The News বাংলা, ইয়েমেন: চরম খাদ্য সংকট ইয়েমেনে। গৃহযুদ্ধ শেষ হলেও খাদ্য নিয়ে করুণ অবস্থা মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে। খাবারের সংকটে দিশেহারা মানুষ। খাবার না পেয়ে কংকালসার চেহারা সব শিশুর। খিদের জ্বালায় শিশুরা কাঁদতেও পারছে না বলে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক শিশু সংগঠন ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’।
গৃহযুদ্ধ শেষ হলেও খাদ্য সংকটে জর্জরিত ইয়েমেন। আন্তর্জাতিক শিশু সংগঠন ‘সেভ দ্য চিল্ড্রেন’ জানিয়েছে, প্রায় ৫০-৫২ লাখ শিশু দুর্ভিক্ষে ভুগছে। আরও জানা গেছে, এ বছর অপুষ্টিতে ৪০ হাজার শিশু মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা।
আরও পড়ুনঃ মহাকাশ লড়াইয়েও ভারতের কাছে হারছে পাকিস্তান
যুদ্ধের পর ইয়েমেনে মুদ্রার মূল্য পতনে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য প্রায় ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের মতে, যুদ্ধের সময়ে ইয়েমেনি রিয়াল প্রায় ১৮০ শতাংশ মূল্য হারিয়েছে। চরম সংকটে গোটা দেশ।
এমনকি চলতি মাসের প্রথম দিকে দেশটির ইতিহাসে সর্বনিম্ন দরপতনে পরেছে ইয়েমেনি রিয়াল। যা দেশটির জনগণকে আরো বেশি বিপদে ফেলবে। দেশটির শিক্ষক-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা কমপক্ষে দুই বছর ধরে কোনো বেতন পাচ্ছেন না। ফলে শিশুদের খাবারের যোগান দিতে পারছে না বহু পরিবার।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে আলোড়ন ফেলে চুমু খেতে রাজি সোফিয়া
সেভ দ্য চিলড্রেনের দায়িত্বে থাকা হেলে থোরিং শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই যুদ্ধ ইয়েমেনের পুরো একটা প্রজন্মকে মেরে ফেলতে পারে। কারণ দেশটির শিশুরা বোমা থেকে শুরু করে ক্ষুধা, তৃষ্ণা, নানা রোগ সহ বহুমুখী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশটির লাখ লাখ শিশু জানে না পরের বেলার খাবার পাওয়া যাবে কিনা। সম্প্রতি উত্তর ইয়েমেনের একটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে তিনি জানান, এখানকার শিশুরা এতই দুর্বল যে, তারা কাঁদতে পর্যন্ত পারছে না। ক্ষুধা তাদের পুরো শরীরকে নিস্তেজ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ফের ভাঙছে হিমবাহ, ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পৃথিবী
এদিকে, ইয়েমেনের মূল বন্দর হোদাইদায় এখনো যুদ্ধ চলছে। ফলে বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে সাহায্য ও পণ্য পাঠানো বন্ধ রয়েছে। মূল বন্দরটি অবরুদ্ধ থাকায় ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জনগণ। বাইরে থেকে খাবার পাঠানোতেও রয়েছে অনেক সমস্যা। ফলে তিলে তিলে মরতে হচ্ছে ইয়েমেনিদের।
বন্দর দিয়ে খাদ্য সরবরাহ না করলে দুর্ভিক্ষ এবং কলেরার মতো মহামারী রোগ বন্ধ করা যাবে না বলে শঙ্কিত শিশু সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির তথ্য বলছে, গত বছর দেশটিতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিল। রাষ্ট্র সংঘ কড়া নজর রেখেছে ইয়েমেনের উপর। তবে এই মুহূর্তে সবাই তাকিয়ে পরিস্থিতির উন্নতির উপর।