সকাল ১০টা থেকে প্রায় রাত ১০টা, প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে গেলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। শনিবার থেকে মঙ্গলবার, টানা ৪ দিন জেরার পরেও রেহাই মিলল না রাজীবের। টানা ৪ দিন পর, মঙ্গলবার চোখে মুখে উদ্বেগ চোখে পরল কলকাতার নগরপালের। বুধবার আবার জেরার জন্য তলব করা হয়েছে তাঁকে।
আরও পড়ুনঃ সারদা চিটফান্ড মামলায় রাজীব কুমারকে ভয়ঙ্কর বিপদে ফেললেন কুণাল ঘোষ
বিপদ পিছু ছাড়ছে না কলকাতার নগরপাল রাজীবে কুমারের। কুণাল ঘোষের বয়ানের সঙ্গে তাঁর বয়ান অনেকক্ষেত্রে একেবারেই মেলেনি। কাজেই কুণাল ঘোষকে শিলং থেকে ছেড়ে দিলেও মঙ্গলবার রাজীব কুমারের বয়ান রেকর্ড হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। ফের ডাকা হয়েছে বুধবারেও, ঠিক সকাল ১০ টায়।
প্রসঙ্গত, রবিবার এবং সোমবার কুণাল ঘোষের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে প্রশ্ন করা হয় কলকাতার নগরপালকে। মঙ্গলবার আর কুণালকে সিবিআই অফিসে যেতে না বললেও রাজীব কুমারকে ফের ডাকা হয়। সেই মতো সকাল দশটা নাগাদ সিবিআই অফিসে হাজির হন কলকাতার নগরপাল। সিবিআই সূত্রের খবর, রাজীবের বয়ানে প্রচুর অসঙ্গতি পেয়েছেন তাঁরা। বিশেষত, কুণাল ঘোষের বিবৃতির সঙ্গে তাঁর বয়ান বেশ কিছু জায়গায় মিলছে না। সিট-এর তদন্তকারী অফিসারদের সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানতেই ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে রাজীবকে।
আরও পড়ুনঃ বিধায়ক খুনে রাম নেতাকে বাঁচাতে আসরে বাম নেতা
এই কারণেই বুধবারের জন্য নতুন প্রশ্নমালা তৈরি করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে রাজীবকে চাপে ফেলতে কোনও সাক্ষীকে নিয়ে আসা হল কি না। এদিন হনুমান টুপি পরিয়ে মুখে ঢেকে সিবিআই অফিসে নিয়ে আসা হয় এক ব্যক্তিকে। ওই ব্যক্তি আসলে কে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। জানা গেছে ওই ব্যক্তি প্রাক্তন পুলিশ কর্তা রজত মজুমদার। তাঁকেও রাজীবের মুখোমুখি বসিয়ে দুজনকেই জেরা করা হয়েছে বলেই খবর।
কলকাতার নগরপালকে সিবিআই গোয়েন্দাদের প্রশ্ন করার পর্ব এই নিয়ে চতুর্থ দিনে পড়ল। এরই মধ্যে শিলংয়ের সিবিআই অফিসে ‘মুখোশ’ পরিয়ে এক ব্যক্তিকে নিয়ে এলেন সিবিআই গোয়েন্দারা। হনুমান টুপি পরিয়ে মুখে ঢেকে নিয়ে আসা ওই ব্যক্তি আসলে কে, তা নিয়েই তৈরি হয় রহস্য। একটি গাড়িতে করে সিবিআই গোয়েন্দারা মুখ ঢাকা এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসেন। বেশ কয়েকজন গোয়েন্দা কার্যত পাহারা দিয়ে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে সিবিআই অফিসে ঢোকেন। তবে এত গোপনীয়তা রক্ষা করে কাকে নিয়ে আসা হলো, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সিবিআই অফিসাররা।
আরও পড়ুনঃ পরীক্ষা শুরুর আগেই হোয়াটস অ্যাপে ফাঁস মাধ্যমিক প্ৰশ্নপত্র
শুধু সারদা নয়, বুধবার রোজ ভ্যালি সহ অন্যান্য চিটফান্ড দুর্নীতি নিয়েও ফের নতুন প্রশ্নমালা দিয়ে চাপে ফেলা হতে পারে কলকাতার নগরপালকে। সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজীব কুমারের সব জবাবে এখনও সন্তুষ্ট নন গোয়েন্দারা। কুণাল ঘোষ এবং রাজীব কুমারের বয়ানও মিলিয়ে দেখছেন তাঁরা। কারণ, দুজনের বয়ানে বেশ কিছু অমিল রয়েছে। ফলে, কে সত্যি কথা বলছেন, তা ভাল ভাবে যাচাই করে নিতে চান সিবিআই কর্তারা।
এদিকে রাজীব কুমারকে বিপদে ফেলে শিলং থেকে কলকাতায় পা দিয়েই ফের বোমা ফাটালেন কুণাল ঘোষ। রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তিনি। এবার সিবিআই তদন্তের মাঝেই সারদা মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আনলেন কুণাল।
আরও পড়ুনঃ ফের লজ্জার অন্ধকারে সিবিআই, চরম অপমানের শাস্তি সিবিআই প্রধানকে
কুণাল বলেন, “আমি আজ সকালে সিবিআই-কে লিখিত অভিযোগ করেছি। প্রথম ১০ ফেব্রুয়ারী(রবিবার) এবং তারপর ১১ ফেব্রুয়ারী(সোমবার) আমাদের দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রবিবার জিজ্ঞাসাবাদের সময় কয়েকজন পুলিশ অফিসারের নাম এসে গিয়েছিল। কিন্তু, তাঁরা খুব গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী, তাই সে বিষয়ে মন্তব্য করব না। তবে সেদিন রাতে সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে রাজীব কুমার সেই অফিসারদের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন”। তদন্তে জেরার মাঝেই সারদা মামলায় রাজীবের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ আনলেন কুণাল।
আরও পড়ুনঃ রাহুলকে সরিয়ে লোকসভা ভোটে মোদী বিরোধী মুখ প্রিয়াঙ্কাই
ফের বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে জেরা। মঙ্গলবার সিবিআই দফতর থেকে বেরনোর সময় বেশ বিধ্বস্ত লাগছিল কলকাতার নগরপালকে। দিনের পর দিন টানা জেরা করেই কি কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে ভাঙতে চাইছেন সিবিআই কর্তারা? এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।