জীবনের শেষ ভোটটা এবার দিতে চান শিবপূজন

470
জীবনের শেষ ভোটটা এবার দিতে চান শিবপূজন/The News বাংলা
জীবনের শেষ ভোটটা এবার দিতে চান শিবপূজন/The News বাংলা

পরিধানে ধপধপে সাদা ধুতি-কুর্তা, বলিরেখাময় মুখ আর বুদ্ধিদীপ্ত চাহনি – সাধারণ দৃষ্টিতে শিবপূজন মিশ্রকে একবাক্যে একজন সাধারণ বৃদ্ধ মানুষ বলা যেতে পারে। কিন্তু ১০৭ বছর বয়সেও তিনি ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ২০১৯-এর লোকসভায় ভোট দিতে এক পায়ে খাড়া। ভারতের সব থেকে বয়স্ক মানুষদের অন্যতম শ্রী শিবপূজন মিশ্র।

আরও পড়ুনঃ মোদীকে পুনরায় নির্বাচিত না করলে দেশ সংকটে পড়বে, মন্তব্য হেমা মালিনীর

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, নেহেরু যুগ এবং তার পরবর্তীকালে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের আদর্শগত পরিবর্তনের নীরব সাক্ষী থেকেছেন ভারতের সবচেয়ে বয়স্ক এই ভোটার।

আরও পড়ুনঃ সেনার খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা তেজ বাহাদুর বারাণসীতে প্রার্থী মোদীর বিরুদ্ধে

২০১৯ লোকসভা ভোট প্রসঙ্গে শিবপূজন বলেন ‘এটাই হয়তো আমার শেষ ভোট দেওয়ার সুযোগ, কিন্তু দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে তুলে ধরতে আমি ভোট দিতে যাবো’।

আরও পড়ুনঃ অধীর গড়ে ভোটমঞ্চে প্রচারের আলোয় আর্য সমাজের প্রচারক শ্রী কৃষ্ণ মহারাজ

৩০ বছর বয়সে, ভারতছাড়ো আন্দোলনের সময়, শিবপূজন খাদিকে আঁকড়ে ধরেন। স্বাধীনতার পরে ১৯৫২ সালে যে সাধারণ নির্বাচনে নেহেরুর নেতৃত্বে স্বাধীন ভারতের যে সরকার গঠিত হয়েছিল, সেই নির্বাচনে প্রথম তিনি তাঁর ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিলেন শিবপূজন।

আরও পড়ুনঃ নরেন্দ্র মোদীর কবিতায় গান গাইলেন লতা মঙ্গেশকর

সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত তিনি ১৪ জন প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন এবং ২০০৯ পর্যন্ত পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা প্রতিটি ভোটে তিনি ভোট দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ বিজেপি ১২৫ এর বেশি আসন পাবে না, চন্দ্রবাবুর সভায় হিসাব দিলেন মমতা

শিবপূজন এর পৃথিবী আজ তাঁর একটি ঘরের মধ্যেই বন্দি, কিন্তু একদিন তিনিই সাক্ষী থেকেছেন ভারতীয় রাজনীতির নানান উথাল-পাথাল ঘটনার, সে স্বাধীনতার আগে ভারত ছাড়ো আন্দোলনই হোক, বা স্বাধীনোত্তর কালে জরুরী অবস্থা।

আরও পড়ুনঃ ইস্কন রাজনৈতিক নিরপেক্ষ সংস্থা, নাম জড়িয়ে প্রচার উদ্দেশ্যমূলক, বিবৃতি ইস্কনের

তাঁর ভোটার কার্ড অনুযায়ী শিবপূজনের বয়স ১০৭, যদিও তৎকালীন যুক্ত প্রদেশের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার শংসাপত্র অনুসারে তাঁর জন্ম তারিখ ২৩শে মে, ১৯১৪, অর্থাৎ তাঁর বয়স ১০৫ বছর। তিনি তৎকালীন বেনারসের সনাতন ধর্ম বিদ্যালয় থেকে হাই স্কুল পাশ করেন এবং পরে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে হিন্দি ও গণিতশাস্ত্রে এম.এ. পাশ করেন।

আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনীর গতিবিধির খবর আসবে ভারতী ঘোষের কাছে, ফের বাহিনী বিতর্ক

গাজিপুরের ডিএভি ইন্টার কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ শিবপূজন ১৯৭৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তাঁর আদি বাড়ি গাজিপুর জেলার ভয়েরপুর দেবকালী গ্রামে। বর্তমানে তিনি তাঁর কনিষ্ঠ সন্তান বিজয় শংকর মিশ্র ও বিজয়ের স্ত্রী সুমনের সংগে বারাণসীর দুর্গাকুন্ড এলাকায় কৈওয়াল্যাধাম কলোনিতে বাস করেন।

আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মমতা ও রাজনাথের স্বরাষ্ট্র দফতরের চরম সংঘাত

খাদি ও গান্ধীটুপিই যাঁর খুব প্রিয় পোশাক, সেই শিবপূজনকে আপাতদৃষ্টিতে কর্মক্ষম বলে মনে হলেও তাঁর স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেয়েছে। তাঁর পুত্র বিজয় জানান, ‘বয়সের কারণে বাবা গত নয় বছর তাঁর গ্রামে যেতে পারেন নি। ফলে ২০১৪-র লোকসভা আর ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে ভোটও দিতে পারেন নি’। বিজয়ের কথায়, ‘বাবুজি মাঝে মাঝেই স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন, কিন্তু রাজনীতির বিষয়ে তিনি কখনও তাঁর মতামত কাউকে জানতে দেন না’।

আরও পড়ুনঃ আমেঠীর মানুষের প্রশ্নের জবাব এড়াতেই কেরালা থেকে লড়ছেন রাহুল, কটাক্ষ অমিতের

শিবপূজন এর কথা, ‘ভগবানের ইচ্ছেয় আমি এবার লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবো, কারণ দেশের প্রতি আমাদের সকলের একটা দায়বদ্ধতা আছে’। ১০৭ বছরের যুবকের এহেন দায়বদ্ধতা সত্যিই কুর্নীশযোগ্য।

আরও পড়ুনঃ পাক জঙ্গিদের সাহায্যকারি দেশের বিশ্বাসঘাতকদের খুঁজতে ৮ সদ্যসের গোয়েন্দা দল

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন