The News বাংলা, ভোপাল: ২৮ শে নভেম্বর মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার ২৩০ আসনে ভোট। ইস্তেহারে কৃষি ঋণ মকুব থেকে বেকার সমস্যা সমাধান সবই রেখেছে কংগ্রেস। কিন্তু প্রচারের শেষ দিকে সেই গোমাতাই বড় ভরসা কংগ্রেসের।
রাজ্যে গরুদের থাকার জায়গা নেই। ক্ষমতায় এলে রাজ্যে জায়গায় জায়গায় গোশালা করে দেবার প্রতিশ্রুতি দিল কংগ্রেস। রাজ্যের ২৩ হাজার গ্রামে গোশালা করে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের। মধ্যপ্রদেশে ভোট প্রচারে বিজেপির মত সেই গোমাতাকেই আঁকড়ে ধরল কংগ্রেস।
শুধু তাই নয়, কংগ্রেসের অভিযোগ, শিবরাজ সিং চৌহানের বিজেপি সরকার গরুদের জন্য কিছুই করে নি। গরুদের নিয়ে কোন প্রতিশ্রুতি রাখে নি বিজেপি সরকার।
আর সেই নিয়েই শুরু হয়েছে লড়াই। কংগ্রেসের এই ‘গোমাতা’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, এতদিন গোমাতাদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে একা আন্দোলন করে এসেছে বিজেপি। এখন ভোটের মুখে কংগ্রেস মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ডালি নিয়ে হাজির।
আরও পড়ুনঃ অমৃতসরে প্রার্থনাসভায় গ্রেনেড হামলায় পাকিস্তানের হাত
মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ২০০৩-এ ৩৭টি, ২০০৮-এ ৭১টি এবং ২০১৩-এ ৫৮টি আসন পায় কংগ্রেস। ২৩০ আসন বিশিষ্ট মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় গত তিনটে নির্বাচনে মাত্র এই কটা আসনই জিতেছিল কংগ্রেস।
অন্যদিকে, এই নির্বাচনগুলোয় বিজেপি জিতেছিল যথাক্রমে ১৭৩, ১৪৩ এবং ১৬৫টি আসন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ১৫ বছর পরে রাজ্যের বিজেপি সরকারকে হঠানোর এটিই সেরা সুযোগ কংগ্রেসের কাছে।
১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার ফলে এমনিতে একটা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া রয়েছে শিবরাজ সরকারের বিরুদ্ধে। সেই হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে কংগ্রেস ফায়দা তুলতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিচ্ছে বেশ কিছু জনমত সমীক্ষা। এর ফলে রাজ্যে আগের থেকে অনেকটা বেশি উজ্জীবিত হয়েছে কংগ্রেস নেতা কর্মীরা।
আরও পড়ুনঃ ‘গুজরাট দাঙ্গা’, ২৬ নভেম্বর মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
কংগ্রেসও বিলক্ষণ যানে, এই নির্বাচনে আবার ভরাডুবি মানে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ভবিষ্যতে নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে যাওয়া। তাই রাজ্যটি দখল করার জন্য অনেক বেশি জোর দিয়ে ঝাঁপিয়েছে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি।’ আর তাই, গত তিনটে নির্বাচনের থেকে এ বার কংগ্রেসের উপস্থিতি অনেকটাই বেশি।
কিছুদিন আগে যে ইস্তেহার কংগ্রেস প্রকাশ করেছে, তাতে সমাজের সব সমস্যার কথাই তুলে ধরা হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রের দিকে বেশি করে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বেকারত্ব সমস্যার কথা তুলে ধরে তার সমাধান করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ভারতবাসীকে নেতাজীর মৃত্যুদিন জানাল বাংলার পুরসভা
ক্ষমতায় এলে যুব সমাজকে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা করা হবে। সেই সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুরা তুষ্ট হতে পারে, এমন অনেক প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, ক্ষমতায় এলে আশ্রয়হীন গরুদের জন্য থাকার জায়গা করে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের।
আর এখানেই শুরু বিতর্ক। প্রচারের একেবারে শেষে এসে বিজেপির দখলে থাকা ‘গোমাতা’ ইস্যু নিয়েও যে রাহুলের কংগ্রেস এইভাবে টানাটানি শুরু করে দেবে তা ভাবতেই পারে নি বিজেপি।
পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ঘোষণা করেছেন, আবার ক্ষমতায় এলে গরুদের জন্য আলাদা ‘গরু মন্ত্রক’ বা ‘কাউ মিনিস্ট্রি’ চালু করবেন তিনি। আর সব গ্রামেই গরুদের আশ্রয়ের জন্য ‘শেল্টার’ খোলা হবে।
সব মিলিয়ে মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনে মানুষের চেয়েও বেশি প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিচ্ছে ‘গোমাতা’রা। পিছিয়ে নেই পদ্ম বা হাত কেউই। তবে রাজনীতির প্রতিশ্রুতি পালন না হওয়াটা মুখ বুজে মেনে নেয় মানুষ। গোমাতারাও কি সেই একই পথে চড়বেন মানে হাঁটবেন? প্রশ্ন এখন সেটাই।