পাকিস্তানের বালুচিস্তানে বাস থেকে নামিয়ে ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করল মুখোশধারী বন্দুকবাজরা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, যে দলটি হামলা চালিয়েছে, তারা পাক সেনার পোশাক পরে ছিল। ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ইমেলে বিবৃতি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী বালোচ গোষ্ঠীদের সশস্ত্র বাহিনীর জোট।
আরও পড়ুনঃ ফিরদৌসের পর গাজী নূরকে বাংলাদেশ ফেরত পাঠাল ভারত সরকার
পাকিস্তানের বালুচিস্তানের প্রদেশের একটি রাস্তায় বাস থেকে নামিয়ে অন্তত ১৪ যাত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকধারীরা। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের ওরমারা এলাকার মাকরান উপকূলীয় রাস্তায় ঘটনাটি ঘটেছে। হতাহতদের দেহ পরীক্ষার সময় পাকিস্তানের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মুসা বলেন, তারা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়েছে। বেশিরভাগেরই মাথার পিছনে গুলি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পয়সা দিয়ে আনা হয় সেলিব্রিটিদের, বিদেশি অভিনেতা প্রসঙ্গে বেফাঁস কল্যাণ
আঞ্চলিক স্বরাষ্ট্র সচিব হায়দার আলী এএফপি নিউজ এজেন্সিকে জানান, হামলা চালানোর আগে হামলাকারীরা আধা সামরিক বাহিনীর পোশাক পরেছিল এবং গুলি বর্ষণের আগে যাত্রীদের বাস থেকে নামতে বাধ্য করা হয়। বেছে বেছে ১৬ জনকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যার মধ্যে পাক সেনা কর্মীরাও ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের হয়ে প্রচার করে ভারতের কালো তালিকায় বাংলাদেশী অভিনেতা ফিরদৌস
পাকিস্তানের সংবাদসংস্থা ডন জানিয়েছে, সেনা পোশাক পরা প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন অজ্ঞাত বন্দুকধারীর একটি দল করাচী থেকে গওয়াদরগামী পাঁচ থেকে ছয়টি বাস থামায়। বুজি টপ এলাকায় বন্দুকধারীরা একটি বাস থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে। তারপর ১৬ জন যাত্রীকে বাস থেকে নামিয়ে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে দুই যাত্রী কোনোরকমে রক্ষা পেয়ে পালিয়ে গিয়ে নিকটবর্তী আধাসামরিক বাহিনীর চেকপোস্টে খবর দেন।
আরও পড়ুনঃ নিজেদের অফিসে সহকর্মীদের হত্যার খবর প্রকাশ করে পুলিৎজার পুরস্কার
বাসে যাত্রীরা করাচী থেকে মাকরান উপকূলীয় মহাসড়ক ধরে বন্দর নগরী গাওয়াদারে যাচ্ছিলেন। গাওয়াদার জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আসিফ শাওয়ানি জানান, এটি একটি নির্জন জায়গা। এটি ওরমারার নিকটতম শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার এবং গাওয়াদার থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
আরও পড়ুনঃ ইচ্ছে থাকলে সহজেই পরিবার নিয়ে আপনিও যেতে পারেন মহাকাশ ভ্রমণে
স্থানীয় কর্মকর্তারা এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও এর সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেননি। তখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিচয়ও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এদের মধ্যে পাক নেভির অফিসার আছে বলে জানা গেছে। ২০১৫ সালেও বেলুচিস্তানের মাসটুং এলাকায় একই ধরনের একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় সশস্ত্র ব্যক্তিরা করাচিগামী দুটি বাসের প্রায় ২৪ জন যাত্রীকে অপহরণ করে নিকটবর্তী পার্বত্য এলাকায় নিয়ে অন্তত ১৯ জনকে গুলি করে হত্যা করেছিল।
আরও পড়ুনঃ ন্যাটো সহযোগীদের সমান মর্যাদা পাবে ভারত, সেনার হাতে আসবে আধুনিক অস্ত্র
বৃহস্পতিবার ভোরে পাকিস্তানের করাচি থেকে বালুচিস্তানের গাওয়াদারে দিকে যাচ্ছিল যাত্রীবোঝাই বাসটি। মাকরান কোস্টাল হাইওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময় ওরমারা শহরের কাছে বাসটিকে থামায় মুখোশধারী জঙ্গিরা। তাদের পরনে ছিল পাক সেনার পোশাক। বাসটিকে থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে এনে গুলি করে তারা।
আরও পড়ুনঃ ভোট বাজারে ফের খবরের শীর্ষে অনিল আম্বানি ও ফ্রান্সের রাফাল চুক্তি
বালোচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সশস্ত্র সংগঠন ‘বালোচ রাজি আজোই সঙ্গার’ তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বেছে বেছে পাক সেনা এবং পাক উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের আমরা হত্যা করেছি। পরিচয়পত্র দেখে নিশ্চিত হওয়ার পরেই হত্যা করা হয়েছে’।
আরও পড়ুনঃ মোদীকে ভোট দিতে চাকুরী ছেড়ে ভারতে এলেন এই প্রবাসী ভারতীয়
পাক স্বরাষ্ট্রসচিব হায়দর আলি সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল প্রায় ২০ জন। ওরা প্যারামিলিটারি ফ্রন্টিয়ার কোরের-এর পোশাক পরেছিল। মৃতেরা সবাই পাক নাগরিক। এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছি, মৃতদের মধ্যে এক জন পাক সেনা এবং এক জন পাক উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্য’।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের প্রচার করায় ফেরদৌসকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের
বালুচিস্তানের গাওয়াদার শহরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ‘বুলেটের আঘাতেই সকলের মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাথায় পিছনে গুলি করা হয়েছে’। পাক সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বন্দুকধারী হামলাবাজদের ধরতে তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও হামলার পরই তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায় বলে জানিয়েছে পাক সরকার। বিবৃতি দিয়ে ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।