কাশ্মীর: জম্মু কাশ্মীরে ফের হত্যাকান্ড। ফের নিশানায় বিজেপি নেতারা। এবার, জম্মু কাশ্মীরের কিস্তওয়ার জেলায় বিজেপি রাজ্য সম্পাদক ও তাঁর ভাইকে গুলি করে হত্যা করল জঙ্গিরা। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার জেরে জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকায় কার্ফু জারি করেছে জম্মু কাশ্মীর সরকার। কাশ্মীর বিজেপির রাজ্য সম্পাদক অনিল পারিহার (৫২) ও তাঁর ভাই অজিত পারিহার (৫৫) বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই তাঁদের উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় আতঙ্কবাদীরা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: অসমে উগ্রপন্থী সংগঠনের গণহত্যা
এর আগেও, এই বছরের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় প্রকাশ্যে বিজেপি নেতা সাবির আহমেদ ভাটকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা ৷ ঈদ উপলক্ষে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন সাবির ৷ পুলওয়ামাতে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকে তার পরিবার।
আরও পড়ুন: মোদীর ভারতে সর্দার প্যাটেলের রেকর্ড ভাঙবে ছত্রপতি শিবাজীর মূর্তি
ঘটনার দিন সকাল থেকেই খোঁজ মিলছিল না তার ৷ সাবিরকে খুঁজতে গোটা এলাকা জুড়ে চুলচেরা তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। অবশেষে প্রায় রাত আড়াইটে নাগাদ বাড়ির কাছেই সাবিরের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের সন্ধান পায় নি পুলিশ। সেই ঘটনার তদন্ত আজও চলছে।
গত বছরেও, ২০১৭ তে বিজেপি যুব মোর্চার নেতা গওহর আহমেদ ভাটকে, সোফিয়ান জেলায় গলা কেটে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই ঘটনারও কোন কিনারা হয় নি।
কাশ্মীর বিজেপির রাজ্য সম্পাদক অনিল পারিহার ও তাঁর ভাই অজিত পারিহার এর হত্যার পর রাজ্যে বিজেপির মনোবল কমে যাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও এই ধারণা উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এই ঘটনায় পারিহার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি এও বলেছেন, এভাবে বিজেপি কর্মী ও নেতাদের খুন করে দলের মনোবল নষ্ট করা যাবে না। কাশ্মীরের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বিজেপি নেতা-কর্মীরা লড়াই করছিলেন, করছেন ও এভাবেই করতে থাকবেন।
ঘটনার পর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দলের সহকর্মী তথা বিজেপির জম্মু-কাশ্মীরের সম্পাদক অনিল পারিহার নিহত হওয়ায়, আমরা গভীর শোকাহত। শোক প্রকাশের ভাষা নেই।’
আরও পড়ুন: বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্টে লোকসভা ভোটের আগে স্বস্তিতে নরেন্দ্র মোদী
জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ট্যুইট করেন, ‘খুব বাজে খবর। অনিল ও অজিতের পরিবারকে আমার সমবেদনা। তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি’।
এই হত্যাকাণ্ডের পর কিস্তওয়াড়ে কার্ফু জারি করেছে পুলিশ৷ এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকেই নজর নিরাপত্তা বাহিনীর। রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে ঘটনার পরই তুমুল বিক্ষোভ দেখানো হয়।
তবে একের পর এক বিজেপি নেতাকে দুষ্কৃতীরা টার্গেট করায় ব্যাপারটায় রাজনৈতিক রং লেগেছে। এইসব হত্যাকান্ড উগ্রপন্থীদের কাজ না এর পিছনে বৃহৎ কোন ষড়যন্ত্র আছে সেটাই ভাবছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।