ছাগলের কান দিয়ে মানুষের প্লাস্টিক সার্জারি; এমনটা আবার হয় নাকি? অবিশ্বাস্য এই ঘটনা ঘটিয়েই, দেশের গবেষক মহলে হইচই ফেলে দিয়েছেন; বাংলার আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও ওয়েস্টবেঙ্গল ভেটারিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত গবেষক। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে দুই সংস্থার যৌথ প্রকল্পের সুফল পেয়েছেন ১৫ জন মানুষ; যাঁদের নাক বা কানের প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়েছে সফলভাবে ও অত্যন্ত কম খরচে।
বিশ্বে হইচই ফেলে দিলেন; বাংলার ৭ গবেষক। ছাগলের কানের তরুণাস্থি থেকে, মানুষের বিকৃত নাক ও কানের পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া; আবিষ্কার করলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের গবেষকরা। সেটি পেটেন্ট পেয়েছে; ভারত সরকারের কাছ থেকেও। সোমবার মুখ্য গবেষক সমিতকুমার নন্দী এবং সিদ্ধার্থ জোয়াদার, আরজিকর হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জেন রূপনারায়ণ ভট্টাচার্য; পুরো পদ্ধতিটি সবার সামনে দেখান।
জন্মগত শারীরিক ত্রুটি ঠিক করতে; অথবা দুর্ঘটনায় অঙ্গ কাটা গেলে প্লাস্টিক-সার্জারির দরকার হয়। রোগীর শরীরের চামড়া কেটে; বা কৃত্রিম চামড়া দিয়েই অপারেশন হয়। কৃত্রিম চামড়া কতদিন শরীরে থাকবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই; অনেক সময় আবার বিরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। নিজের অঙ্গ থেকে চামড়া কেটে করতে গেলে; দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপোচার করতে হয়। একটা দাগ ঢাকতে; আরেকটি অস্ত্রোপচারের দাগ থেকে যায়। এর থেকে মানুষকে মুক্তি দিতেই; আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের প্লাস্টিক-সার্জারি বিভাগে কাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ পিছু ছাড়ছে না কেকে-বিতর্ক, বাদ রূপঙ্কর এলেন অরিজিৎ সিং
আরও একটি কারণ ছিল, সাধারণ মানুষকে কম দামে বায়োলজিক্যাল ইমপ্ল্যান্ট করতেই; ছাগলের কানকে বাছা হয়। এতেই সফল, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি ও পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যলয়ের; সাত গবেষক-অধ্যাপক। মানুষের শরীরে ছাগলের কান প্রতিস্থাপন, সফল হওয়ার জন্য; ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট-অফ-বায়োটেকনোলজি থেকে কপিরাইটও পেয়েছেন সাত গবেষক।
পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়া নাক-কানের ত্রুটিযুক্ত; ৪০জনকে বাছা হয়েছিল; জন্মগত ত্রুটিসম্পন্ন রোগীও ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৫জন রোগী-রোগীর পরিবার; এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করতে রাজি হন। ১৫ জনের রাইনোপ্লাস্টি (নাকের সার্জারি) এবং মাইক্রোশিয়া (কানের সার্জারি) করা হয়। “কোনও ক্ষেত্রেই তা বিফল হয়নি”; বলেই দাবি গবেষকদের। প্রকল্পের প্রোজেক্ট ইনভেস্টিগেটর রেডিওলজিস্ট ডা শমিতকুমার নন্দী জানিয়েছেন; “আশা করি দ্রুত এর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি মিলবে”।