ফনীর বিধ্বংসী ধাক্কা; এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি পুরী। তবুও উৎসবের সময় আবার পুরান মেজাজে পুরী; সেজে উঠছে জগন্নাথ। আর কয়েকদিন পরেই শুরু হবে রথযাত্রার অনুষ্ঠান। তার আগে সোমবার; জগনাথের স্নানযাত্রায় মেতে উঠেছে পুরী।
জ্যৈষ্ঠের পূর্ণিমা তিথিতে; স্বয়ং মনুর যজ্ঞে প্রসন্ন হয়ে জগন্নাথের মর্তে আবির্ভাব ঘটে। মনুর নির্দেশেই এই তিথিকেই জগন্নাথের জন্মতিথি হিসাবে পালন করা হয়। সেই উপলক্ষ্যেই এই বিশেষ স্নানযাত্রা পালিত হয়ে আসছে।
আরও পড়ুনঃ হাসপাতাল আন্দোলনের মাঝেই জন্ম নিল আর এক ছোট্ট আন্দোলন
জগন্নাথের ভক্তদের কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। ভক্তদের বিশ্বাস; সকল পাপ থেকে মুক্তির রাস্তা স্নানযাত্রার দিন জগন্নাথদেব দর্শন। এই জন্য স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে পুরীর মন্দির দর্শনে যান বহু ভক্ত। স্কন্দপুরাণম্ অনুযায়ী; পুরীর মন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার পরেই প্রথম বার রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।
মহাস্নানের আগে অবধি রত্নবেদীতেই থাকেন জগন্নাথ। স্নানযাত্রার আগের দিন জগন্নাথ; বলভদ্র; সুভদ্রা; সুদর্শন চক্র ও মদনমোহনের বিগ্রহের একটি বিশাল শোভাযাত্রা; মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বার করে স্নানবেদীতে এনে রাখা হয়। ভক্তেরা এই সময় জগন্নাথকে দর্শন করতে আসেন।
আরও পড়ুনঃ জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি তুললেই পরিবহকে দেখতে যাবেন মমতা
স্নানযাত্রা উপলক্ষ্যে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নান করানো হয়। আরতী ও সূর্যপুজোর পর তিনজনকে মহাস্নানের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মন্দিরের দক্ষিণের কুয়োর জলে এই স্নান হয়। ১০৮ কলসি জলে স্নান করেন জগন্নাথ। এই মহাস্নানে ব্যবহার হয় সোনার কলসি।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী; এই স্নানের পর প্রচণ্ড জ্বরে পরেন জগন্নাথ। এরপর তাঁকে রাজবৈদ্যের চিকিৎসাধীনে গোপনে রাখা হয়। অসুস্থতার এই পর্যায়টি ‘অনসর’ নামে পরিচিত। এই সময় ভক্তেরা দেবতার দর্শন পান না।
আরও পড়ুনঃ সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তায় নোডাল অফিসার ও কোলাপসিবেল গেট
তাঁদের দর্শনের জন্য বিগ্রহের পরিবর্তে মূল মন্দিরে থাকে তিনটি পটচিত্র। ভক্তেরা বিশ্বাস করেন; অনসর পর্যায়ে জগন্নাথ অলরনাথ রূপে অবস্থান করেন। কথিত আছে; রাজবৈদ্যের আয়ুর্বৈদিক ‘পাঁচন’ খেয়ে এক পক্ষকালের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। সুস্থ হয়ে উঠে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রাজবেশে রথযাত্রা করে মাসির বাড়ি যান।