কেনিয়ার নাইরোবিতে একটি বিলাসবহুল হোটেলে ভয়ঙ্কর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির একটি অভিজাত হোটেলে ঢুকে পড়ে কয়েকজন বন্দুকধারী। এরপর থেকে শোনা যাচ্ছে বোমা ও এলোপাথাড়ি গুলির শব্দ। হোটেলের পার্কিং লটে বোমার আঘাতে বেশ কিছু গাড়ি দাউদাউ করে জ্বলতে দেখা যাচ্ছে।
হোটেলের ভেতর থেকে একের পর এক বিস্ফোরণের আওয়াজও আসছে। জ্বলছে আগুন। মনে করা হচ্ছে, ভেতরে ঢুকেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে কোন জঙ্গি। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, হোটেলের ভেতরে ও বাইরে গোলাগুলি চলছে। হতাহতের ব্যাপারে এখনও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বহু মানুষের হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ
চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার উপযুক্ত স্পেসএক্স স্টারশিপ এর ছবি প্রকাশ
নতুন বছরের শুরুতেই খারাপ খবর, বড় বড় কোম্পানিতে কর্মী ছাঁটাই
সোমালিয়া ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আল-শাহবাব এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এর আগেই এটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেন, কেনিয়ার সন্ত্রাস তদন্ত বিভাগের প্রধান জর্জ কিনোতি।
হোটেল ঘিরে কেনিয়া সরকারের নিরাপত্তারক্ষীরা পালটা অভিযান শুরু করেছে। সংবাদসংস্থা এপির সংবাদদাতা জানান, ওই হোটেলে থাকা অনেক ব্যক্তি ভেতরে জঙ্গিদের হাতে পণবন্দি হয়ে আছেন। আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যাচ্ছে দূর থেকেই। শোনা যাচ্ছে গুলির লড়াই। বেসরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, এখন পর্যন্ত ৩জন সাধারণ মানুষ ও একজন জঙ্গি মারা গেছেন। তবে এই সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অভিজাত হোটেলটিতে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরাও রয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা চারজন সশস্ত্র ব্যক্তিকে হোটেলে ঢুকতে দেখেছেন। প্রবেশের আগে পার্কিংয়ে থাকা বেশ কিছু গাড়িও বোমা মেরে জ্বালিয়ে দেয় তারা।
আরও পড়ুনঃ
গুগলের ইউটিউবকে টেক্কা দিচ্ছে ফেসবুক ওয়াচ
ফের ভাঙছে হিমবাহ, ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পৃথিবী
তিন বছর আগে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ওয়েস্টগেট নামে একটি শপিং মলে হামলার করেছিল সোমালিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী আল-শাহবাব। হামলায় কানাডার এক কূটনীতিবিদসহ অন্তত ৭১জন নিহত এবং ২০০ জন আহত হন। ইসরায়েলের আংশিক মালিকানাধীন ওয়েস্টগেট নামের ওই শপিং মলে বন্দুকধারীরা অনেক মানুষকে পণবন্দি হিসেবে আটক করে রেখেছিল। পরে গুলি চালিয়ে তাদের অনেককেই হত্যা করা হয়। হতাহতদের মধ্যে ফ্রান্স, ব্রিটেন, কানাডা ও আমেরিকার নাগরিক ছিলেন।
আগেও, সোমালিয়ার অবস্থিত কেনিয়ার একটি সেনা ছাওনিতে হামলা চালিয়ে ১০০র উপর সেনাকে মেরে ফেলে এই আল-শাহবাব জঙ্গিসংগঠনটি। ২০১৫ তে গ্যারিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়ে ১৫০ জনকে মেরে ফেলে এই জঙ্গি গোষ্ঠী আল-শাহবাব। কেনিয়ার আমেরিকান এম্ব্যাসিতে জঙ্গি গোষ্ঠী আল-শাহবাব এর হামলায় প্রায় ২০০ জন মারা যায়। সেইসব ঘটনার পুনারাবৃত্তি হতে চলেছে মঙ্গলবারের হামলার ঘটনায়, বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে এক হিন্দু নারী
ভারতের কৃষকের মেয়ে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ
নিরপাত্তা বাহিনী এখনো হামলা ঠেকানো ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। হোটেলের ভিতর থেকে মুহুর্মুহু বোমা গুলির আওয়াজ আসছে। পণবন্দি হিসেবে যাদের আটক রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছে বলে নিরাপত্তা সূত্র থেকে জানানো হয়েছে।
সোমালিয়ায় কেনিয়ার সেনা উপস্থিতির প্রতিবাদেই এইসব হামলা চালানো হয় বলে আগেই বারবার জানিয়েছে আল-শাহবাব জঙ্গিসংগঠনটি। হামলাকারীদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১১ সাল থেকেই কেনিয়া তাদের দেশে আল শাহবাব গেরিলা জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, হামলাকারীরা গ্রেনেড ছুড়তে থাকে এবং নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে।
অভিজাত হোটেলটির মধ্যে এখনও ঢুকতে পারেনি কেনিয়ান সেনা কম্যান্ডোরা। হোটেলের মধ্যে অনেক মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আল শাহবাব গেরিলা জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে কেনিয়া সেনা কমান্ডোদের গুলির লড়াই চলছে।
আরও পড়ুনঃ
পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি অস্ট্রেলিয়ার
ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসবাদীদের অত্যাচারে দেশ ছাড়ছে মানুষ
‘পেলেই ছিঁড়ে খাবে’, কঠিন লড়াই করে বেঁচে ইরাকের নারীরা
নিজের দেশেই হামলা চালাতে ইরাককে অনুমতি দিলেন প্রেসিডেন্ট আসাদ
অবিশ্বাস্য জয়, ২৯৯ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসনে জিতে ফের ক্ষমতায় শেখ হাসিনা
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।