেন; জঙ্গলমহল থেকে সরানো হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যদিও রাজ্যের তরফে আসে তীব্র প্রতিবাদ। নবান্ন জানিয়ে দেয়, ভোটের কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী জঙ্গলমহল থেকে সরিয়ে নেওয়া হলে; মাওবাদীরা ফের সেখানে তত্পর হয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কিন্তু বাহিনী না পাওয়ায় রাজ্যের সেই আবেদনে কর্ণপাত করেননি কমিশন। সেখানে মোতায়েন থাকা ২৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী উত্তরবঙ্গের ভোটে মোতায়েন করা হয়। তবে রাজ্যের গোয়েন্দা রিপোর্ট দেখার পর; দুঁদে প্রাক্তন আইপিএস বিবেক বুঝতে পারেন পরিস্থিতি জটিল।
পাশাপাশি প্রথম দফার মতো; বাহিনী পাবার সমস্যা মিটে গেছে। সেই সূত্রেই জঙ্গলমহলে ফের ফিরেছে; ভারী বুটের আওয়াজ। নির্বাচন কমিশনের হিসেবে পঞ্চম দফায় ৫২৪ কোম্পানি বাহিনীতেই ১০০ শতাংশ বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
তাই দেরি না করে চতুর্থ দফায় ভোট পর্ব মেটার পরেই; জঙ্গলমহলের মাও অধ্যুষিত জেলাগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৫০ কোম্পানি বাহিনী। সেই সূত্রেই ৫৭৮ কোম্পানির বাহিনী রেখে পঞ্চম দফার ভোট হওয়ার কথা থাকলেও; আদতে পঞ্চম দফার ভোট সম্পন্ন হবে ৫২৮ কম্পানিতে। সূত্রের খবর এমনটাই।