The News বাংলা, দিল্লিঃ কথায় আছে ‘কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ’। আর এখানে তো সবার সর্বনাশ আর কারও কারও পৌষ মাস। দিল্লির ভয়ংকর বায়ুদূষণ জন্ম দিচ্ছে নতুন নতুন ব্যবসার।
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: ডাক্তারের প্রোফাইল হ্যাক করে মহিলাদের ন্যুড ভিডিও পাঠাল ইঞ্জিনিয়ার
কথায় বলে, সংকট থেকেই নতুন সম্ভাবনার জন্ম হয়। ভারতের রাজধানী দিল্লির ভয়ংকর বায়ুদূষণ জন্ম দিচ্ছে নতুন নতুন উদ্ভাবনী ক্ষমতার। দেশের বিদ্যুৎ-সংকট যেভাবে জন্ম দিয়েছিল জেনারেটর-ইনভার্টার শিল্পের। ঠিক সেভাবেই বায়ুদূষণ মোকাবিলায় এগিয়ে আসছে একাধিক সংস্থা। কোনটি স্টার্টআপ, কোনটি আবার প্রতিষ্ঠিত সংস্থা। ফলে দেশে তৈরি হচ্ছে এক নতুন বাজার।
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: কলকাতা থেকে পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের টাকা যাচ্ছে জঙ্গিদের হাতে
রাস্তাঘাটের দূষিত বাতাস রুখতে শুধু নাকঢাকা মুখোশ প্রথম চালু হয়েছিল ট্রাফিক পুলিশদের স্বাস্থ্য রক্ষার তাগিদে। ক্রমেই সেই মুখোশ সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। স্রেফ একটুকরো কাপড় দিয়ে নাক-মুখ-ঢাকা মুখোশ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে বিজ্ঞানসম্মতভাবে তৈরি দূষণ প্রতিরোধী মুখোশ।
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: দিল্লীর নির্ভয়া ধর্ষণ কাণ্ডের পরেও নিরাপত্তাহীন কলকাতার বাস
প্রতিদিন ১০ টাকার ‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো’ মুখোশ থেকে শুরু করে ভারতে এখন দুই হাজার টাকার ‘ফিল্টার্ড এয়ার মাস্ক’-এর বাজার বাড়ছে। নাম-মুখ-ঢাকা মুখোশে যাদের অনীহা, তাদের জন্য বাজারজাত হয়েছে ‘ন্যাসাল ফিল্টার’। দিল্লি আইআইটির কয়েকজন প্রাক্তন ছাত্র ও তাঁদের অধ্যাপকেরা মিলেমিশে শুরু করেছেন এটি।
মাত্র ২ সেন্টিমিটার মাপের এই ফিল্টার নাকের ফুটোয় ঢুকিয়ে দিয়ে স্বাভাবিক নিশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া যায়। ক্ষুদ্র এই ফিল্টার বাতাসের ধূলিকণা আটকে দেয়। গত বছর ন্যাসাল ফিল্টারের উদ্ভাবকেরা রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন। সাধারণ মুখোশের মতো এই ফিল্টারও ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া যায়।
আরও পড়ুনঃ Exclusive: ভারতবাসীকে ‘জ্ঞান’ দেওয়া প্রিয়াঙ্কা নিজে কি করলেন
ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের(আইএমএ) অনুমোদনপ্রাপ্ত এই সব মুখোশ ও ধূলিকণারোধক ফিল্টার ওষুধের দোকান থেকে দেদার বিক্রি হচ্ছে। পাওয়া যাচ্ছে অনলাইনেও।
আরও পড়ুনঃ জনগণকে ‘গাধা’ বানিয়ে ‘শিক্ষাগুরু নেহেরু’র যোগ্য ছাত্র সব রাজনীতিবিদ
ঘরের বাইরের দূষণের মতো বাড়ির অভ্যন্তরের দূষণরোধের বিষয়টিও প্রাধান্য পেতে শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত সংস্থা অভ্যন্তরীণ ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ বিপণন যেমন শুরু করেছে, তেমনই শুরু হয়েছে প্রাকৃতিক প্রতিরোধের খোঁজ। পরিবেশবিদেরা ঘরের ভেতর বিভিন্ন ধরনের ‘ইনডোর প্ল্যান্ট’ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন, যেগুলো বায়ুদূষণ প্রতিরোধক।
বায়ুদূষণ ঠেকাতে কাঠকয়লার উপযোগিতা প্রভূত। ইতিমধ্যেই ছোট ছোট ব্যাগে ‘প্রক্রিয়াজাত কাঠকয়লা’ ঘরে রাখার চল শুরু হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত কাঠকয়লার এই ব্যাগ বাতাসে থাকা ধূলিকনা আলাদা করে ফেলে। বেঙ্গালুরুর একটি স্টার্টআপ বের করেছে একটি যন্ত্র, যা বাতাসের ধূলিকণা, নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার ডি-অক্সাইড পৃথক করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় ২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ, নাসিকে দাম না পেয়ে আত্মহত্যা
এই সংস্থা ঘরের বাইরের বাতাসও নির্মল করার যন্ত্র বের করেছে। গত অক্টোবর মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘হাফ ম্যারাথন’ অনুষ্ঠানে রাস্তায় এ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সংস্থাটির দাবি, এই যন্ত্রের সাহায্যে দূষণ কমে প্রায় ৩৩ শতাংশ।
এই শিল্পের বাজার বছরে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার। বায়ুদূষণের মোকাবিলায় যে শিল্প ক্রমশ মাথাচাড়া দিচ্ছে, তার বাজারের বিস্তৃতি এখনও অজানা। শিল্প সংস্থা ‘ফিকি’ বা ‘সিআইআই’ এখনেও এই বাজারের বিস্তৃতি ও তার সম্ভাবনা নির্ধারিত করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের জীবনের দাম এখন কুকুর ছাগলের চেয়েও কম
ফিকির প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অঞ্জন রায়ের মতে, ‘এর একটা কারণ, খুবই ছোট আকারে এই সব সম্ভাবনা মাথাচাড়া দিচ্ছে। তা ছাড়া জেনারেটর ও ইনভার্টার যেমন সারা বছর কাজে লাগে, দূষণ মোকাবিলার বিষয়টি তেমন নয়। তাই বাজারের মাপও এখনো নির্দিষ্ট করা যায়নি’।
আরও পড়ুনঃ মানব জীবনে সঙ্গীতের অসংখ্য উপকারিতা
বায়ুদূষণের মোকাবিলা ধীরে ধীরে হলেও, নিশ্চিতভাবে জন্ম দিচ্ছে ছোট ছোট উদ্ভাবনী শিল্প ও কর্মসংস্থানের। কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে তাই দূষণই দেখাচ্ছে অন্য এক আলো।