সুন্দরী বৈশাখীর হাত ধরেই কি বিজেপিতে শোভন? জল্পনা তুঙ্গে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। আর এই ট্রাম্প কার্ড খেলেই মমতার তৃণমূলকে একটা বড় ঝটকা দিতে চাইছেন মুকুল রায়। শোভনকে দলে টানতে পারলে আর লোকসভা ভোটে ভাল ফল করতে পারলে তৃণমূলকে ভাঙতে যে আরও সুবিধা হবে সেটাই আশা করছেন বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুনঃ মরে গিয়েও তৃণমূল বিজেপির হাত থেকে রেহাই পেলেন না বড়মা
কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চ্যাটার্জির রাজনৈতিক ঠিকানা কি শেষ অবধি বিজেপি? বাড়ছে জল্পনা। সম্প্রতি শোভন এবং শোভনের বান্ধবী বৈশাখী সহ বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রস্তরের নেতাদের বক্তব্যে সেই সম্ভাবনাই দৃঢ় হচ্ছে।
সম্প্রতি বিজেপির কেন্দ্রস্তরের কিছু নেতার সাথে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদানের ব্যাপারে কয়েক দফা আলোচনাও হয় বলে জানা গিয়েছে। সরাসরি স্বীকার না করলেও বিজেপি নেতাদের সাথে আলোচনার বিষয়টি পুরোপুরি উড়িয়েও দেননি তিনি।
বৈশাখী বলেন, কথা হতেই পারে, তবে তার সাথে রাজনীতির সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। তবে আগামী দিনে অনেক কিছুই দেখা যাবে এবং ভবিষ্যতে যা করবেন, একসাথেই করবেন বলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের অ্যাসিড আক্রান্তরা
এদিকে সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহার বক্তব্যে। একপ্রকার নিশ্চিত করেই তিনি শোভনের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, শোভনের জন্য বিজেপির দরজা খোলা, আসতে চাইলে বিজেপি ওয়েলকাম করবে। তবে কবে যোগ দেবেন, তা তিনি পরিষ্কার করে বলেন নি।
কিন্তু নারদা কান্ডে অভিযুক্ত শোভনকে কেন বিজেপি দলে টানতে ইচ্ছুক? এই ব্যাপারে রাহুল সিনহা বলেন, তৃণমূলের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। মমতাকে এক হাত নিয়ে তার বক্তব্য, “মমতা দরকারের সময় রক্ত চুষে নেন, যার বলি হয়েছে শোভন”।
আরও পড়ুনঃ ডিএ মামলায় হাইকোর্টে ফের মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে শোভন চ্যাটার্জির বিশেষ সম্পর্কের কথা কারো অজানা নয়। বহুদিন ধরেই রাজনৈতিক আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু শোভন-বৈশাখীর এই বিশেষ সম্পর্ক। তা নিয়ে দলীয় রাজনীতির জলও অনেক দূর অবধি গড়ায়।
শোভন বৈশাখী সম্পর্ক নিয়ে শোভনের একদিকে যেমন পারিবারিক বিবাদ যেমন চলছিল, তেমনি তার রেশ হানা দিয়েছিল প্রশাসনের অভ্যন্তরেও। শোভনের কান্ডে তিতিবিরক্ত মমতা এক প্রকার বাধ্য হয়েই আদরের ‘কানন’কে তিরষ্কারও করেন। শোভনকে মন্ত্রী পদে ইস্তফা দিতেও বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ মতুয়াদের বড়মার মৃত্যু রহস্যজনক, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
এরপরেই মেয়রের পদ থেকেও নিজেই ইস্তফা দেন শোভন। দলের সাথেও দুরত্ব বাড়ে কয়েকগুণ। আর এই অবস্থাকেই কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। বহুদিনের পোড় খাওয়া এবং ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি করে বড় হওয়া শোভন বিজেপিতে যোগ দিলে রাজনৈতিক ভাবে তারা লাভবান হবে বলে মনে করছে বিজেপি নেতৃত্ব।
তবে শোভন চ্যাটার্জি পরিস্কার জানিয়েছেন, “আমি এখনও তৃণমূল কংগ্রেসে আছি। আমি দলের সৈনিক। ভবিষ্যতে কিছু হলেও আপনারা জানতে পারবেন”। তবে শোভন চ্যাটার্জিকে দলে টানতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেই যে আগে বোঝানোর চেষ্টা করছে মুকুলের বিজেপি, এমনটাই বলছে বাংলার রাজনৈতিক মহল।