সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে দুদিন পর মমতার ধর্না মঞ্চে অভিষেক

595
সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে দুদিন পর মমতার ধর্না মঞ্চে অভিষেক
সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে দুদিন পর মমতার ধর্না মঞ্চে অভিষেক/The News বাংলা

সবাই আছেন শুধু তিনি ছিলেন না। রবিবার থেকে রাজ্যে যা ঘটেছে তা বাংলার সীমা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে দেশের সর্বত্র। সিবিআই বনাম মমতা লড়াইয়ের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। কিন্তু মমতার ধর্ণা মঞ্চে ২ দিন ধরেই দেখা যায় নি দলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এই নিয়েই উঠেছিল প্রশ্ন। চলছিল রাজনৈতিক জল্পনা। শেষ পর্যন্ত আন্দোলনের ২দিন পর মঙ্গলবার বিকালে ধর্না মঞ্চে হাজির ‘ভাইপো’ অভিষেক।

আরও পড়ুনঃ সারদা চিটফাণ্ড মামলায় রাজীবকে জেরা করতে কি কি প্রশ্ন সাজাচ্ছে সিবিআই

২০০৬-তে একটানা ২৬ দিন মেট্রো চ্যানেলে আমরণ অনশনে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন সবসময় তাঁর পাশে ছিলেন ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই রাজনীতির মঞ্চে উত্থান হয় তাঁর। কিন্তু এ বার, কোথায় তিনি? বেমালুম উধাও ছিলেন। আর এই নিয়েই উঠেছিল প্রশ্নের ঝড়। সব জল্পনা থামিয়ে মঙ্গলবার বিকালে মমতার আন্দোলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এসে বসেছেন নেতা নেত্রীদের সঙ্গে পিছনের সারিতে।

আরও পড়ুনঃ সিবিআই জেরা থেকে পালাতে পারবেন না রাজীব কুমার, মমতা বললেন ‘নৈতিক জয়’

রবিবার থেকে সর্বভারতীয় জাতীয় রাজনীতির একেবারে শীর্ষে বাংলা৷ পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকদের যাওয়ার প্রতিবাদে ধর্মতলায় ধর্ণায় বসেছেন মমতা। ছোট বড় সব তৃণমূল নেতাই হাজির দিদির সত্যগ্রহে। শুধু তিনি ছিলেন না। আসছেন একের পর এক কেন্দ্রীয় নেতা। শুধু তাঁর দেখা ছিল না। পিসির ভাইপো কি সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতেই ধর্না মঞ্চ এড়িয়ে যাচ্ছেন। উঠছিল প্রশ্ন।

আরও পড়ুনঃ রাজীব কুমারকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

রবিবার থেকে শুরু মমতার ধর্ণায় ও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একেবারে গরহজির ছিলেন তৃণমূল যুবার সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্ণায় ভাইপো অভিষেকের এই অনুপস্থিতির বিষয়টি প্রথম নজরে আনেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরি৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “আতঙ্কে ভুগছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝতে পারছেন, বিপদ বাড়ছে”। তাই সিবিআই এর বিরুদ্ধে লড়াই থেকে নিজেকে কৌশলে সরিয়ে নিয়েছেন অভিষেক। আপাতত সেই বিতর্কে জল ঢাললেন অভিষেক।

আরও পড়ুনঃ তথ্যপ্রমাণ নষ্টের প্রমাণ পেলে পুলিশ কমিশনারকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি সুপ্রিম কোর্টের

সববিষয়ে দ্বিমত হলেও, অধীর চৌধুরির এই বক্তব্যকে আবার সমর্থন করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “এই বক্তব্যের জন্যই সম্ভবত প্রথমবার প্রকাশ্যে আমি অধীর চৌধুরির প্রশংসা করছি”। রবিবার থেকে একবারও নেত্রীর পাশে দেখা যায়নি তাঁকে। যেখানে ছোট-বড় তৃণমূলের সমস্ত নেতা উপস্থিত রয়েছেন। এমনকী বিরোধী দলের নেতারা এসেছেন বা আসছেন৷ আর এই নিয়েই শুরু হয় জোর রাজনৈতিক চর্চা। শেষমেশ ধর্না মঞ্চে উঠে সব বিতর্ক চাপা দিলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশে সিবিআই অফিসারদের আটক করে বাংলার আইপিএসরা বিপদে

ধর্নায় ‘পিসি’র পাশে ছিলেন না ‘ভাইপো’। কিন্তু, ‘মাসি’র পাশে এবার প্রথম থেকেই রয়েছেন ‘মুন্নি’৷ মমতার বোনের এই মেয়েকে ঘিরেই এবার চর্চা তুঙ্গে রাজনৈতিক মহলে। ২০০৬ এর ধর্না মঞ্চ থেকেই ‘অভিষেক’ হয়েছিল ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ২০১৯ এর ধর্না মঞ্চ থেকে বোনঝি ‘মুন্নি’র উত্থানের শুরু কি না, তা ঘিরেই উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের নিচুতলার কর্মী-সমর্থক মহলেও। তারাও বুঝতে পারছিলেন না, মমতার এতবড় আন্দোলনে অভিষেক নেই কেন? তারাও এবার স্বস্তি পেলেন।

আরও পড়ুনঃ সম্পর্কের খাতিরে চাকরি দুর্নীতি, রাজ্যের দফতরে কর্মীদের মুখরোচক গল্প

এর আগেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ছিলেন না তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন শোনা যায়, হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাকে ঘিরে কোনও বিষয়কে ঘিরেই মমতা-অভিষেকের মন কষাকষি হয়েছিল। তাই বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছিলেন অভিষেক।

আরও পড়ুনঃ ভারত হাতে পাচ্ছে বিজয় মালিয়াকে, ভোটের আগে বড় জয় মোদী সরকারের

এর আগে ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানও ‘বয়কট’ করেছিলেন অভিষেক। তাঁর পছন্দ মতো মন্ত্রিসভা গঠন হয়নি বলেই তিনি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ছিলেন না বলে জল্পনা হয়েছিল তখন। এবারের ধর্না মঞ্চে দুদিন ধরে না আসার কারণ কি? ফলে ধর্না মঞ্চে অভিষেক এলেও, এই নিয়েই চলছে জোর আলোচনা।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন