ফের ভাঙছে হিমবাহ, ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পৃথিবী

1349
Image Source: Google Image

নিজস্ব সংবাদদাতা : ভয়ঙ্কর ভাবে ফের ভাঙার মুখে পশ্চিম আন্টার্কটিকার পিন আয়ল্যান্ড গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ। উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৩০০ বর্গ কিমি জুড়ে থাকা হিমবাহ ভাঙতে চলেছে।

উপগ্রহ থেকে নেওয়া ২০১৮ র সেপ্টেম্বরের শেষে এবং ২০১৮ র অক্টোবরের শুরুতে, পাশাপাশি দুটো ছবি দেখেই চিন্তায় বিজ্ঞানীরা। গত বছরেও এই পশ্চিম আন্টটার্কটিকার পিন আয়ল্যান্ডের ২৬৭ বর্গ কিমির হিমশৈল ছিঁড়ে বেরিয়ে এসেছিল।

সেবারও সেপ্টেম্বর ২০১৭ র ছবি ও অক্টোবর ২০১৭ র ছবি দেখেই বোঝা গিয়েছিল যে হিমবাহ বিছিন্ন হতে চলেছে। আর এক মাসের মধ্যেই সেটা সত্যি প্রমাণিত করে ২৬৭ বর্গকিমির হিমশৈল পিন আয়ল্যান্ডের গ্লেসিয়ার ছিঁড়ে বেড়িয়ে এসেছিল। এবছরও তার লক্ষণ স্পষ্ট বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

অক্টোবর ২০১৮ র ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে ইতিমধ্যেই ১৯ মাইল বা ৩০ কিলোমিটারের এক চির বা ফাটল তৈরী হয়েছে, আর মাত্র ৬ মাইল বা ১০ কিমি চির বাড়লেই হিমবাহ থেকে হিমশৈলের বিরাট চাঁই ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসবে। সেটা এই বছরের মধ্যেই ঘটবে বলে আশঙ্কায় বিজ্ঞানীরা।

২০১৭ তে যে বিশালাকার হিমশৈল ছিঁড়ে বেড়িয়ে এসেছিল তা ছিল ২৬৭ বর্গ কিমি আয়তনের, যা ছিল ম্যানহাটানের থেকেও বড়ো মাপের। এবারে যে হিমশৈল ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসার মুখে তার আয়তন গতবারের থেকেও বেশি, প্রায় ৩০০ বর্গ কিলোমিটার। সমুদ্রের জলস্তর যেভাবে বাড়ছে তাতে চিন্তায় পরিবেশবিদরা।

হিমবাহের নীচে সমুদ্রের উষ্ণ জলের স্পর্শে আন্টার্কটিকার হিমবাহ থেকে হিমশৈল বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। পিন আয়ল্যান্ড হিমবাহ, আন্টার্কটিকার সবথেকে দ্রুত গতিতে ভেসে চলা হিমবাহ, যার থেকে প্রতি বছর ৪০.৮ বিলিয়ন মেট্রিক টন বরফ গলছে এবং প্রতি ৮ বছরে ১ মিলিমিটার বা .০৩ ইঞ্চি করে সমুদ্রের জলের তল বেড়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানী ও পিরিবেশবিদদের মতে যেটা খুবই সাংঘাতিক !

২০০২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত যে পরিমাণ হিমবাহ পিন আইল্যান্ড গ্লেসিয়ার থেকে গলেছে তা বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের মতে অত্যন্ত দুশ্চিন্তাজনক। আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের জন্যই সমুদ্রের জল গরম হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যার জন্যই দ্রুত গলছে হিমবাহ।

বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী যদি আন্টারকটিকার সমস্ত হিমবাহের সব বরফ গলে যায় তাহলে সমুদ্রের জলতল ১.৭ ফুট বেড়ে যাবে, সেটা হলে ডুবে যাবে পুরো পৃথিবী। শেষের সে দিন কি খুব তাড়াতাড়ি আসছে? যার শুরুটা হয়েছে পশ্চিম আন্টার্কটিকার পিন আয়ল্যান্ড গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ দিয়ে। প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন