উত্তর সিকিমে গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিপর্যস্ত বাঙালি পর্যটক। কয়েকদিনের অনবরত বৃষ্টির কবলে ভূমিধস; আলোড়ন সৃষ্টি করেছে জনমহলে। অস্বস্তিকর পরিবেশের মধ্যে নাজেহাল হয়ে পরেছে বহু পর্যটক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।
সোমবার থেকে একটানা বৃষ্টির ফলে তিস্তা উঠেছে ফুলে-ফেঁপে। বন্যার প্রকোপে পরিস্থিতির আরও জটিল হতে শুরু করেছে। কর্তৃপক্ষের মতে, প্রায় ৬০ টি পর্যটক যানবাহন আটকে আছে লাচেন এবং জেমমা-৩ এর মাঝে। লাচেন; যা পর্যটকদের অত্যন্ত জনপ্রিয় গন্তব্য।
পর্যটকদের সুস্থ ভাবে সরিয়ে নিয়ে আসতে কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে দায়িত্ব নিয়েছেন। যানজটের দুরাবস্থা কাটিয়ে; অতিসত্ত্বর পর্যটকদের গ্যাংটকে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রশাসন। পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে মোতায়েন করা হয়েছে একাধিক ভারতীয় সেনা।
আরও পড়ুন: বাংলায় বর্ষা আসছে, গরমে ভোগান্তি আরও চার পাঁচ দিন
কলকাতা থেকে আগত পর্যটকদের কথায়, এই বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গেছে তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের এক ছাত্র জানায়, “সোমবার সিকিমের মার্কেটে ঘুরতে বেড়িয়ে নাজেহাল হতে হয়। সেখানে প্রচন্ড বৃষ্টির শুরুতে; স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাহায্যে; পুনরায় ফিরে আসতে হয় হোটেলে। একটা গোটা দিনের ঘরবন্দি পরিস্থিতি তাদের হতাশ করলেও; এই খারাপ আবহাওয়ায়; সুস্থভাবে হোটেলে ফিরে আসাই; তাদের কাছে অনেক বড়ো স্বস্তি। হোটেলে খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা করা ছিল”।
এই দুর্বিসহ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে; শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক আসার পথে; তিস্তার কাছে দীর্ঘ সময়ের যানজট শুরু হয়।’একটি গাড়ি তিস্তায় পড়ে যায়’, এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়ে।
পর্যটকদের কথায়, গ্যাংটকে ফিরে এসেও স্বস্তি ফেরেনি; খারাপ পরিস্থিতির কারণে; খাদ্যের পরিমাণ হয় সীমিত। এবং সামগ্রীর দামও বাড়ে; স্বাভাবিকের থেকে বেশি।
পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে অনেক পর্যটককেই নিজেদেরই জ্বালানি সংগ্রহ করতে হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায়। খারাপ আবহাওয়ার কারণে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা নষ্ট হয়ে যায়। পর্যটকরা বাড়ির লোকেদের সাথে যোগাযগ করতে না পেরে; চিন্তায় ভেঙে পরে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত লাচেন, লাচঙ্গ এবং জঙ্গু পর্যটন কেন্দ্রে নতুন পর্যটকদের আসা আপাতত স্থগিত থাকবে। পরিষেবা স্বাভাবিক করতে সচেষ্ট প্রশাসন। তবে আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে এবিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি। আশা করা যাচ্ছে; পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে; সুস্থ ভাবেই ঘরে ফিরবেন পর্যটকরা।