নিজস্ব সংবাদদাতা : তিতলি, এই নামটাই এখন দুর্গা পুজোর মুখে মানুষের চিন্তার কারন। পুজোর আনন্দ মাটি করে দেবে না তো ? তবে, কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে খুব বেশি হলে আর ২ দিন বৃষ্টি হবে। ষষ্ঠীর অনেক আগেই সব দুর্যোগ কেটে যাবে বলেই প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
প্রাথমিকভাবে দেখা গিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় তিতলির অভিমুখ রয়েছে উত্তর-পশ্চিম দিকে। উত্তর-পশ্চিম অভিমুখে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড় তিতলি অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে জানিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। কিন্তু, গত কয়েক ঘণ্টায় আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে তিতলি। যার ফলে আবহাওয়াবিদদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। মনে করা হচ্ছে, এভাবে অগ্রসর হলে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলেই আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। সেক্ষেত্রে অপেক্ষা রয়েছে প্রবল দুর্যোগ। ঝড় বৃষ্টির কারণে মাটি হতে চলেছে পুজোর ঠিক আগে পুজোর কেনাকাটা।
ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের পর তিতলির প্রধান অভিমুখ এবার বাংলা। হঠাৎ গতিপথ পরিবর্তন করে বাংলা উপকূলের দিকেই আসছে তিতলি। ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি হয়েছে দিঘা, শংকরপুর, মন্দারমনি সহ বাংলা উপকূলে। আগামী কয়েক দিনেও হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। তবে, তিতলি ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে দুর্বল হচ্ছে বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
ঝড় বৃষ্টি কতদিন চলবে সেটাই এখন মানুষের বড় প্রশ্ন। পুজোর বাজার, পুজোর কেনাকেটাতে তো সমস্যা হবেই। কিন্তু, পুজোর কদিন ঠাকুর দেখতে বেরোব কিভাবে সেটাও বড় প্রশ্ন মানুষের। এমনিতেই, পুজোর আয়োজকরা পড়েছেন সমস্যায়। শেষ মুহূর্তের কাজের সময় বৃষ্টি এতটা সমস্যায় ফেলবে ভাবেন নি উদ্যোক্তারা।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে বৃহস্পতিবার ভোরেই শক্তিশালী তিতলি ঝড় আছড়ে পড়েছে ৷ ওড়িশা উপকূলের গঞ্জাম জেলার গোপালপুরে ও অন্ধ্র উপকূলের পালসায় ভয়ঙ্কর ঘূর্ণীঝড় আছড়ে পড়ে৷ সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিমি বেগে ঝড় শুরু হয়েছে। দুই রাজ্য উপকূল থেকে প্রায় ১০,০০০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
ইতিমধেই বঙ্গোপসাগরের উত্তর ভাগ ও ওড়িশার দক্ষিণ উপকূলে সবচেয়ে তীব্র হয়েছে তিতলির আক্রমণ। অন্যদিকে, ওড়িশার দক্ষিণ উপকূলে এর তীব্রতা রয়েছে ১২০-১৩০ কিলোমিটার মতো। তবে, তিতলি ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে দুর্বল হচ্ছে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
বাংলা উপকূলের দিকে অভিমুখ পরিবর্তন করায় বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তিতলির জেরে কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর সহ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই হালকা থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ৷ জানিয়েছে, আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
উপগ্রহ চিত্র পর্যবেক্ষণ করে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই আরও শক্তি বাড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’। শেষ কয়েক ঘণ্টায় উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে এই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। আর এর ফলে জোরালো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে তিতলির আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে এখবর জানা গেছে।
পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি আর বাড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর ঝড়ের দাপট থাকবে কম। ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। ইতিমধ্যেই দিঘা সহ সব উপকূলেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে পর্যটকদের। সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদেরও। মাইকিং করে সতর্কতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
তবে সব ঝড় বৃষ্টি, ষষ্ঠীর আগে থেমে যাবে বলেই জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। যদিও সেটা খুব একটা আশ্বস্ত করছে না বাঙালিদের। পুজোতেও তিতলির প্রভাবে বৃষ্টি হবে, এটাই আশঙ্কায় রেখেছে পুজো উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে আপামর বাঙালিকে।