ভাঙার পথেই বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোট। বাংলায় সিপিএম-কংগ্রেস জোট বিশ বাঁও জলে। বাংলায় সব আসনেই প্রার্থী চায় কংগ্রেস। এবার দীপা দাশমুন্সি, শঙ্কর মালাকারের সঙ্গে জোট বাতিলের পক্ষে কথা বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও। প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে বৈঠকের পর সোমেন মিত্র বললেন, “মনে হচ্ছে ৪২ টি আসনেই আমাদের প্রার্থী দিতে হবে”। তবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা সবটাই ছেড়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর উপর।
আরও পড়ুনঃ মোদীর সঙ্গে সবাই চৌকিদার, অদ্ভুত প্রচার বিজেপির
শুক্রবারই একতরফা ২৫টি আসনে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দেয় বামফ্রন্ট। বামেদের তরফ থেকে বলে হয়, যে সমস্ত আসনে কোন সমস্যা নেই সেই সব আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হল। ১৭টি আসন ছেড়ে বাকি সব আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় বামেরা। রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনে আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছিল আলিমুদ্দিন। আজ রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ সহ মোট ২৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল বামেরা। বাকি ১৭ টির মধ্যেও আরও কয়েকটি আসনে বামেরা প্রার্থী দেবে ঘোষণা করায় বাংলায় বাম-কং জোট বিশ বাঁও জলে।
আরও পড়ুনঃ ২০২৫ সালের পর ভারতের অংশ হবে পাকিস্তান, ঘোষণা আরএসএস নেতার
জোট জট না কাটিয়ে বামেরা প্রার্থী ঘোষনা করায় ক্ষুব্ধ হয় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। কার্যত তখনই শুরু হয় জোটে জট। তবে এখনও জোট ভাঙার দায় নিতে চাইছে না বাম কংগ্রেসের কেউই। তবে রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদের মত এই জোটের ফয়সালাও হবে সেই দিল্লিতেই। কংগ্রেস জোটের সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতেই।
আরও পড়ুনঃ বিরোধী মহিলা প্রার্থীদের ‘মাল’ সম্বোধন করে কুরুচিপূর্ণ আক্রমণ ফিরহাদের
রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসনের ক্ষেত্রেও এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সীতারাম ইয়েচুরির বৈঠকে শেষ পর্যন্ত জট খোলে। ফের সেই সীতারাম ও রাহুলের হাতেই রাজ্যে আসন সমঝোতার জট খোলার দায়িত্ব পড়ল। সিপিএম কংগ্রেসকে ১১ থেকে ১৩টি আসন ছাড়তে চায়। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস অন্তত ১৭টি আসন চায়। যার মধ্যে পুরুলিয়াও রয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া আসনে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন বিমান বসু।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের তারকা প্রার্থী নিয়ে অশ্লীল ও বিতর্কিত মন্তব্য ক্ষিতির
জোট সঙ্গী কংগ্রেসকে চাপে ফেলে ২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেয় সিপিএম। তবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের সঙ্গে আলোচনা করে নেন বিমান বসু। শুধু তাই নয়, বাকি ১৭ আসনের মধ্যেও বামেরা কয়েকটায় প্রার্থী দেবে বলেই জানিয়ে দেন বিমান বসু।
আরও পড়ুনঃ মিমি নুসরত এর চরিত্র নিয়ে কটাক্ষ বিতর্কে জড়ালেন দিলীপ ঘোষ
বসিরহাট ও পুরুলিয়া আসন দুটি নিয়ে শরিকি টানাপোড়েনে আটকে গিয়েছিল বামেদের প্রার্থী ঘোষণা। বসিরহাট ও পুরুলিয়া দুটি আসনে প্রার্থী দিয়েই ২৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় বামফ্রন্ট। এদিকে কংগ্রেসকে ১৭টার বদলে ১১টা থেকে ১২টা আসন দিতে চাইছে সিপিআইএম। ফলে জট খুলতে ফের হাইকমান্ডের হস্তক্ষেপ চায় প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন পদ্মশ্রী নৃত্যশিল্পী
এই টানাপোড়েনে শনিবার ও রবিবার দিনভর বৈঠক করেও সোমেন মিত্র, প্রদীপ ভট্টাচার্য, রবিন দেব-রা জট খুলতে পারেননি। যদিও তৃণমূল-বিজেপিকে ঠেকাতে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির একজোট হওয়া প্রয়োজন বলে রবিবারও মন্তব্য করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। কিন্তু সঙ্গে এও জানিয়ে দেন, “মনে হচ্ছে ৪২ টি আসনেই আমাদের প্রার্থী দিতে হবে”।
আরও পড়ুনঃ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভবিষ্যতের ভূত মুখ পোড়াল রাজ্য সরকারের
প্রথমে বাম-কংগ্রেস সমঝোতা নিয়ে জট পেকেছিল রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন নিয়ে। কিন্তু রাহুল গান্ধী আর সীতারাম ইয়েচুরি বসে তা মিটিয়ে নেন। কিন্তু তারপরও জট রয়ে যায়। কংগ্রেস দাবি করে পুরুলিয়া ও বসিরহাট আসন তাদের ছাড়তে হবে। কিন্তু এখানে সিপিএমের হাত বাঁধা। কারণ ওই দুটি আসন বাম শরিকদের। এই দুটি আসনেও একতরফা প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় বামেরা।
আরও পড়ুনঃ তারকা যুদ্ধে বিজেপির বাজি শ্রাবন্তী, অগ্নিমিত্রা, চলছে জোর জল্পনা
এই পরিস্থিতিতে একাধিকবার কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিপিএম নেতারা। কিন্তু জট কাটেনি। শরিকদের চাপে, ফ্রন্টা ঐক্যের বাধ্যবাধকতা থেকেই কার্যত শুক্রবার আংশিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে আলিমুদ্দিন। ২৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু প্রেস বিবৃতিতে বলেন, “বাকি আসনগুলির কয়েকটিতে বাম এবং কয়েকটিতে কংগ্রেস লড়বে”। পুরুলিয়া এবং বসিরহাট নিয়ে বলা হয়, কংগ্রেস যদি জিতবে মনে করে তাহলে তারা সেখানে প্রার্থী দিতে পারে।
আরও পড়ুনঃ মমতার প্রার্থী তালিকা নিয়ে গোপনে ক্ষোভ বাড়ছে জেলায় জেলায়
বিধান ভবনে বারবার বৈঠক করেও কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। বামেদের অনড় মনোভাবের কথা জানিয়ে হাইকমান্ডের হাতে জোটের ভাগ্য ছেড়ে দিয়েছে কংগ্রেস। অন্যদিকে বামফ্রন্টও আরও প্রার্থীর নাম ঘোষনা করে চাপে রাখতে চাইছে কংগ্রেসকে। দার্জিলিং পুরুলিয়া ও বসিরহাট নিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের বামেদের প্রস্তাবও ফিরিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। সবমিলিয়ে বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোট হবার সম্ভাবনা ধীরে ধীরে কমছে।
আরও পড়ুনঃ পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন ৭ দফা ভোটে সুবিধা বিজেপির
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।