The News বাংলা, কলকাতা: বাংলার পর এবার বাংলাদেশ। পরিচালক অনীক দত্তের পর এবার চলচ্চিত্র উৎসবে প্রচার নিয়ে মুখ খুললেন বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরিন। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সর্বত্র মমতার কাট আউট লাগানো নিয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রুচি নিয়েই কটাক্ষ করলেন তসলিমা।
সম্প্রতি কলকাতায় শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, কিছুদিন আগেই যে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই অনুষ্ঠানকে ঘিরেই যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে থেকেই সমগ্র নন্দন চত্বর জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স, ব্যানারে ছেয়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যার যৌক্তিকতা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন পরিচালক অনীক দত্ত। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করলেও কটাক্ষের সুরে তিনি বলেছেন, যাঁর ছবিতে নন্দন ছেয়ে আছে, এই অনুষ্ঠান যেন তাঁর একার!
আরও পড়ুনঃ ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ তুমি কার ?
আর এবার এই বিষয়ে বলতে গিয়ে বেশকিছু বিতর্কিত মন্তব্য করলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন৷ তসলিমা তাঁর ফেসবুক একাউন্টে এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা রুচিহীন, সে ব্যাপারে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
এই ব্যপারে তুলনা করতে বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যকেও তিনি টেনে আনেন। তাঁর মতে, বুদ্ধদেব বোকা ও বুদ্ধু হলেও রুচিবোধে মমতার থেকে কয়েক কদম এগিয়ে ছিলেন। যদিও তাঁকে কলকাতা ছাড়া করার জন্য বুদ্ধদেবকে ‘শয়তান’ বলে বিঁধতেও ছাড়েননি তসলিমা৷
আরও পড়ুন: ‘আন্তর্জাতিক’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কাউন্সিলরের ‘বিজ্ঞাপন’, বিক্ষোভে মুখ পুড়ল বাংলার
তিনি আরও উল্লেখ করেন, একটি চলচ্চিত্র উৎসবের প্রাঙ্গণ জুড়ে মমতার ছবি ছেয়ে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর ‘রুচিহীনতার পরিচয়’। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, কলকাতায় অনুষ্ঠিত রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী সবই এখন মমতাময় হয়ে উঠেছে, যেন উৎসবের নামে পালিত হচ্ছে মমতা জয়ন্তী।
যদিও তসলিমা এর দায় অনেকটাই চাপিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রগতিশীল মানুষের ওপর। তাঁর বক্তব্য, ‘প্রগতিশীল’ ট্যাগ লাগিয়ে তারা একটা ঝঞ্ঝাট বিহীন জীবনের আশায়। অনেক কিছু পাওয়ার আশায় এই সকল অনাসৃষ্টি দেখেও চুপ থাকেন। আর লোভের জন্যে এই চুপ করে থাকার ফলেই পশ্চিমবঙ্গের চেহারা চরিত্র প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে।
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলার বুদ্ধিজীবীদেরই তুলধুনা করলেন তসলিমা, বলে মনে করছেন অনেকেই। পরিচালক অনীক দত্তের মন্তব্যের পর এমনিতেই রাজ্য সরগরম। তারপর আবার তসলিমা সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দিলেন বলেই মনে করছেন বাংলার বুদ্ধিজীবী মহল। এখন দেখার কথা এই বিতর্ক কোথায় গিয়ে থামে।