The News বাংলা, সোনারপুরঃ মর্মান্তিক ঘটনা সোনারপুরে। দুই ছোট্ট ছেলে মেয়েকে খেলায় ব্যস্ত রেখে আত্মহত্যা করল বাবা মা। বাবা মাকে মাথার উপর ঝুলতে দেখে হতবাক শিশুরা।
মেঝোতে খেলায় মত্ত ভাইবোন৷ মাথার উপর ঝুলন্ত বাবা ও মা৷ আচমকা উপরে তাকিয়ে বাবা ও মাকে এই অবস্থায় দেখে চিৎকার ৪ বছরের ছেলের৷ তার চিৎকার শুনে দৌড়ে আসে পাশের বাড়ির কাকিমা৷ দরজায় তালা লাগানো৷ জানলা খুলে ভদ্রমহিলা শিশু দুটির বাবা মা দুজনকেই দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায়৷ শিউরে ওঠেন তিনি। মর্মান্তিক ঘটনায় শোকাচ্ছন্ন গোটা এলাকা।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহারে ঢোকার আগেই নাইন এমএম পিস্তল সহ গ্রেফতার ছয়
প্রতিবেশীদের ডেকে দরজার তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয় তাপস নাইয়া ও প্রিয়াঙ্কা নাইয়াকে৷ তবে, সোনারপুর গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদেরকে মৄত বলে ঘোষনা করেন চিকিৎসকরা৷ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৄত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে দুজনেই আত্মঘাতী হয়েছেন৷ কারণ বন্ধ ঘরে শিশু দুটি ছাড়া আর কেউ ছিল না। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷
সোনারপুর থানার বৈষ্ণবপাড়া এলাকার বাসিন্দা তাপস ও প্রিয়াঙ্কার ২০১৩ সালে বিয়ে হয়৷ আগে থেকেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল৷ তাদের ৪ বছরের একটি ছেলে ও ২ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে৷ কয়েকদিন আগেই ঘটা করে স্বামীর জন্মদিন পালন করেছিলেন প্রিয়াঙ্কা৷
আরও পড়ুনঃ কলকাতা হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে মুখ রক্ষা বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র
প্রতিবেশীদের সুত্রে জানা গিয়েছে, দুজনের মধ্যে নানান কারণে মান অভিমান হত৷ প্রায়ই ঝামেলা হত৷ ঘটনার আগে ঘর থেকে দুজনের ঝগড়ার শব্দ পান প্রতিবেশীরা৷
তবে তার জেরে এই ঘটনা ঘটাবে দুজন, তা বুঝতে পারেন নি কেউই৷ প্রতিবেশীরাই তাদের ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ আপাতত প্রতিবেশীদের কাছেই রয়েছেন তাদের সন্তানরা৷ পাশের বাড়ির কাকীমার কোল থেকে নামতেই চাইছে না ছোট আরাধ্যা৷ আয়ুষ নিজের মনেই বিড়বিড় করে কি সব বকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা৷
আরও পড়ুনঃ ‘বাংলায় রথ যাত্রা হবেই’ মমতাকে হুঁশিয়ারি অমিত শাহের
যারা নিজেদের সন্তানের কথা ভাবে না, তারা কি মানুষ? একসঙ্গে এক দড়িতে ঝুলে আত্মহত্যা করা গেল আর একসঙ্গে সংসার করা গেল না? একসঙ্গে এই সুন্দর পৃথিবীতে বাঁচা গেল না? বাচ্চাগুলোর মুখ চেয়েও কি বাঁচা যেত না? অনেক প্রশ্ন প্রতিবেশিদের। কিন্তু সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কেউই নেই।
বাচ্চা দুটোর কি হবে, সেটাই এখন ভাবাচ্ছে স্থানীয় মানুষদের। আপাতত শিশু দুটির বাবা মার শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। শিশু দুটির ট্রমা কাটাতে চিকিৎসা করাতে হতে পারে আশঙ্কা প্রতিবেশীদের।