ফের গুলির লড়াই চোপড়াতে। শুক্রবার ভোর থেকেই চোপড়ার মকডুমিতে দুই দল দুষ্কৃতি গুলি বৃষ্টি শুরু করে একে অপরকে লক্ষ্য করে। তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যেই এই লড়াই বলে জানা যাচ্ছে। গুলির মাঝে পড়ে এক সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রের পায়ে গুলি লাগে। এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায় তার পা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মমতার সভা আলো করে বসে দাগী সমাজবিরোধী, নির্বাচন কমিশনে গেল বিরোধীরা
গত পরশু থেকেই চোপড়ায় বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষ চলছে। গতকাল ভোটের দিন সেই ঝামেলা চরম আকার নেয়। তবে ভাবা হয়েছিল ভোটের পর তা মিটে যাবে। কিন্তু শুক্রবার ভোর থেকেই তা এবার চরম আকার নেয়। শুক্রবার ভোর থেকেই শুরু হয় গুলির লড়াই। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া বিধানসভা এলাকা দার্জিলিং লোকসভার মধ্যে পড়ে। ভোরের এই গুলির লড়াইয়ে পড়ে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় এক কিশোর। তার পা এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ চলে গেলেন ৪২ এর স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষ জীবিত সৈনিক
বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শুরু হতেই, সকালেই উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া বাস স্টান্ডে বাইক বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয় ভোটাররা। দিঘির কলোনির মিদ্যা অঞ্চলে মহিলাদের রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগও ওঠে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন সাধারণ ভোটারা। বুধবার রাতের ঝামেলার পর, বৃহস্পতিবার লোকসভা ভোট গ্রহণের শুরুতেই গণ্ডগোল শুরু হয় চোপড়ায়।
আরও পড়ুনঃ পাঁচে পাঁচ, ভোট হয়ে যাওয়া বাংলার ৫টি আসনেই জিতবে বিজেপি, দাবি মুকুল রায়ের
ভোট দিতে না পেরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে জনগণ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ ওঠে। পুলিশের সাথে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে জনতা। অভিযোগ জানায় বাইক বাহিনীর বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকার অভিযোগ করে ভোটারা। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয় অভিযোগ পেলে তবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চোপড়ার ১৮০ নাম্বার বুথের ভোট চলাকালীন প্রায় ৩০০ মানুষকে আটকে দেওয়া হয় ভোট দেওয়া থেকে।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের বোকামিতে বাংলার ফিল্ম সিরিয়াল পরিচালকদের মাথায় হাত
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত সপ্তাহে সভা করেন চোপড়াতে। সেই জনসভা থেকে তিনি বার্তা দেন, “চোপড়াতেই লুকিয়ে আছে দার্জিলিং জয়ের চাবিকাঠি”। তিনি এমন কথাও বলেছিলেন, “চোপড়াই দার্জিলিং আসনে তৃণমূলকে জেতাতে পারে। এখানকার সব ভোট পেলে আমরা জিতবই। বিজেপি বদমায়েশি করেছে। কংগ্রেস, সিপিএমকে ভোটটা দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। আমাদের ভোট দিন”। মমতার এই বক্ত্যব্যের পরেই ঝামেলা শুরু করেছে তৃণমূল, অভিযোগ বিজেপির।
আরও পড়ুনঃ পয়সা দিয়ে আনা হয় সেলিব্রিটিদের, বিদেশি অভিনেতা প্রসঙ্গে বেফাঁস কল্যাণ
নিজেকে বিজেপি সমর্থক জানিয়ে এক ব্যক্তি সরাসরি তৃণমূল এর বহিরাগতর দিকে অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। বলা হয়েছে এটা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের কাজ। অভিযোগ- পাল্টা অভিযোগে গুলির লড়াইয়ে পড়ে গুলিবিদ্ধ এক কিশোর।
আরও পড়ুনঃ ফিরদৌসের পর গাজী নূরকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠাল ভারত সরকার
প্রায় ১৬ লক্ষ ভোটারের দার্জিলিং লোকসভা আসনের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ব্লকের একটা বড় অংশ রয়েছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকার ভোট সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ২৯ হাজারের মতো। বাম আমলেও কংগ্রেস এলাকা হিসেবে যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল চোপড়া। ২০১১ সালে প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক হামিদুল রহমান নির্দল প্রার্থী হিসেবে জেতেন। পরে যান তৃণমূলে।
আরও পড়ুনঃ পুরুলিয়ায় আবার বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার
এর পরে গত কয়েক বছরে তৃণমূল শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ২০১৬-তে প্রথম হামিদুলই তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন। কংগ্রেস, সিপিএমের পুরনো সংগঠনের সঙ্গে সম্প্রতি বিজেপির সংগঠন তৈরি হয়েছে। সেখানে চোপড়া থেকে ৫০ হাজারের বেশি ‘লিড’ নিতে পারলে শিলিগুড়ি এবং পাহাড়ের ভোটের নিরিখে প্রার্থী অমর সিংহ রাই অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারেন। জমি ছাড়তে নারাজ বিজেপিও। ফলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের পাশাপাশি চলছে এলাকা দখলের লড়াইও।
আরও পড়ুনঃ রিভালবার নিয়ে বুথে ঢুকে ভোট দেওয়ায় সঞ্জয় দত্তকে শোকজ করল নির্বাচন কমিশন
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।