The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ শিলিগুড়ির খুব কাছে রয়েছে মহানন্দা নদীর ওপর ফুলবাড়ি ব্যারেজ। এর একদিকে রয়েছে জাতীয় সড়ক ও অন্যদিকে ঘন বনাঞ্চল। তার মাঝে বয়ে চলেছে মহানন্দা নদী। শীত পড়তেই হাজার হাজার মাইল পেড়িয়ে রঙ বেরঙের নানা ধরনের লক্ষ লক্ষ পাখি এখানে ছুটে আসে।
আরও পড়ুনঃ কলগার্লের বিজ্ঞাপনের আড়ালে মানুষ লুঠের ব্যবসা
পরিযায়ী অতিথিদের অভ্যর্থনা জানানোর প্রয়াসে এগিয়ে এসেছে শিলিগুড়ির “অপটোপিক”। শিলিগুড়ির ফুলবাড়িতে মহানন্দা ব্যারেজে পরিযায়ী পাখিদের নির্বিঘ্নে বিচরন করতে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে এই সংস্থা। পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় বাসিন্দা, বনদপ্তর, সেচদপ্তর, স্থানীয় প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে এই কাজে এগোতে চায় তারা।
হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পেড়িয়ে পরিযায়ী পাখিরা ফুলবাড়ি ব্যারেজকে বেছে নিয়েছে তাদের বিচরনভুমি হিসেবে। অতিথির মত এদের বরণ করে নেওয়ার দায়িত্ব গতবছর থেকে নেওয়া শুরু করেছে “অপটোপিক”। এবছর অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হলেন।
আরও পড়ুনঃ কালিম্পং-এ মাঝ আকাশে প্যারাগ্লাইডিং ভেঙে দুর্ঘটনায় মৃত্যু
গোটা শীতকাল এখানে কাটিয়ে তারা আবার অন্য কোথাও উড়ে যায়। আর এই পাখিদের দেখতে এখানে আসেন প্রচুর পর্যটক। কিন্তু কিছু পাখি শিকারি এখানে ওঁত পেতে বসে থাকে। সুযোগ পেলেই তারা পাখি শিকার করে নিয়ে যায়। অন্যদিকে এমন একটি মনোরম পরিবেশ পেয়ে আশেপাশের প্রচুর মানুষ এই স্থানকে পিকনিকের স্পট হিসেবে বেছে নিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ বন্ধ রেখেই বেপাত্তা ভারপ্রাপ্ত এজেন্সি
কিন্তু বর্তমানে পিকনিক মানেই তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে নৃত্য ও পিকনিকের পর স্থানকে নোংরা করে চলে যাওয়া একটা অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। এই শব্দ পাখিদের অবাধ বিচরনে বিঘ্ন ঘটায়। আর সে কারনে আস্তে আস্তে এখানে পাখিদের সংখ্যাও কমতে থাকে।
সকলের প্রচেষ্ঠায় গত বছর থেকে একটা দিকে পিকনিক করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার হাতে নাতে ফল হিসেবে এ বছর প্রায় ৩৫ শতাংশ পাখি বেশি এসেছে বলে উদ্যোক্তারা জানান। আগামীতে আরো বেশি সংখ্যক পাখি এখানে আসবে বলে আশাবাদী প্রশাসন। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘অন্যের জন্য নয়, নিজের জন্য, নিজের স্বার্থে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে’।
আরও পড়ুনঃ ‘বাঘের সঙ্গে অভিনয় করাটাই ছিল জীবনের সেরা চ্যালেঞ্জ’
যেখানে পাখিরা আসে সেদিকে পিকনিক করার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, অন্যদিকে পিকনিক করার অনুমতি আছে। কিন্তু সেখানেও যাতে মদ্যপান ও ডিজে বাজানো না হয়, সেদিকে নজর রাখতে আচমকা অভিযান চালাবে বনবিভাগ। বনদপ্তরের রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত বলেন, পিকনিকের সময় এখানে আচমকা অভিযান চালানো হবে। মদ্যপ অবস্থায় পেলে কিংবা ডিজে বাজালে, ৯৭২ ধারায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন পরিবেশ সচেতনতায় মুল্যবান মতামত দিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য দেবাশীষ প্রামাণিক, এসিপি অচিন্ত্য গুপ্ত, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য, সেচ দপ্তরের আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক, বিডিও প্রণয় কুমার মজুমদার সহ অনেকে।
জলপাইগুড়ি জেলার বিডিও প্রণয় কুমার মজুমদার বলেন,’আমরা চাই এই এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে। এখানকার প্রকৃতিকে বাঁচাতে পারলেই শিলিগুড়িও বাঁচবে। এখানে এলে সকলে যাতে প্রকৃতির মাঝে এক টুকরো প্রাণ খুঁজে পায়, তার চেষ্টা চলছে। তাই পাখি ও প্রকৃতি সব কিছুকেই বাঁচাতে হবে’।