২০১৪ দোলা সেন। ২০১৯ মুনমুন সেন। ফের একবার আসানসোলে কোন রাজনৈতিক নেতা বা স্থানিয় কোন নেতাকে লোকসভা ভোটে না দাঁড় করিয়ে কি ফের বড় ভুল করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? রাজনৈতিক মহলে এমন প্রশ্নই ইতিমধ্যেই উঠে গেছে। মুনমুন সেনকে দাঁড় করিয়ে আসানসোলে কি বাবুল সুপ্রিয়কে ওয়াকওভার দিলেন মমতা? আসানসোলে ফের ৫ বছর আগের প্রশ্ন ঘোরা ফেরা করছে।
আরও পড়ুনঃ সমস্ত তর্জন গর্জন সার, তৃণমূলের বাতিল সাংসদকে দলে নিয়ে মুখ রক্ষা মুকুলের
২০১৪ সালে দোলা সেনকে দাঁড় করিয়ে নেতা কর্মীদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন নেত্রী মমতা। প্রকাশ্যে কেউ কিছু না বললেও, সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছিল ভোটের ফলে। তৃণমূলের দোলা সেনকে হারিয়ে আসানসোল লোকসভা আসন জয় করেছিলেন বিজেপির বাবুল সুপ্রিয়। প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েই বাজিমাত করেছিলেন গায়ক বাবুল। তবে তাতে বাবুল বা বিজেপির কৃতিত্ব যত না ছিল তার চেয়েও বেশি ছিল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
আরও পড়ুনঃ লাস্যময়ী নুসরত ও সুন্দরী মিমিই এবার মমতার চমক
ভোটে দোলা সেন হেরে যাবার পর মলয় ঘটক থেকে শুরু করে সব তৃণমূল নেতাই মমতার কোপে পরেছিলেন। এত কিছুর পরেও ফের সেই একই ভুল মমতা কেন করলেন? আসানসোল তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, গতবারের সেই একই ভুল ফের মমতা করায় ফের অসন্তোষ জেলা তৃণমূলে।
আরও পড়ুনঃ প্রচুর চমক, রাজ্যের ৪২টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের ৪২জন প্রার্থী কে কে
এমনিতেই বাঁকুড়া লোকসভায় বহুবছরের সাংসদ সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়া হারিয়ে লোকসভায় যাওয়ার পর থেকে আর নিজের কেন্দ্রের দিকে কোনদিন পা বাড়াননি সাংসদ মুনমুন সেন, এমনটাই শেষ ৫ বছরে অভিযোগ ছিল। দরকারের কোন কাজে সাংসদকে পাওয়া যায় না, অভিযোগ ছিল জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও।
আরও পড়ুনঃ পুলিশে ভরসা নেই, একমাস আগেই বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী
মমতার খাতায় মুনমুন সেনের পারফরমেন্স ও ছিল শুন্য। সন্ধ্যা রায়ের সঙ্গে মুনমুন সেনও যে এবার প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ চলে যাচ্ছেন রাজনৈতিক মহলে এমনটাই ছিল খবর। কিন্তু প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হবার পর দেখা গেল, মমতা সেই মুনমুনকেই বাঁকুড়া থেকে তুলে এনে গুঁজে দিলেন আসানসোলে। জিতেন্দ্র তিওয়ারি দাঁড়ালে আসানসোলে নন বেঙ্গলি ভোট বাবুলের থেকেও কাড়তে পারতেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ বাংলার কোন লোকসভা আসনে কবে ভোট দেখে নিন
খবর ছিল, আসানসোলের মেয়র ও বলিষ্ঠ নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিই এবার আসানসোল লোকসভার প্রার্থী হবেন। মমতা জানিয়েওছিলেন যে, এবার রাজনৈতিক নেতাদেরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। ফলে সবাই ভেবেছিলেন যে দাপুটে নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিই হবেন এবার তৃণমূলের প্রার্থী। সেক্ষেত্রে এই আসনে বাবুলকে হারিয়ে তিনিই জিতবেন সেটাও ছিল অনেকটাই পরিষ্কার। ভোট বিশেষজ্ঞরা তেমনটাই মনে করছিলেন।
আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে পাকিস্তানে ফের একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে
তবে তৃণমূল সূত্রে যেটা জানা যাচ্ছে, এখানেও সেই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এরই খেলা। জেলার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস ও তৃণমূলের একটা গোষ্ঠী চাইছিলেন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। আবার মলয় ঘটক সহ অন্য একটি লবি চাইছিল না জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। ফলে দুপক্ষকেই বাগে আনতে সেই ২০১৪ সালের মতই একই দাওয়াই নিলেন মমতা। বাবুলকে হারাতে দাঁড় করিয়ে দিলেন মুনমুনকে।
আরও পড়ুনঃ গেরুয়া ভোটে থাবা বসাতে অধিকাংশ আসনেই ব্রাহ্মণ প্রার্থী ঘোষণা দলিত নেত্রী মায়াবতীর
এবার মুনমুন সেনকে দাঁড় করিয়ে ফের লড়াইয়ে যে বিজেপি আর বাবুল সুপ্রিয়কেই যে ওয়াক ওভার দিলেন মমতা এমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল। এক সেনকে জিততে দেয়নি আসানসোল ও তৃণমূল নেতারাই। আরেক সেনকেও কি আসানসোল থেকে খালি হাতেই ফিরতে হবে? উত্তর জানা যাবে ২৩মে। তবে এই লড়াইয়ে যে আপাতত কিছুটা হলেও এগিয়ে গেলেন বাবুল সুপ্রিয়, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি আসানসোল তৃণমূল কংগ্রেসও।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।