“পয়সা খায় বিল্ডিং বিভাগ আর থানা; বদনাম হয় কাউন্সিলরের”। রাজ্যে পুরভোটের আগে বিস্ফোরক মন্তব্য কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। বিরোধীদের অভিযোগ, কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ বিল্ডিং নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। তবে এবার সুকৌশলে তিনি নিজের কাউন্সিলরকে বাঁচিয়ে; পুলিশ ও বিল্ডিং বিভাগের ঘাড়ে সরাসরি টাকা খাওয়ার অভিযোগ তুললেন। আর এই নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা।
তাঁর আমলেই কলকাতা পুরসভায় শুরু হয়েছে ‘টক-টু-মেয়র’ অনুষ্ঠান। প্রতি শনিবার এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে; সরাসরি শহরবাসীদের অভাব-অভিযোগ শোনেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করেন। টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে; কলকাতার সমস্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন মেয়র। সেই অনুষ্ঠানে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা; তাঁকে অবৈধ নির্মাণের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেছিলেন। আর তারপরই মেয়রের বিস্ফোরক দাবি; “টাকা খায় পুলিশ আর বিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট; আর বদনাম হয় কাউন্সিলরের”। এভাবে নিজেদের কাউন্সিলরকে ক্লিনচিট দিয়ে; পুলিশের ঘাড়ে দোষ চাপালেন মেয়র।
এদিন মেয়র বলেন, “কাউন্সিলররা প্রশাসনের অংশ নন; ফলে কোনও কাউন্সিলরের কাছে পাঠানো হয় না যে, তাঁর এলাকায় কোনও আইনি আর কোন বেআইনি বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। যদি বেআইনিভাবে প্ল্যান অনুমোদন করা হয়, তাহলে সেটা প্রশাসন করে; আমাদের বিল্ডিং বিভাগ করে। এখন যদি সেটা বেআইনি হয়, তাহলে ধরে নেব; বিল্ডিং বিভাগের গাফিলতি কিংবা আন্ডার টেবিল! যদি অভিযোগ জানানোর পর থানা ব্যবস্থা না নেয়; তাহলে সেটাও তাই”। তাঁর আরও বক্তব্য, “অকারণে কাউন্সিলদের উপর বদনাম এসে পড়ে; কাউন্সিলররা তো জানেনই না, কোনটা আইনি আর কোনও বেআইনি”।
এরপর ফোন করেছিলেন যিনি, তাঁকে মেয়র বলেন; “ঠিক আছে আমরা দেখছি; আমি অ্যাকশন নিয়ে ফোনে জানিয়ে দেব; কাজ এখন বন্ধ আছে; আপনাকে জানিয়ে দেব”। তবে বিরোধীদের অভিযোগ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে অবৈধ বিল্ডিং নির্মাণের অভিযোগ ওঠে; তবে এবার অত্যন্ত সুকৌশলে মেয়র নিজেই কাউন্সিলরকে বাঁচিয়ে পুলিশ ও বিল্ডিং বিভাগের ঘাড়ে সরাসরি টাকা খাওয়ার অভিযোগ তুলে দিলেন। কিন্তু স্থানীয় কাউন্সিলররা সরাসরি এই অবৈধ চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকেন বলেই অভিযোগ।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান; “আমার যে অভিযোগগুলি করেছি; সেই অভিযোগগুলি স্বীকার করে নিলেন মেয়র। তবে, তৃণমূল কাউন্সিলরদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন; বেআইনি নির্মাণে তৃণমূল কাউন্সিলররাও কাটমানি খান”।