ফের উত্তরবঙ্গ বনদপ্তরের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের তৎপরতায় উদ্ধার হল একটি পূর্ণবয়স্ক চিতা বাঘের চামড়া। ঘটনায় পাঁচজন চোরাচালানকারিকে আটক করেছে বনদপ্তর। গত সাতদিনের মধ্য পরপর দুটি এধরনের ঘটনায় বড়সড় সাফল্য পেল বনদপ্তর। উদ্ধার হওয়া চিতাবাঘের চামড়াটি প্রায় ১০ ফুট লম্বা।
ধৃত ৫জন অভিযুক্তই শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির ডুয়ার্স অঞ্চলের বাসিন্দা বলে বনদপ্তর সুত্রে জানা গেছে। সেইসঙ্গে আরও অভিযোগ, চিতাবাঘটিকে হত্যা করে তার মাংস খেয়ে তারপর চামড়াটিকে ১২ লক্ষ টাকায় নেপালে পাচারের পরিকল্পনা ছিল ওই চোরাকারবারিদের। কিন্তু পাচারের আগেই বনদপ্তরের উত্তরবঙ্গ স্পেশাল টাস্কফোর্সের বিশেষ অভিযানে উদ্ধার হয় ওই চামড়াটি, সেইসঙ্গে পাচারকারীদের গ্রেপ্তার করে তারা।
আরও পড়তে পারেনঃ ছাত্র ছাত্রীদের আন্দোলন সফল করে শিক্ষক শিল্পী পেলেন বঙ্গরত্ন
বনদপ্তরের উত্তরবঙ্গ স্পেশাল টাস্কফোর্স সুত্রে জানা গেছে, গোপন সুত্রের খবরের ভিত্তিতে রবিবার টাস্কফোর্সের প্রধান সঞ্জয় দত্ত একটি বিশেষ দল করে গরুমারা জঙ্গলের নেপাল সীমান্ত বরাবর একটি অভিযান চালান। সেখানেই অভিযুক্ত পাঁচ চোরাচালানকারিকে একটি ১০ ফুট দৈর্ঘের পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘের চামড়া সহ আটক করে তারা।
অভিযানের বিবরণ দিয়ে সঞ্জয় দত্ত জানান যে, সুত্র মারফত খবর পেয়েই এই চোরাচালানকারিদের সঙ্গে গোপন ভাবে যোগাযোগ করা হয়। তাদের বাগে আনতে একটি নাটকিয় মুহুর্ত তৈরি করে চামড়াটির কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে দর কষাকষি করা হয়। দর কষাকষি করে মোট ১২ লক্ষ টাকায় রফা হয়।
আরও পড়তে পারেনঃ রাজ্যের হাতে টাকা নেই বাজারে ধার, তারপরেও বিধায়কদের ভাতা বাড়ছে
এরপর নির্দিষ্ট জায়গায় ঠিক করা হয়, যেখানে এসে টাকার পরিবর্তে চামড়াটি হস্তান্তর করা কথা চোরাচালানকারিদের। সেইমত টাস্কফোর্সের ৮-১০ জনের দলটি নির্দিষ্ট করা এলাকায় গা ঢাকা দিয়ে থাকে। এরপর সময় মত পাঁচটি বাইক করে চোরাচালানকারিরা বাঘের চামড়া সহ নির্দিষ্ট জায়গায় আসে। তখনই তাদের চারধার থেকে ঘিরে ধরা হয়।
এরপর বামাল সমেত তাদের আটক করা হয়। ঘটনায় তাদের কাছ থেকে একটি স্কুল ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। যেটার মধ্যে ওই চামরাটি হলুদ মাখানো অবস্থায় রাখা ছিল। সঞ্জয়বাবু আরও জানান, চিতাটিকে সম্ভবত গত পাঁচ-সাত দিন আগেই লাটাগুড়ির গরুমারা জঙ্গলেই মারা হয়েছে।
আরও পড়তে পারেনঃ পাহাড়ে মোর্চা বিজেপির সঙ্গেই, গোপন আস্তানা থেকে বার্তা বিমল গুরুংয়ের
চামড়াটিতে এখনও কাচা রক্ত ও মাংস লেগে রয়েছে। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃতরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তারা আরও জানিয়েছে, খুব সম্প্রতিই চিতাবাঘটিকে হত্যা করে তার মাংস গ্রামের মানুষেরা খেয়েছে। এরপর চামড়াটি নেপালে পাচার করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল তারা। তার আগেই তাদের আটক করা হয়।
আরও পড়তে পারেনঃ বিজেপির সমালোচনা করে পাহাড়কে শান্ত থাকার অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর
ধৃতরা হলো, বিকাশ রায়, নাগরকাটার বাসিন্দা। রঞ্জিত মোহন্ত, বাড়ি পাশ্চিম লাটাগুড়ি অঞ্চলে। সঞ্জয় অধিকারি, মোহন মুন্ডা ও কিশানগঞ্জ তামং। তারাও নাগরকাটা, লাটাগুড়ির বাসিন্দা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৮ই জানুয়ারি শিলিগুড়ির নিকট ইন্দো-নেপাল সীমান্ত পানিটাঙ্কি এলাকা থেকে দুটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘের চামড়া সহ দুই চোরাচালানকারিকে আটক করে উত্তরবঙ্গ স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
আরও পড়তে পারেনঃ ব্রিগেড থেকে ফিরেই ভোলবদল, মমতা নয় রাহুলকেই প্রধানমন্ত্রী চাইলেন নেতারা
এরপর সপ্তাহ না ঘুরতে-ঘুরতেই ফের একই ঘটনার পুনারাবৃত্তি হওয়ায় স্বভাবতই চিন্তার ভাঁজ পরেছে বনদপ্তরের কপালে। বনদপ্তরের আশঙ্কা এভাবে যদি বন্যপ্রানী নিধন করা হয়, তাহলে বনজঙ্গলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে অচিরেই।
আরও পড়তে পারেনঃ
শ্রীজাত হেনস্থা ঘটনায় বাংলার বুদ্ধিজীবিদের মুখোশ খুললেন তসলিমা
বাংলায় দুর্গা পুজো বন্ধ করার চক্রান্ত করছে মোদীর বিজেপি, মারাত্মক অভিযোগ মমতার
মোদীর প্রকল্পে আর টাকা দেবেন না মমতা, কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্ক তলানিতে
একদিনে বহিষ্কৃত দুই তৃণমূল সাংসদ, দিদিকে ছেড়ে মোদীর দলে আর কে কে
ভোটের আগে মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে মোদী সরকারের অন্তর্বর্তী বাজেট
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।