ভারতের একমাত্র এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার আইএনএস বিক্রমাদিত্যতে আগুন লেগে যাওয়ার ফলে মৃত্যু হল নৌ-সেনার এক অফিসারের। কর্নাটকের কারোয়ারের একটি বন্দরে ঢোকার মুখেই আগুন লেগে যায় জাহাজটিতে। নৌ-সেনার পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, “এই এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের কয়েকটি অংশে আগুন লেগে যাওয়ার পর অত্যন্ত সাহসিকতা নিয়ে আগুনের সঙ্গে বুক চিতিয়ে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট কম্যান্ডার ডি এস চৌহান”।
ভারতীয় নৌ বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিক্রমাদিত্যে আগুন লেগে যাওয়ার পর লেফটেন্যান্ট কম্যান্ডার ডি এস চৌহান নিজেই দায়িত্ব নিয়ে সেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তাঁর চেষ্টাতেই নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। কিন্তু আগুনের ধোঁয়াতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কম্যান্ডার চৌহান। শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাঁকে।
আরও পড়ুনঃ ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফেনি, বাংলায় প্রবল ঝড় বৃষ্টির আশঙ্কা
আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে খানিকক্ষণের মধ্যেই। কিন্তু আগুনের ভয়াবহ ধোঁয়া এবং গ্যাসের ফলে ওই অফিসার অচৈতন্য হয়ে পড়েন। নৌ-সেনার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁকে তড়িঘড়ি কারোয়ারের নৌ-সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, শেষমেশ জীবনের সঙ্গে মৃত্যুর লড়াইতে হেরে গেল জীবন। একটি লড়াকু জীবন।
যদিও, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে আইএনএস বিক্রমাদিত্য-র ততটা ক্ষতি হয়নি বলে জানানো হয় নৌ-সেনার পক্ষ থেকে। জাহাজের কর্মচারীরাই যে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন অসামান্য তৎপরতার সঙ্গে, জানানো হয় সেই কথাও। যার পিছনে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব শহিদ ডি এস চৌহান এর। তাঁর একার চেষ্টাতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আরও পড়ুনঃ অনুব্রত গড়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে তিন হাজার কর্মী সমর্থক
আগুনের উৎস কী, তা খুঁজে দেখার জন্য তদন্ত শুরু করেছেন নৌসেনার আধিকারিকেরা। তদন্তকারী দল গঠিত হয়েছে ইতিমধ্যে। তবে জাহাজে থাকা আধিকারিক এবং কর্মীদের তৎপরতায় এ যাত্রায় জাহাজের পুরো অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। ভারতীয় নৌ বাহিনীর সবথেকে বড় এবং ভারী জাহাজ হল আইএনএস বিক্রমাদিত্য। এর ওজন ৪০ হাজার টন। কেন এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটল, তা নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানানো হয় নৌ বাহিনীর পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুনঃ অনুপমের হয়ে যাদবপুরে প্রচারে অংশ নিলেন WWE চ্যাম্পিয়ন গ্রেট খালি
এদিন নৌসেনার তরফে জানানো হয়েছে, কর্নাটকের কারবর বন্দরে ঢোকার সময়ে আচমকা বিশাল জাহাজের একাংশে আগুন লেগে যায়। আগুন নেভানোর কাজ করার সময় ওই অফিসারের মৃত্যু ঘটে। নৌসেনার এক মুখপাত্র জানান, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ডি এস চৌহান আগুন নেভানোর কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। যেখানে আগুন লাগে সেখানে প্রচণ্ড আগুন ও ধোঁয়ায় ভর্তি ছিল। ভেতরে গিয়ে তিনি ওই ধোঁয়ায় অচৈতন্য হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুনঃ পাঁচ বছরে একটাও রাম মন্দির করতে পারল না বিজেপি, রানীগঞ্জে বললেন মমতা
মুখপাত্র জানান, দ্রুত ব্যবস্থা নিতে গিয়েই ধোঁয়ায় দম আটকে মৃত্যু হয় ওই অফিসারের। তবে, ওই ব্যবস্থাগ্রহণের ফলে, জাহাজের অস্ত্রাগারের কোনও ক্ষতি হয়নি। উদ্ধার করে চৌহানকে কারোয়ারের নৌ-হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি বোর্ড অফ ইনক্যুয়ারি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ টার্গেট মুর্শিদাবাদ, অধীরকে হারাতে বহরমপুরে ইমামদের নিয়ে সভা শুভেন্দুর
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ২.৩ বিলিয়ন ডলার দিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারটি কেনে ভারত। তার মাসখানেক আগে, ২০১৩ সালে নভেম্বর মাস থেকে এটি ভারতীয় নৌ বাহিনীর অংশ হয়ে যায়। কর্নাটকের কারোয়ার বন্দরেই থাকে এই বিশাল জাহাজটি। ২৮৪ মিটার লম্বা এবং ৬০ মিটার উঁচু এই জাহাজটি উচ্চতায় একটি ২০ তলা বাড়ির সমান।