The News বাংলা, কলকাতা: অঙ্কটা আগেই ছিল। মঙ্গলবার থেকে তা আবার সামনে এল। তৃণমূলের সমস্ত ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল শোভন চ্যাটার্জীকে। এবার কি তাহলে মমতার ‘কাননে’ ঘাসফুলের বদলে পদ্ম ফুটবে?
কানাঘুষো আগেই ছিল। মঙ্গলবার মন্ত্রীপদ ও মেয়রপদ ছাড়ার পর শোভন চ্যাটার্জী কি এবার বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন? আপাতত এই প্রশ্ন নিয়েই রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে। সারদা ও সিবিআই থেকে বাঁচতেই কি মুকুল রায়ের মত তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে শোভন? প্রশ্ন সেটা নিয়েও।
বিজেপি সূত্রে খবর, এর আগে কলকাতার মেয়র দিল্লিতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। কিন্তু কি বিষয়ে কথা হয়েছে তা কেউই খোলসা করেননি। স্বীকার করেন নি শোভনও।
আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশে মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা শোভন চ্যাটার্জীর
তবে তৃণমূলের অন্দরেই আলোচনা চলছে, শুধুই কি পারিবারিক অশান্তির কারণে এই পদত্যাগ? যদিও তাঁর ব্যক্তিগত অশান্তি অনেক ক্ষেত্রে কাজে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন দলের একাংশ। তবে শোভনের বিজেপিতে যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল।
শোভন চ্যাটার্জী বহুদিনের পুরোনো রাজনীতিবিদ। খুব কম বয়সে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর হয়েছেন শোভন। বাম আমলেও তিনি বেহালায় নিজের ওয়ার্ড থেকে হেলায় জিতেছেন।
আরও পড়ুনঃ কয়েক দশকের সম্পর্ক শেষ করে শোভনকে তাড়ালেন মমতা
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই মমতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বামেদের বিরুদ্ধে লড়েছেন শোভন। এমনিতেই রাজ্য বিজেপিতে সেই রকম নেতার অভাব বলেই বারবার বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
তাই শোভন চ্যাটার্জীর মত নেতাকে পেতে আগ্রহী রাজ্য বিজেপিও। পরিস্থিতি শান্ত হলেই শোভনের সঙ্গে কথা বলবে রাজ্য বিজেপি, এমনটাই জানা গেছে। সারদা, নারদা তদন্তে সিবিআই এর হাত থেকে বাঁচতেই মুকুল রায়ের মত বিজেপির পথে শোভন বলছেন তৃণমূল নেতারা।
আরও পড়ুনঃ ভারতবাসীকে নেতাজীর মৃত্যুদিন জানাল বাংলার পুরসভা
কোচবিহারে রথযাত্রার শুরুর দিন তৃণমূল কংগ্রেসের কোন নেতা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো চলছে। এদিকে শোভনের পদত্যাগ ও তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, ‘অপেক্ষা করুন, আরও অনেক চমক অপেক্ষা করছে’।
এমনিতেই, তৃণমূলের প্রাক্তন নাম্বার দুই ও রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে শোভন চ্যাটার্জীর সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। সেই সম্পর্ক এখনও ভালো আছে বলেই মনে করেন সবাই। তাই মুকুলের হাত ধরে শোভন গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন, বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এই নিয়ে, মুকুল বা শোভন কেউই কিছু বলতে চান নি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্য অন্য আরও একটা কথা বলছেন,এখনই বিজেপিতে যাওয়ার কোন ঝুঁকি নেবেন না শোভন। কারন সে ক্ষেত্রে বিধানসভায় দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় পড়ে যাবেন শোভন চ্যাটার্জী। সেটা কখনই তিনি চাইবেন না। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের রেজাল্ট দেখেই, তবে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
মমতা দিদি, ভাই শোভনের ডাকনামেই ডাকতেন। শোভনের ‘কানন’ নামটা তোলা ছিল শুধুই দিদি মমতার জন্য। ঘাসফুল থেকে সেই কাননকেই ছেঁটে ফেললেন মমতা। মমতার ‘কাননে’ কি এবার তাহলে পদ্মফুল ফুটবে? প্রশ্নটা এখন সবার।