The News বাংলা, বোলপুর: না, কোন বোমা মারার হুমকি নেই। গুড় বাতাসা খাওয়ানোর গল্প নেই। এমনকি চড়াম ঢাক বাজাবার শপথও নেই। খোল খঞ্জনিতে বীরভূমের কেষ্ট এবার সত্যি নদের নিমাই। বিজেপির গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার আগেই কেষ্টর খোল করতালে কীর্তন।
বোলপুর তৃণমূল দফতরে খোল খঞ্জনিঃ
বোলপুরে দলের জেলা কার্যালয় এখন খোল, খঞ্জনিতে ভর্তি। বুধবার কীর্তনীয়াদের সমাবেশ। তবে পালা গান বা হরি সংকীর্তন হবে না। ৪০০০ কীর্তনীয়াকে খোল দেবেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এছাড়াও, দলীয় তহবিলের টাকায় কিনেছেন ৮০০০ খঞ্জনি। ব্লক ভিত্তিক প্রাপকদের তালিকাও তৈরি। বীরভূমের ১৯টি ব্লকের সঙ্গে বর্ধমানের ৫টি ব্লকও অনুব্রতর এই দাক্ষিণ্য পাবে।
বুধবার বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে এক বিরাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে৷ যেখানে অনুব্রত মণ্ডল দাঁড়িয়ে থেকে কীর্তনীয়াদের হাতে তুলে দেবেন ৪০০০ খোল ও ৮০০০ হাজার করতাল৷ ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল।
আরও পড়ুনঃ জল অপচয় রোধে বাঙালি ছাত্রের আবিষ্কার ‘প্যাডেল ট্যাপ’
তাঁর নির্দেশে ইতিমধ্যে গ্রামে গ্রামে কীর্তনের দল বেরিয়ে পড়েছে। হরিবোল ধ্বনিতে মুখর কীর্তনীয়ারা। সঙ্গে তৃণমূলের গ্রাম স্তরের নেতা-কর্মীরা। নবদ্বীপের মতোই যেন ভক্তিরসের বান ডেকেছে বীরভূমে। সবই হচ্ছে বিজেপি-র রথ যাত্রা বা গণতান্ত্র বাঁচাও যাত্রার আগে।
পদ্ম শিবিরের হিন্দুত্বের মোকাবিলায় অনুব্রত মন্ডল এর আগেও ব্রাহ্মণ সম্মেলন, সংখ্যালঘু সম্মেলন, আদিবাসী সম্মেলন, রাজপুত সম্মেলন করেছেন। এবার বিজেপি র গণতন্ত্র বাঁচাও আন্দোলনের আগেই তাঁর খোল খঞ্জনি বিলি করে কীর্তন যাত্রার শুরু।
আরও পড়ুনঃ ‘গনতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র মধ্যেই শিলিগুড়িতে প্রথম জনসভা নরেন্দ্র মোদীর
উদ্দেশ্য দুটো। এক লোকসভার আগে বীরভূমের এক বিস্তীর্ণ এলাকায় ভোট বাক্স অটুট রাখা। ও দুই, বিজেপি র গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার জৌলুস কমিয়ে দেওয়া। আর খোল করতালে গোটা জেলা সহ রাজ্যে হইচই ফেলে দিয়ে বিজেপি র যাত্রা থেকে বেশ কিছুটা দৃষ্টি যে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিতে পেরেছেন তা বলাই যায়।
কি বললেন অনুব্রত মণ্ডলঃ
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘খোল, করতাল শবযাত্রায় লাগে। তৃণমূলের দিন শেষ। তাই শবযাত্রার জন্য খোল, করতাল এনেছে’। অন্যদিকে বিজেপি র মরণ যাত্রার জন্যই এই খোল করতাল কীর্তন বলে জানিয়েছেন বীরভূমের কেষ্ট।
আরও পড়ুনঃ জনগণকে ‘গাধা’ বানিয়ে ‘শিক্ষাগুরু নেহেরু’র যোগ্য ছাত্র সব রাজনীতিবিদ
তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রতিটি খোলের দাম ৪ হাজার টাকা ও প্রতি জোড়া করতালের দাম ৫০০ টাকা। কীর্তনীয়াদের বিলি করার জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় দুই কোটি টাকার খোল করতাল কিনেছে বীরভূম জেলা তৃণমূল৷ যা বুধবার বিলি করা হবে কীর্তনীয়াদের মধ্যে।
কি বলছেন বিজেপি নেতারাঃ
বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘এটা কোনও সরকারি উদ্যোগ নয়৷ জেলা তৃণমূল এই খোল করতাল বিলিতে ২ কোটি টাকা খরচ করছে৷ এই ২ কোটি টাকার উৎস কোথায়? সবই সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে, বলার আর কিছু নেই’।
তবে খোল করতাল উপহার পাবার খবরে কীর্তনীয়ারা কিন্তু দারুণ খুশি। তাঁদের মতে, এই প্রথম কেউ ব্রাত্য কীর্তনীয়াদের সম্মান জানাচ্ছেন। কারণ যাই হোক, এটাই বা কম কিসের, বলছেন কীর্তনীয়ারা। সব মিলিয়ে ফের সংবাদ শিরোনামে বীরভূমের ‘কলির কেষ্ট’ আর এখন ‘নদের নিমাই’ অনুব্রত মণ্ডল।