কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবনে সিবিআই হানার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ধর্না মঞ্চের সামনেই রাস্তায় বসে পড়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করল অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। কার্যত মমতার ধর্না নিয়ে ব্যস্ত কলকাতা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়েই বৌবাজার থেকে মিছিল করে কয়েকশো চিট ফান্ড এজেন্ট ও আমানতকারি মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের দিকে এগোতে থাকেন। পরে পুলিশের বাধা পেয়ে ধর্ণা মঞ্চের কাছেই বসে পরেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ ধর্মতলার ধর্ণা মঞ্চ থেকে মোদীর বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটের ‘সারদা ইস্যু’
ধর্ণা হলো, প্রত্যাহারও হলো। কিন্তু মমতা বনাম মোদীর ‘সংবিধান যুদ্ধে’ চিট ফাণ্ড ক্ষতিগ্রস্থদের প্রায় কোনো উল্লেখই হলো না। অথচ যাঁরা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির আসল ক্ষতিগ্রস্থ, সেই চিট ফান্ড এজেন্ট ও আমানতকারিরা আরেকটু হলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার সামনে আরেক ধরনের ‘কেলেঙ্কারি’ প্রায় করে ফেলেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ সারদা চিটফাণ্ড মামলায় রাজীবকে জেরা করতে কি কি প্রশ্ন সাজাচ্ছে সিবিআই
কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবনে সিবিআই হানার বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্ণার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ধর্ণা মঞ্চের সামনেই রাস্তায় বসে পড়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করল অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুনঃ উঠল বিজেপি বিরোধী সত্যাগ্রহ ধর্ণা, ধর্মতলার ধর্ণা প্রধানমন্ত্রী করতে পারবে মমতাকে
জানা যায় মমতার ধর্না নিয়ে ব্যস্ত কলকাতা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়েই বৌবাজার থেকে মিছিল করে কয়েকশো চিট ফান্ড এজেন্ট ও আমানতকারি মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের দিকে এগোতে থাকেন। অনেক পরে ব্যাপারটা বুঝতে পেরে চমকে যায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত নিউমার্কেট থানা থেকে একটু দূরেই পুলিশ ওই মিছিলের পথ আটকে দেয়। পরে ধর্না মঞ্চে কর্তব্যরত বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।
আরও পড়ুনঃ সিবিআই জেরা থেকে পালাতে পারবেন না রাজীব কুমার, মমতা বললেন ‘নৈতিক জয়’
সারদা কান্ডের তদন্তে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে রবিবার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধর্ণায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ধর্ণার তৃতীয় দিনে বিক্ষোভ-মিছিল করার প্রস্তুতি নেন চিট ফান্ড আন্দোলনকারিরা। অত্যন্ত গোপনে তাঁরা বৌবাজার মোড়ে জমায়েত হন। জানা যায়, এই মিছিল নিয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে আগাম কোনও খবরই ছিল না। পুলিশকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ধর্ণা মঞ্চের নিরাপত্তা নিয়ে।
আরও পড়ুনঃ সারদা কাণ্ডে পুলিশ কমিশনারকে সিবিআই জেরা কবে, তা নিয়েও লড়াই তুঙ্গে
অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রূপম চৌধুরী বলেন, “পুলিশ সাধারণত অনুমতি দেয় না, এদিনও আমাদের মিছিলের কোনও অনুমতি ছিল না। আমরা বৌবাজারে ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলাম। পুলিশকে ধোঁকা দিতেই এই পন্থা নিয়েছি। সিগন্যাল সবুজ হতেই মিছিল করে ধর্মতলার দিকে এগোতে থাকি। ওয়েলিংটন মোড় অবধি পুলিশের কোনও বাধা পাই নি। পুলিশ আমাদের নিউমার্কেট থানার কাছে আটকে দেয়। আমরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকি। প্রায় ঘণ্টাখানেক চলে আমাদের কর্মসূচী”।
আরও পড়ুনঃ রাজীব কুমারকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট
চিট ফান্ডের এজেন্ট ও আমানতকারিরা রাস্তায় বসে পড়ায় এস এন ব্যানার্জী রোডে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে জনা ১৫ পুলিশকর্মী অবস্থান সামলানোর পক্ষে যথেষ্ট ছিলেন না। এই অবস্থানের খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর ধর্ণা মঞ্চে কর্তব্যরত পুলিশকর্তাদের কাছে।
আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশে সিবিআই অফিসারদের আটক করে বাংলার আইপিএসরা বিপদে
সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশাল পুলিশ বাহিনী ছোটে অবস্থান তুলতে। এদিকে যখন ধর্ণা মঞ্চে অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, ওদিকে তখন এসএনব্যানার্জী রোডে চিটফান্ডের অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের দাবীতে বিক্ষোভ চলছে সেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই। আর কিছুটা এগুতে পারলেই মমতার ধর্ণা মঞ্চের কাছাকাছি পৌঁছে যেতেন অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এর চিট ফাণ্ড প্রতারিতরা।