গল্প হলেও সত্যি। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার কাছে; কাটমানি ফেরত চাইলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। নিজের দলের নেতাদেরই দুর্নীতিবাজ বলেছেন; দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে করেছেন নেতারা; খেয়েছেন কাটমানি; দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী। তারপর থেকেই শুরু হয়; নেতাদের কাটমানি বিপদ।
এবার সেই বিপদে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। ভোটে হারের কারণ খুঁজতে ও রাজ্য জুড়ে দলের নেতাদের সচেতন করতে; গত সোমবার নজরুল মঞ্চে সভা ডাকেন। সেখানে নিজের দলের নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধেই; মুখ খোলেন তৃণমূল নেত্রী। নেতাদের কাটমানি খাওয়ার জন্যই দল হেরেছে; পরিষ্কার জানিয়ে দেন মমতা।
মমতার এই ঘোষণার পরে; মঙ্গলবার থেকেই কাটমানি ফেরত নিতে; বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল নেতার বাড়িতে হাজির সাধারণ মানুষ। এখানেই শেষ নয়; কাটমানি খাবার অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন; শাসক দলের তিন নেতা। এবার মমতার রাজ্য সরকারের কাছে কাটমানি খেয়ে দুর্নীতির জন্য; টাকা ফেরত চাইল কেন্দ্রীয় সরকার।
একশ দিনের কাজে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ; হুগলি জেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ জেলা প্রশাসনের। কেন্দ্রীয় গ্ৰামোন্নয়ন দপ্তর থেকে গত ২২-২৪শে জানুয়ারিতে; হুগলী জেলার কয়েকটি পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজের সমীক্ষা হয়।
চারটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতে; কাজে বিপুল পরিমাণ আর্থিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এরপরই রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের কাছে টাকা ফেরত চায়; কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। হুগলির পোলবা দাদপুর ব্লকের রাজহাট, সাটিথান, ধনিয়াখালীর বেলমুরি পঞ্চায়েত এবং বলাগড়ের সোমরা গ্রাম পঞ্চায়েতে; মোট তিন কোটি আট লক্ষ টাকার অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও ও প্রকল্প আধিকারিককে; টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। দোষীদের চিহ্নিত করে; তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত স্তরে একশ দিনের কাজ নির্মাণ সহায়করা দেখাশোনা করেন। তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে।
এব্যপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন উত্তর পাওয়া না গেলেও; হুগলি জেলাপরিষদের সভাধিপতি মেহেবুব রহমান বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্যাঁচে ফেলতে এই সমীক্ষা করেছে। টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক এ্যকাউন্টে ঢুকেছে। কোনও দুর্নীতি হয়নি”। তবে টাকা ফেরত পেতে অনড় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।