পুরী থেকে পর্যটকদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেন পাঠাচ্ছে বাংলা। ঘূর্ণিঝড় ফনির জন্য ইতিমধ্যেই ওড়িশা প্রশাসন পুরীতে পর্যটকদের সব হোটেল বুকিং ক্যান্সেল করার নির্দেশ জারি করেছে। সব পর্যটকদের বাড়ি ফিরে যাবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর কে না জানে, পুরীতে বেশি থাকে বাঙালি পর্যটক। তাদের ফেরাতেই দক্ষিন পূর্ব রেলের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।
আগামীকালের পর থেকেই ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা ঘূর্ণিঝড় ফনি। ২০০ কিমি গতিবেগ থাকার কারনেই বিপদের আশঙ্কা করছে ওড়িশা প্রশাসন। তাই আগামী তিন চার দিন সমুদ্র সৈকত বন্ধ রাখার পাশাপাশি হোটেল বুকিং ক্যান্সেল করে পর্যটকদের বাড়ি ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মন্দারমনি ও দিঘাতে নিষিদ্ধ হল পর্যটকদের সমুদ্র সৈকতে যাওয়া
তাই রাতারাতি বাঙালি পর্যটকদের বাড়ি ফেরানোর জন্য একটি বিশেষ ট্রেন পাঠাতে উদ্যোগী হল রাজ্য প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দক্ষিন পূর্ব রেলের সঙ্গে কথা বলে পুরী থেকে পর্যটকদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেন পাঠানোর ব্যবস্থা করে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার।
ভারতীয় কোস্ট গার্ড থেকেও সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীরা যাতে সমুদ্রে প্রবেশ না করে সেই আহ্বান জানিয়েছেন কোস্ট গার্ড। ইতিমধ্যে ফনি মাঝ সমুদ্রে নিজের ক্ষমতা বাড়িয়ে বিশাল শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বুধবার সকালের মধ্যেই সব মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে যাঁরা মাছ ধরতে যান, তাঁদের উদ্দেশে সতর্কবার্তায় দেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীরা যেন গভীর সমুদ্রে, বিশেষ করে উত্তর পশ্চিম দিকে না যান মাছ ধরতে। আর যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের আজ ১ মে সকালের মধ্যে ফেরত আসতে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ভোট প্রচারে উত্তপ্ত জগদ্দল, গুলি আগুন বোমাবাজি, তুমুল সংঘর্ষ
বাংলাতেও ঘূর্ণিঝড় ফনির জন্য পর্যটকদের সি-বিচে যাওয়ার নিষেধ করল প্রশাসন। আগামী তিনদিন সি-বিচের উপরে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। ফণী নিয়ে আবাহাওয়া দপ্তরের সাবধান বার্তা আনুসারে এই ঘোষণা করেছে পুলিশ প্রশাসন।
দিঘা, মন্দারমণি সহ বাংলার সব সি বিচেই আগামী তিনদিন পর্যটকরা যেতে পারবেন না। নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন থেকে সব সমুদ্রে বিচে এই নির্দেশ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আগামী তিনদিন কাউকেই বিচে যেতে দেওয়া হবে না।
পশ্চিমবঙ্গের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ফনি। আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু করে শনিবার পর্যন্ত ভারী ঝড় বৃষ্টি হবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। শুধু ঝড় বৃষ্টি নয়, বজ্র বিদ্যুৎ সহ ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে। মৎস্যজীবীদের উদ্দেশে সতর্কতার পাশাপাশি, সব বন্দরে সতর্কতা জারী হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গা বাঁচাতেই বিজেপিতে গিয়েছে, মুকুলকে গদ্দার বলে তীব্র কটাক্ষ মমতার
২ মে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার একই পরিস্থিতি থাকবে ও হাওড়ার বেগ বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘন্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিমি।
ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাব রাজ্যেও পড়বে বলেই জানান হয়েছে। ঝড় বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকেই বজ্র বিদ্যুতের সঙ্গে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও কোনও জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ ভয়ঙ্কর মাওবাদী হামলা, কোবরা বাহিনীর ১৫ কম্যান্ডো সহ ১৬ জনের মৃত্যু
মঙ্গলবার সকালে চেন্নাইয়ের দক্ষিণ পূর্বের ৪৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল ফনি এবং আস্তে আস্তে এটি উত্তর-পশ্চিমে স্থানান্তরিত হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে উত্তর পূর্ব দিকে দ্রুত গতিতে ওড়িশা উপকূলের এগিয়ে আসছে ফনি। দক্ষিণবঙ্গে বিশেষ করে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আগামী তিন দিন ঝড় বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের কোনও কোনও জায়গায় ঝড় বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার থেকে শুরু করে শুক্রবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ফনি তীব্রতর ঝড়ের আকার ধারন করবে।