বিজেপির লোকসভা প্রার্থী হচ্ছেন কিনা জানাবেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও শোভন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বুধবার দুপুরেই সাংবাদিকদের ডেকেছেন বৈশাখী। তাঁদের রাজনৈতিক মত ও পথ পরিস্কার করবেন বলেই জানা গেছে। কি ঘোষণা করবেন তিনি, বাংলার রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে।
আগেই মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। এবার কাউন্সিলর হিসেবে কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে গড়হাজির প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। যা নিয়ে উঠেছে জল্পনা তুঙ্গে। তাহলে কি শোভন চট্টোপাধ্যায় বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সত্যিই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সবমহলে।
আরও পড়ুনঃ মুনমুন সেনকে দাঁড় করিয়ে আসানসোলে কি বাবুল সুপ্রিয়কে ওয়াকওভার দিলেন মমতা
এদিকে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দেওয়ার অভিযোগ উঠল একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। রবিবার রাত দুটো থেকে সোমবার রাত দফায় দফায় নাটক হল রায়চকের এক হোটেলে। বৈশাখীর অভিযোগ, ‘আমাকে ও শোভনবাবুকে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য গালিগালাজ দিতে থাকে দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে জানিয়ে লাভ হয়নি।
আরও পড়ুনঃ লাস্যময়ী নুসরত ও সুন্দরী মিমিই এবার মমতার চমক
এরপরেই তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানান বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ধর্ষণের ও তাঁর বন্ধু তথা প্রাক্তন মেয়র ও প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ হিংসা ছড়াতে অনবরত প্ররোচনা দিচ্ছেন বলে ওই কলেজ শিক্ষিকা দাবি করেন।
আরও পড়ুনঃ মিছিল মিটিং করতে মমতার পুলিশ প্রশাসন আর আটকাতে পারবে না বিজেপিকে
বৈশাখীর ইঙ্গিত, শোভন ও তিনি এবার লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন, এমন রটনাই এই হেনস্থার কারণ। বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে বৈশাখী অভিযোগ জানিয়েছেন। অনুব্রতর বক্তব্যের একটি অডিয়ো ক্লিপিংও কমিশনে পাঠিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ প্রচুর চমক, রাজ্যের ৪২টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের ৪২জন প্রার্থী কে কে
মিল্লি আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সময়ে কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুটার সদস্য থাকলেও ২০১৪-তে তিনি যোগ দেন তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপায়। সেখানে তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তিও ছিল অনেক বেশি। ওয়েবকুপায় অবস্থানের জেরে তৃণমূলের পদাধিকারী মহলে তাঁর পরিচিতি বাড়তে থাকে। যোগাযোগ গড়ে ওঠে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক পদস্থ আমলা এবং মন্ত্রীর সঙ্গে।
এরপরেই মমতার নির্দেশে ভেঙে দেওয়া হয় তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েরকুপার রাজ্য কমিটি। বাদ দেওয়া হয় তাঁর ঘনিষ্ঠ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠের এই পদ থেকে অপসারণ খুব একটা ভাল ভাবে নেননি শোভন চট্টোপাধ্যায়। এরপর মেয়র ও মন্ত্রিত্ব পদ থেকে শোভনের পদত্যাগ। আর এখন বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা।
আরও পড়ুনঃ পুলিশে ভরসা নেই, একমাস আগেই বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী
গত সোমবার রাতে বিজেপি এবং সঙ্ঘের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈশাখীর বৈঠক হয়। আরএসএস এবং বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সেই বৈঠকে আলোচনা এত ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মোড় নিয়েছিল যে, মঙ্গলবার সূচি ভেঙে কলকাতায় চলে আসেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা অরবিন্দ মেনন। দক্ষিণ কলকাতায় কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং অরবিন্দ মেননের সঙ্গে বৈশাখীর ‘কনফিডেনশিয়াল’ বৈঠক হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা যায়।
আরও পড়ুনঃ সমস্ত তর্জন গর্জন সার, তৃণমূলের বাতিল সাংসদকে দলে নিয়ে মুখ রক্ষা মুকুলের
লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করতে চেয়ে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুকুল রায় ফোন করেছিলেন। বিজেপি সূত্রের খবর, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বারের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করার বিষয়ে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে সোমবার রাতের বৈঠকে। আলোচনা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতেই মঙ্গলবার কলকাতায় চলে আসেন অরবিন্দ মেনন। তার পরে কৈলাস এবং অরবিন্দ একসঙ্গে বৈশাখীর মুখোমুখি হন।
আরও পড়ুনঃ বাংলার কোন লোকসভা আসনে কবে ভোট দেখে নিন
বিজেপির একটি অংশ দাবি করছে, কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। শোভন এবং বৈশাখী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে তাঁদের দাবি। তবে এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কোনও রকম মন্তব্য এখনও করেননি। কয়েক দিনের মধ্যেই দিল্লিতে গিয়ে দলের সদর দফতর থেকে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেবেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু বৈশাখী নিজে সে সব জল্পনা নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন।
এই দুই বৈঠকের কোনওটি নিয়েই বিজেপি বা সঙ্ঘের কেউ মুখ খোলেননি। আর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ধোঁয়াশা তৈরি করেন দুটি বৈঠক প্রসঙ্গেই। সোমবার রাতে সঙ্ঘ এবং বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হয়নি— এ কথা এক বারও বলেননি মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষা।
আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে পাকিস্তানে ফের একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে
কিন্তু বিজেপি-তে তাঁর যোগদান প্রায় পাকা এবং তিনি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছেন বলে যে জল্পনা শোনা যাচ্ছে, তার কি কোনও সত্যতা রয়েছে? এই প্রশ্নেরও স্পষ্ট উত্তর কলেজ শিক্ষিকা দেননি। বলেন, ‘কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আগামীতে সবাই জানতে পারবেন’। সেই সিদ্ধান্ত জানাতেই কি বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের ডাকলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়? জল্পনা তুঙ্গে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।