তাস খেলার আবিষ্কার হয়েছে আজ থেকে প্রায় ছয়শ বছরেরও বেশি সময় আগে পঞ্চদশ শতকে। জানা যায়, বিশ্বে প্রথম তাস খেলার প্রচলন ঘটে চীনে। খ্রিস্টীয় নবম শতকের দিকে টাং রাজার রাজত্বকালে অন্তঃপুরবাসী রানীরা তাস খেলে সময় কাটাতেন।
তবে ৫২ তাসের খেলা প্রচলন করে প্রাচীন মিশর। তারা এই তাস চারজন মিলে খেলত। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চারজন মিলে যেভাবে তাস খেলা হয়, সেটা মিশর উদ্ভাবন করেছিল খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে পর্যন্ত এই খেলা রাজপরিবার এবং সৈন্য-সামন্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
আরও পড়ুনঃ ‘তাজমহল’ গড়া শেষ না করেই মারা গেলেন ‘শাহজাহান’
তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাসের নামেও আসে পরিবর্তন। ক্ষমতানুযায়ী তাসের নাম দেওয়া হয় রাজা-রানী,জোকার ইত্যাদি। চীন থেকে যারা গাধার পিঠে করে অথবা হাতিতে করে মালামাল বিভিন্ন দেশে নিয়ে যেত অথবা বাণিজ্যিক কারণে যারা চীনে আসত তাদের মাধ্যমে তাস খেলা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এই খেলা এত বেশি জনপ্রিয় যে, তা মোবাইল ও কম্পিউটারের ভেতরেও ঢুকে গেছে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পের বেশ কিছু অজানা কাহিনী
তাসের চার রাজা। ইস্কাপন বা স্প্রেডস-কিং অব স্প্রেডস হলো রাজা ডেভিড, গোলিয়াথের হত্যাকারী। বাইবেল অনুযায়ী এই রাজা ইসরাইল শাসন করেছিলেন। বাইবেলে আরো বলা হয়েছে যে, তিনি ছিলেন যিশু খ্রিষ্টের পূর্বপুরুষ। এই বিখ্যাত রাজার বৈশিষ্ট হলো তিনি আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন কাজ করেন না। এবং তিনি সব সময় বিচার-বুদ্ধি দিয়ে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করেন। এই তাসের রানী হলেন গ্রিক যুদ্ধ দেবী প্যালাস, যিনি দুই হাতে ধরে আছেন তরবারি ও ফুল।
আরও পড়ুনঃ যৌনতা কেন্দ্রিক বিনোদনের জন্য বিশ্বের সেরা ২০ টি ঠিকানা
হার্টস বা হরতন-কিং অব হার্টস এর ছবি আঁকা হয়েছে বিখ্যাত রাজা শার্লেমেন বা চার্লস এর অনুকরণে যিনি ৮০০ খ্রিস্টাব্দে জয় করেন অর্ধেক ইউরোপ। তাসে দেখা যায়, এই রাজা তার তলোয়ারটি নিজের মাথায় ঠেকিয়ে নিজেকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছেন। তাই অনেকে এই রাজাকে আত্মঘাতী রাজাও বলে থাকেন। তার তাসের রানী হলেন বাইবেল উল্ল্যেখিত নায়িকা জুডিথ। যিনি রাজার তরবারির এক আঘাতে এক আসিরিয়ান সেনাপতিকে হত্যা করেছিলেন।
ডায়মন্ডস বা রুইতন-কিং অব ডায়মন্ডস হলেন রোমের বিখ্যাত শাসক, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক রাজা জুলিয়াস সিজার। রোম সম্রাজ্যের উত্থানে এই প্রভাবশালী শাসকের গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে। তিনি খুবই দক্ষতার সাথে রোমের রাজনীতি দীর্ঘ সময় ধরে নিয়ন্ত্রন করে গেছেন। কুইন অব ডায়মন্ডস হলেন তার স্ত্রী রাচেল।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে আলোড়ন ফেলে চুমু খেতে রাজি সোফিয়া
ক্লাবস বা চিড়িতন-কিং অব ক্লাবস হলেন দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। যিনি ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বে পৃথিবীর প্রায় পুরোটা দখল করে নিয়েছিলেন। গ্রিসের মেসিডোনিয়ার এই সম্রাটের নাম শোনেন নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কুইন অব ক্লাবস হলেন একমাত্র ইংরেজ মহিলা। যিনি আর কেউ নন ব্রিটিশ রানী প্রথম এলিজাবেথ।