চিকেন খেলেও বাড়ছে বিপদ বলছে রিপোর্ট

1015
Image Source: Google

The News বাংলাঃ শীত পড়ছে। সামনেই পিকনিক আর বিয়ের লম্বা মরসুম। চিকেন সহযোগে ভুরিভোজ। কিন্তু যে চিকেনটা খাচ্ছেন তা ক্ষতিকর নয় তো? চিকেন নিয়েও চিন্তা করার সময় এসে গেছে। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে, এমনই মারাত্মক তথ্যই উঠে এল চিকেন বা মুরগীর মাংস নিয়ে।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা কি জানে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর

মারাত্মক অসুস্থ রোগীদের যে ওষুধ খাওয়ানোর কথা, তা খাওয়ানো হচ্ছে মুরগীদের। ভাবুন একবার। তাই এবার চিন্তা বাড়ল চিকেন নিয়েও। মুরগীকে খাওয়ানো হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে কলিসটিন ওষুধ। যে কলিসটিন ওষুধ সাধারনতঃ খাওয়ানো হয় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের। ভয়ংকর রিপোর্ট বের করেছে The Bureau of Investigative Journalism

The News বাংলা

কি হয় কলিসটিন ওষুধ শরীরে গেলে?
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, কলিসটিন একটি শক্তিশালি অ্যান্টিবায়োটিক। কলিসটিন ওষুধ শরীরে গেলে, তা যে কোন ড্রাগ প্রতিরোধের কাজ করে। অর্থাৎ কলিসটিন ওষুধ শরীরে গেলে আর কোন ওষুধই আপনার শরীরে কাজ করবে না। এই কলিসটিন ওষুধটাই ড্রাগ প্রতিরোধকের কাজ করবে।

আরও পড়ুনঃ আমলকির আছে বেশ কিছু অসাধারণ উপকারিতা

হায়দরাবাদের রঙ্গারেড্ডি জেলার বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি ফার্মে অভিযান চালিয়ে দেখা গেছে চিকেনদের কলিসটিন ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। যে ওষুধ মরণাপন্ন রোগীদের শেষ আশা বলে খাওয়ান হয়।

Image Source: Google

কি হয় কলিসটিন ওষুধেঃ
কলিসটিন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেয়ে মুরগী সুস্থ থাকে, ওজন বাড়ে তাড়াতাড়ি। ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন জানিয়েছে, কলিসটিন ওষুধ মৃতপ্রায় মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। WHO এর তরফ থেকে মানুষ ছাড়া, এই কলিসটিন ওষুধ কোনরকম প্রাণীকে খাওয়ানোর ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। আর আইন ভেঙে সেই গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ খাওয়ান হচ্ছে মুরগীকে।

The News বাংলা

চিকেনের মাধ্যমে এই ওষুধ মানুষের শরীরে গেলে শরীরের মধ্যে ড্রাগ প্রতিরোধক ব্যাকটেরিয়া তৈরি হবে। তারপর, আর কোন অ্যান্টি-বায়োটিক ওষুধেই কোন কাজ হবে না। ফলে ওষুধ খেয়ে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাই হারিয়ে যাবে মানুষের। ভয়ংকর এক বিপদের সামনে হাজির ভারতবাসী।

আরও পড়ুনঃ গাজর এর অসাধারণ উপকারিতা জেনে নিন

রিপোর্ট বলছে, আমেরিকা থেকে হাজার হাজার টন কলিসটিন ওষুধ ভিয়েতনাম, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াতে পাঠানো হয়। ২০১৬ সালে কয়েক লক্ষ টন কলিসটিন ওষুধ এসেছে ভারতে। তার পুরোটাই ব্যবহার করা হচ্ছে পশু পাখীদের শরীরেই। ভারতের বেশ কিছু কোম্পানী প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপণও করে কলিসটিন ওষুধের। যেটা অত্যন্তঃ বিপদজনক।

The News বাংলা

ভারতে দুটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানী এই কলিসটিন ড্রাগ উৎপাদন করে। কিন্তু ভারত প্রায় ১৫০ টন এই ওষুধ বাইরের দেশ থেকে নিয়ে আসে বলেই রিপোর্টে প্রকাশ। ২০১৬ তে এই আমদানীর পরিমাণ হাজার টন ছুঁয়েছে বলেই রিপোর্টে প্রকাশ।

আরও পড়ুনঃ মানুষের যৌনশক্তি কমে যাওয়ার কারন ও নিরাময়

ভেঙ্কি কোম্পানী এই কলিসটিন ওষুধের বিজ্ঞাপন করে। তারাই আবার কেএফসি ও ম্যাকডোনাল্ডে মুরগীর মাংস সাপ্লাই করে। The Bureau of Investigative Journalism এর রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে, তারা বিনা প্রেসক্রিপশনে ভেঙ্কি স্টোর থেকে কলিসটিন ওষুধ নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি তারা একটি পোলট্রি খাবারের দোকান থেকেও বিনা প্রেসক্রিপশনে ভেঙ্কির স্ট্যাম্প মারা প্যাকেটে কলিসটিন ওষুধ পেয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ‘শব্দের জন্য’ ট্র্যাজিক জীবন ভারতীয় সিনেমার জনকের

যদিও ভেঙ্কির তরফ থেকে দাবী করা হয়েছে, কলিসটিন ওষুধ বিক্রী করে তারা কোন অপরাধ করে নি বা আইন ভাঙে নি। তাদের তরফ থেকে এও দাবী করা হয়েছে যে, তারা যে চিকেন ম্যাকডোনাল্ড, পিজ্জাহাট, ডমিনোস বা কেএফসিতে বেচে তাতে কলিসটিন ব্যবহার করা হয় না।

Image Source: Google

ড্রাগ প্রতিরোধক ব্যাকটেরিয়া থেকে প্রতিবছর বিশ্বে ৭ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। ২০৫০ সালের মধ্যে সেই মৃত্যুর হার গিয়ে পৌঁছাবে প্রায় ১ কোটিতে। যার মধ্যে এশিয়া মহাদেশেই প্রায় ৫০ লাখ মৃত্যু হবে প্রতিবছর।

আরও পড়ুনঃ রামমন্দির নয়, হিন্দু ক্ষোভ থামাতে অযোধ্যায় রামমূর্তির ঘোষণা যোগীর

রিপোর্টে বলছে, কলিসটিন অ্যান্টিবায়োটিক শুধু মুরগীর নয়, ছড়িয়ে পরছে পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করা মানুষের শরীরেও। চিকেন খাবারের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে মানুষ শরীরে। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের মানুষ শরীরে প্রতিরোধক সৃষ্টি করা নিয়ে গবেষণা করা টিমোথি ওয়ালশ জানিয়েছেন, এই ওষুধ মরণাপন্ন রোগীদের শরীরে ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধ কোনরকমেই মুরগীর বা অন্য কোন পশুপাখীর শরীরে ব্যবহার করা উচিত নয়।

Image Source: Google

উন্নতশীল দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই কলিসটিন জাতীয় ড্রাগগুলিকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে। কিন্তু সেই ওষুধই পশু পাখীর খাদ্য হিসাবে ভারত সহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে রপ্তানী করে দেওয়া হচ্ছে। তাতে ভয়ঙ্কর ক্ষতির সামনে পড়ছেন ভারতের মত গরীব দেশের কোটি কোটি মানুষ। তাই এবার চিকেনেও যে চিন্তা বাড়ল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন