ভক্তরা এখনও তাঁদের নাগাল পাননি। পালিয়েই বেড়াচ্ছিলেন তাঁরা। ভক্তদের হাতে পড়লে কি হবে কেউ জানে না। তবে কি হতে পারে তার একটা ঝলক পেয়ে গেলেন শবরীমালা মন্দিরে ঢুকে ইতিহাস সৃষ্টি করা ৪৪ বছরের কনকদূর্গা। শবরীমালার আয়াপ্পা ভক্তদের থেকে লুকিয়ে অনেক দিন পালিয়ে বেড়াবার পরে বাড়ি ঢুকতেই উত্তম-মধ্যম মার খেলেন শাশুড়ির। ‘নারী নিষিদ্ধ’ শবরীমালা মন্দিরে ঢোকার শাস্তি, পিঠে চ্যালাকাঠ ভাঙল শাশুড়ি।
আরও পড়ুনঃ ভোটের আগে মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে মোদী সরকারের অন্তর্বর্তী বাজেট
কেরালার শবরীমালা মন্দিরে ঢুকে ইতিহাস তৈরি করেন দুই মহিলা, বিন্দু ও কনকদূর্গা। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেবার পর এই প্রথম মন্দিরে ঢুকতে পারলেন মহিলারা। ৪২ বছরের বিন্দু ও ৪৪ বছরের কনকদূর্গা ভারতে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ তাঁরা মন্দিরে প্রবেশ করেন। মন্দিরে পুজোও দেন তাঁরা। বিন্দুর বাড়ি কেরলেরই মালাপ্পুরমে। কনকদূর্গার বাড়ি কোঝিকোড়ে। বাড়ি ফিরতেই শাশুড়ির মারে আহত হন তিনি। পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
আরও পড়ুনঃ
ভোরবেলায় শবরীমালা মন্দিরে ঢুকে ইতিহাস সৃষ্টি ‘মা দুর্গার’
নারী ঢোকায় ‘অপিবত্র’ শবরীমালা, ‘শুদ্ধ’ করার জন্য বন্ধ মন্দির
নিয়মমতো শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ‘ঋতুমতী’ মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া হত না। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ‘ওই নিয়ম অসাংবিধানিক’। শবরীমালা মন্দিরে সবাই প্রবেশ করতে পারবেন বলেই রায় দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তারপরেই মন্দিরে ঢুকে ইতিহাস গড়েন তাঁরা। তবে মন্দিরে ঢুকে বেরনোর পরই নিরাপত্তার জন্য ওই দুই মহিলাকে খুব তাড়াতাড়ি কোন অজানা জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ভক্তরা নাগাল পাননি দুজনের।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় ক্ষোভ বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়াচ্ছে মোদী সরকার
মন্দিরে ঢোকার পরে দুজনেই আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। তাঁদের কোচি শহরের কাছে কোনও এক গোপন জায়গায় রাখা হয়েছিল সরকারের তরফ থেকেই। জানা যায়, কনকদুর্গা পেশায় সরকারি কর্মচারী। বিন্দু কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার। এদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার। প্রায় দু সপ্তাহ কেটে যাবার পর হইচই একটু থামলে তাদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ
ফের গরু চোর সন্দেহে খুন, এবার ‘গোরক্ষকের’ নাম মুসলিম মিঁয়া
হিন্দুত্ববাদীদের নিশানা করতে মসজিদে পাথর ছুঁড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা, ধৃত সিপিএম নেতা
আর সেখানেই বাড়ল বিপদ। শবরীমালার আয়াপ্পা ভক্তদের থেকে লুকিয়ে রক্ষা পেলেও, বাড়ি ফিরে শাশুড়ির হাত থেকে পেলেন না কনকদুর্গা। দু সপ্তাহ প্রাণের ভয়ে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল তাঁদের। মঙ্গলবার তাঁরা নিজের নিজের বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বাড়ি ফেরা মাত্রই কনকদুর্গার শাশুড়ি সজোরে আঘাত করেন তাঁর মাথায়। লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারেন পিঠে ও শরীরে।
কনকদুর্গার শাশুড়ি একেবারেই চাননি যে পুত্রবধূ ভগবান আয়াপ্পার শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করুক। শাশুড়ির মারে গুরুতর আহত হয়ে কনকদুর্গা আপাতত হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন। তবে, হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, তাঁর অল্প বিস্তর চোট লেগেছে মোটা লাঠি জাতীয় কিছু দিয়ে মারার জন্য।
আরও পড়ুনঃ
উচ্চবর্ণের গরীব হিন্দুদের জন্য সংরক্ষণ মোদীর, দেশ জুড়ে বিতর্ক
EXCLUSIVE: সংখ্যালঘুদের ধর্মে সুড়সুড়ি দিয়ে প্রকাশ্যে ভারতের টাকার কালোবাজারি
শবরীমালা মন্দিরে ঢোকার পরেই কনকদুর্গা জানিয়েছিলেন, তাঁর পরিবার চায় না তিনি ওই মন্দিরে ঢুকুন। পরিবারের মত না মেনেই তিনি মন্দিরে প্রবেশ করেন। তাঁরা মন্দিরে প্রবেশ করেছেন শুনে কেরল জুড়ে হরতাল শুরু হয়। সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায় রাজ্য জুড়ে। মারাও যান একজন।
এতদিন লুকিয়ে থাকার পর তাঁরা ভেবেছিলেন, ভক্তদের রাগ প্রশমিত হয়েছে। পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়েছে। এখন বাড়ি ফেরা নিরাপদ। কিন্তু বাড়িতেই যে আক্রমণের মুখে পড়তে হবে তাঁকে, সেটা ভাবেননি রাজ্য সরকারের সঙ্গে কনকদুর্গা নিজেও। দেশে ইতিহাস সৃষ্টি করা কনকদুর্গার নিজের বাড়িও ইতিহাস সৃষ্টি করল তাঁকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।
আরও পড়ুনঃ
দেশপ্রেম বাড়াতে স্কুলের রোল কলে এবার ‘জয় হিন্দ’ ও ‘জয় ভারত’
নতুন বছরে পেট্রোল ডিজেলের দাম রেকর্ড কমতে চলেছে
শ্রীজাত হেনস্থা ঘটনায় বাংলার বুদ্ধিজীবিদের মুখোশ খুললেন তসলিমা
‘ত্রিশূলে কনডম’, অসমের শিলচরে হিন্দুত্ত্ববাদী বিক্ষোভের মুখে কবি শ্রীজাত
নৃশংস নার্স, সেবাই যাদের ধর্ম তারাই পিটিয়ে মারল ১৬টি বাচ্চা কুকুর
ভয়াবহ নৃশংসতার নজির, পিটিয়ে পিটিয়ে মারা হয়েছে ১৭টি কুকুরকে
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে এক হিন্দু নারী
ভারতের কৃষকের মেয়ে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।