শুধু মোদীর হেলিকপ্টারে কি তল্লাশি চালানো যাবে না? উঠছে প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে তল্লাশি চালিয়ে সাসপেন্ড হলেন জেনারেল অবজার্ভার। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার সম্বলপুরে। সম্বলপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চপারে তল্লাশি চালিয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিক, এমনটাই অভিযোগ ওঠে। কমিশন সূত্রের খবর, এসপিজি মোতায়েন থাকলে তল্লাশি চালানো যায় না। তবে ঠিক কী কারণে এসপিজিকে তল্লাশির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানায়নি কমিশন।
আরও পড়ুনঃ কংগ্রেস বাদে অন্য বোতাম টিপলেই খাবেন ইলেকট্রিক শক, ভোটারদের বোঝাচ্ছেন নেতা
নির্বাচনী প্রচারে মঙ্গলবার সম্বলপুরে গিয়েছিলেন মোদী। সেখানেই আচমকা তাঁর কপ্টারে তল্লাশি চালান ১৯৯৬ ব্যাচের কর্নাটক ক্যাডারের আইএএস অফিসার মহম্মদ মহসিন। যার জেরে মোদীর রওনা হতে ১৫ মিনিট দেরিও হয়ে যায়। বুধবার মহসিনকে সাসপেন্ড করার নির্দেশে কমিশন বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ (এসপিজি) এবং এই বাহিনীর নিরাপত্তা পাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের যে নির্দেশ রয়েছে, সেই অনুযায়ী কাজ করেননি মহসিন।
আরও পড়ুনঃ ইসলামপুরে ছাপ্পা ভোট রুখলেন মহম্মদ সেলিম, রাগে গাড়িতে ভাংচুর দুষ্কৃতীদের
সেই কারণেই সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। কমিশনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, এসপিজি নিরাপত্তা যাঁরা পান, তাঁদের এই ধরনের তল্লাশি থেকে রক্ষাকবচ রয়েছে। প্রসঙ্গত, গাঁধী পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বেও রয়েছে এই বাহিনী। কমিশন সূত্রের খবর, এসপিজি মোতায়েন থাকলে তল্লাশি চালানো যায় না। তবে ঠিক কী কারণে এসপিজিকে তল্লাশির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানায়নি কমিশন।
আরও পড়ুনঃ চোপড়া বাস স্টান্ডে বাইক বাহিনীর হাতে আক্রান্ত ভোটাররা
১৯৯৬ ব্যাচের কর্ণাটক ক্যাডারের আইএএস অফিসার মহম্মদ মহসিন জেনারেল অবজার্ভারের দায়িত্বে ছিলেন। মঙ্গলবার ওড়িশার সম্বলপুরে তাঁরই নির্দেশে তল্লাশি চালানো হয় প্রধানমন্ত্রীর চপারে। নির্বাচন কমিশনের স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ বা এসপিজি সংক্রান্ত নির্দেশিকা লঙ্ঘন করায়, তাঁকে সাসপেন্ড করা হল বলে কমিশন সূত্রে খবর।
আরও পড়ুনঃ পুরুলিয়ায় আবার বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার
অভিযোগ, ওড়িশার সম্বলপুরে হেলিকপ্টারে আচমকা তল্লাশির কারণে প্রায় ১৫ মিনিট আটকে থাকতে হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তবে মঙ্গলবার শুধু প্রধানমন্ত্রীই নয়, রউরকেল্লায় ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক এবং সম্বলপুরেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কপ্টারেও একইভাবে তল্লাশি চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঝাঁটা মেরে এলাকা থেকে তাড়ানোর ফতেয়া তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রীর
দিন কয়েক আগে কর্নাটকের চিত্রদুর্গে মোদীর সভায় তাঁর হেলিকপ্টার থেকে নামানো একটি কালো বাক্স ঘিরে বিতর্ক বাধে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, তাতে এসপিজি-র নিরাপত্তার সরঞ্জাম ছিল। যদিও কংগ্রেস দাবি তুলেছে, বাক্সে কী ছিল, তদন্ত করে জানাক নির্বাচন কমিশন। এক দিকে যখন মোদীর কপ্টারে তল্লাশি চালিয়ে সাসপেন্ড হচ্ছেন অফিসার, তখন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর কপ্টারে একই ধরনের তল্লাশি চলেছে।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় দ্বিতীয় দফার ভোটেও সব বুথে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী, ফের ঝামেলার আশঙ্কা
একটি ওড়িয়া টিভি চ্যানেলে দেখা যায়, ধীর-স্থির হয়ে নিজের হেলিকপ্টারে বসে রয়েছেন নবীন। বিজেডি নেতা তখন সদ্য নেমেছেন রৌরকেলার হেলিপ্যাডে। মুখ্যমন্ত্রীর ব্রিফকেস খুলে অফিসারেরা উল্টেপাল্টে দেখছিলেন ভাঁজ করা পাজামা-পাঞ্জাবি, তোয়ালে। কপ্টারের আইসবক্স খুলেও নেড়েচেড়ে দেখেন এক অফিসার।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের হয়ে প্রচার করে ভারতের কালো তালিকায় বাংলাদেশী অভিনেতা ফিরদৌস
একটি কথাও বলেননি নবীন। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, নেতারা ভোটারদের প্রভাবিত করতে প্রচারে নগদ টাকা বা কোনও উপঢৌকন নিয়ে যাচ্ছেন কি না, চাইলে সেটাই তল্লাশি করে দেখা হতে পারে। নবীনের কপ্টার থেকে ‘আপত্তিকর’ কিছু মেলেনি। কিন্তু বিজেপির পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কপ্টারে কমিশনের কর্তারা যখন তল্লাশি চালাতে গিয়েছেন, তখন প্রবল চেঁচামেচি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের প্রচার করায় ফেরদৌসকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের
‘ভাইরাল’ হয়েছে ধর্মেন্দ্র প্রধানের ভিডিয়োটি। সম্বলপুরে তাঁর হেলিকপ্টার নামতেই পুলিশ নিয়ে তল্লাশি করতে এগিয়ে যান কমিশনের এক আধিকারিক। দেখা যায়, তাতে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে হাততালি দিয়ে চিৎকার করছেন ধর্মেন্দ্র। কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসার তাঁকে ওই কর্তার পরিচয়পত্র দেখান। তাতেও শান্ত করা যায়নি তেলমন্ত্রীকে।
আরও পড়ুনঃ ফিরদৌসের পর বিপাকে পড়তে চলেছেন বাংলাদেশের আরেক অভিনেতা
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর চপারে তল্লাশি নিয়ে। শুধু মোদীর হেলিকপ্টারে কি তল্লাশি চালানো যাবে না? উঠছে প্রশ্ন। এরপর কি বড় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও কি ব্যবস্থা নিতে পারবে নির্বাচন কমিশন কর্তারা? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুনঃ ভোটের আবেগেই তৃণমূলের হয়ে প্রচার, দেশে ফিরে ক্ষমা চাইলেন ফিরদৌস
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।