The News বাংলা, কলকাতাঃ ভারতের পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন শেষ হয়েছে। এটাই, আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল বলে গণ্য করা হচ্ছে। ফাইনাল আগামী এপ্রিল-মে মাসে। তাই ভারতের মানুষও তাকিয়ে আছেন এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে।
বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা ও মিজোরাম রাজ্যে। এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে বিজেপি এখন মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে ক্ষমতায় আছে। কংগ্রেস আছে মিজোরামে এবং তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি (টিআরএস) তেলেঙ্গানা রাজ্যে ক্ষমতায় আছে।
১১ ডিসেম্বর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ থাকায় এই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের কোনো আগাম বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফল ঘোষিত হয়নি। শেষ দফার নির্বাচনের পর ভারতের বিভিন্ন সংবাদসংস্থা, সংবাদমাধ্যম এবং সংবাদপত্র বুথফেরত সমীক্ষা প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: ‘বাংলায় রথ যাত্রা হবেই’ মমতাকে হুঁশিয়ারি অমিত শাহের
এতে যে আভাস পাওয়া গেছে, তাতে স্বস্তি নেই কেন্দ্রের শাসক দলের। কোনো রাজ্যেই ভারতীয় জনতা পার্টির(বিজেপি) নিশ্চিত জয়ের ইঙ্গিত মেলেনি। কংগ্রেসকেই এগিয়ে রাখা হয়েছে।
শেষ দফার নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর দেশজুড়ে বুথফেরত সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে, রাজস্থানে বিজেপি ক্ষমতা হারাবে। আর মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আর তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস-টিডিপি (তেলেগু দেশম পার্টি) জোটকে হারিয়ে দিয়ে জিততে পারে টিআরএস। অন্যদিকে, মিজোরামেও ঠাঁই পাবে না বিজেপি। সেখানে আঞ্চলিক দলের জোট হারিয়ে দিতে পারে কংগ্রেসকেও।
এক নজরে বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষার আভাসঃ
মধ্যপ্রদেশ: এই পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। আসনসংখ্যা ২৩০। এই রাজ্যে এখন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। বুথফেরত সমীক্ষায় ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই ইঙ্গিত দিয়েছে, ১০২ থেকে ১২০ আসনে জিততে পারে বিজেপি, কংগ্রেস জিততে পারে ১০৪ থেকে ১২২টি আসন। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ১২৬ এবং কংগ্রেস ৮৯।
আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে মুখ রক্ষা বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র
রিপাবলিক টিভি-জেকেবি বলেছে, বিজেপির ভাগ্যে জুটতে পারে ১০৮ থেকে ১২৮ আসন। আর কংগ্রেস পেতে পারে ৯৫ থেকে ১১৫। নিউজ নেশন বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ১০৮ থেকে ১১২টি আর কংগ্রেস পেতে পারে ১০৫ থেকে ১০৯টি আসন। আর ইন্ডিয়া নিউজ-এমপি নেটা বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ১০৬ আর কংগ্রেস পেতে পারে ১১২টি আসন।
রাজস্থান: এই রাজ্যের আসনসংখ্যা ২০০। ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই ইঙ্গিত দিয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ৫৫ থেকে ৭২টি আসন আর কংগ্রেস পেতে পারে ১১৯ থেকে ১৪১টি আসন। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৮৫, কংগ্রেস ১০৫টি।
আরও পড়ুন: জনগণকে ‘গাধা’ বানিয়ে ‘শিক্ষাগুরু নেহেরু’র যোগ্য ছাত্র সব রাজনীতিবিদ
রিপাবলিক টিভি-জেকেবি বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৮৩ থেকে ১০৩। কংগ্রেস ৮১ থেকে ১০১। আর নিউজ নেশন বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৮৯ থেকে ৯৩ এবং কংগ্রেস পেতে পারে ৯৯ থেকে ১০৩টি আসন।
ছত্তিশগড়: আসনসংখ্যা ৯০। বর্তমান ক্ষমতায় বিজেপি। ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই আভাস দিয়েছে, বিজেপি পেতে পারে ২১ থেকে ৩০। কংগ্রেস ৫৫ থেকে ৬৫। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, বিজেপি ৪৬, কংগ্রেস ৩৫। ইন্ডিয়া টিভি বলেছে, বিজেপি ৪২ থেকে ৫০, কংগ্রেস ৩২ থেকে ৩৮।
নিউজ নেশন বলেছে, বিজেপি ৩৮ থেকে ৪২, কংগ্রেস ৪০ থেকে ৪৪। আর রিপাবলিক টিভি-সি-ভোটার বলেছে, বিজেপি পেতে পারে ৩৫ থেকে ৪০, কংগ্রেস ৪০ থেকে ৫০টি আসন।
তেলেঙ্গানা: অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে গঠিত হওয়া তেলেঙ্গানা রাজ্যে রয়েছে ১১৯টি আসন। ইন্ডিয়া টুডে-এএমআই বলেছে, টিআরএস পেতে পারে ৭৯ থেকে ৯১, কংগ্রেস-টিডিপি পেতে পারে ২১ থেকে ৩৩। বিজেপি পেতে পারে ১ থেকে ৩টি আসন। টাইমস নাউ-সিএনএক্স বলেছে, টিআরএস ৩৬, কংগ্রেস-টিডিপি ৩৭ এবং বিজেপি ৭টি আসন পেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ রাহুলের ‘রাফায়েল’ অ্যাটাকের জবাবে মোদীর হাতে ‘মাইকেল’
রিপাবলিক টিভি-জেকেবি বলেছে, টিআরএস পেতে পারে ৫০ থেকে ৬৫, কংগ্রেস-টিডিপি ৩৮ থেকে ৫২, বিজেপি ৪ থেকে ৭টি আসন। নিউজএক্স-নেটা ইঙ্গিত দিয়েছে, টিআরএস ৫৭, কংগ্রেস-টিডিপি ৪৬ এবং বিজেপি পেতে পারে ৬টি আসন।
মিজোরাম: উত্তর–পূর্ব ভারতের পাহাড়ি রাজ্য মিজোরাম। আসনসংখ্যা ৪০। এখানে এখন ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। এই রাজ্যে ভারতের জাতীয় দল গুলির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে আঞ্চলিক দল। এই রাজ্যের নির্বাচন নিয়ে বুথফেরত সমীক্ষা করেছে রিপাবলিক টিভি-সি-ভোটার। তাদের সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, আঞ্চলিক দলের জোট এমএনএফ পেতে পারে ১৬ থেকে ২০টি আসন। অন্যদিকে কংগ্রেস পেতে পারে ১৪ থেকে ১৮টি আসন।
আরও পড়ুনঃ কৃষক র্যালিকে ঢাল করেই মোদী বিরোধী মঞ্চ গঠনের মরিয়া চেষ্টা বিরোধীদের
এই রাজ্যে অবশ্য মুখোমুখি লড়াই হয়েছে কংগ্রেসের সঙ্গে আঞ্চলিক দলের জোটের। তাই এই রাজ্যে কংগ্রেস হারাতে পারে ক্ষমতা। যদিও কংগ্রেসের দাবি তারাই জিততে চলেছে। এখন কার সমীক্ষা মেলে সেটাই দেখা যাবে আগামী ১১ ডিসেম্বরে। মিলে গেলে লোকসভা ভোটের আগে যথেষ্ট চিন্তার মধ্যে রাখবে কেন্দ্রের শাসক দলকে।