The News বাংলা,নিউ দিল্লি: মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। বুধবার সকাল ৭টা থেকেই শুরু হয়ে গেছে দুটি রাজ্যে ভোটগ্রহণ। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে ৫ রাজ্যের এই বিধানসভা ভোটকে সেমিফাইনাল বলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গরু তুমি কার ? বিজেপির ‘গোমাতা’য় হাত কংগ্রেসের
মধ্যপ্রদেশে এবার বড় চ্যালেঞ্জ শিবরাজ সিংহ চৌহানের সামনে। এ রাজ্যে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। গতবার রাজ্যের ২৩০ টি আসনের মধ্যে ১৬৫ টি ছিল বিজেপির দখলে। কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৫৮ টি আসন। কিন্তু ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ৯ শতাংশ। এবার বিধানসভা নির্বাচনে ৪-৫ শতাংশ ভোট এদিক-ওদিক হলেই রঙ বদলাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুনঃ রামমন্দির নয়, হিন্দু ক্ষোভ থামাতে অযোধ্যায় রামমূর্তির ঘোষণা যোগীর
অন্যদিকে উত্তর-পূর্বের একমাত্র কংগ্রেস শাসিত রাজ্য হল মিজোরাম। এ রাজ্যের ৪০ টি আসনের মধ্যে গতবার ৩৪ টি আসনই পেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু কংগ্রেসের সামনে এবার কঠিন লড়াই।
বুধবার ভোট হচ্ছে মধ্যপ্রদেশের ২৩০ টি বিধানসভা আসনে। রাজ্যের পুলিশ এবং কেন্দ্রের আধাসামরিক বাহিনী মিলিয়ে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা
প্রায় ১,৮০,০০০ জন। ভোটের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে হোমগার্ডদেরও। প্রায় ৫ কোটি ভোটার এই নির্বাচনে অংশ নেবেন। ২০১৩-র নির্বাচনে ২৩০ আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ১৬৬ টি আসনে। কংগ্রেস ও বিএসপি পেয়েছিল যথাক্রমে ৫৮ ও ৪ টি করে আসন। এবারও, বেশিরভাগ জনমত সমীক্ষা বলেছে মধ্যপ্রদেশে সামান্য হলেও এগিয়ে বিজেপি।
অন্যদিকে, দেশের পাঁচটি কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মধ্যে মিজোরাম অন্যতম। বিজেপি চাইছে ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ের ধারা অব্যহত রাখতে। পাশাপাশি, মিজোরাম জিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সমস্ত রাজ্যে গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে দিতেও মরিয়া পদ্ম শিবির। অন্যদিকে মিজোরাম ধরে রাখার পাশাপাশি ১৫ বছর বাদে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় ফিরতে চায় কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ‘কাসভের বেটি’, জঙ্গি চিনিয়ে দেবার ‘পুরষ্কার’ পাচ্ছে দেবিকা
সেই ১৯৯০ সাল থেকেই মধ্যপ্রদেশে বিজেপির চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি রয়েছে। কয়েকটি সমীক্ষা বলছে, ভোটারদের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ আছে এবার। কিন্তু ২০০৫ সাল থেকে সরকার চালানো শিবরাজ সিংহ চৌহান মনে করছেন, তাঁর সরকার যে কাজ করছে তা মনে রেখে বিজেপির পাশেই থাকবেন ভোটাররা।
নির্বাচনের প্রচারে গোটা রাজ্য চষে ফেলা মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মনে হচ্ছে, লড়াইটা প্রতিষ্ঠান আর প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার। গত কয়েক সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশে প্রচার করে গিয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকে প্রচারে ঝড় তুলতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: আন্দামান নর্থ সেন্টিনেলে ‘জাড়োয়া’দের তীরের মুখে ভারতীয় কমান্ড্যান্ট
অন্যদিকে, মায়াবতীর দল বিএসপির সঙ্গে জোট করতে পারেনি কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের তফশিলি ভোটারদের মধ্যে মায়ার দলের যথেষ্ট প্রভাব আছে। ২০১৩ সালের ভোটের ফলে দেখা গিয়েছে, এই দুটি দল এক হয়ে লড়লে ৪১ টি আসনে জোটের জয় হত। কংগ্রেস নেতা কমলনাথ জানিয়েছিলেন, মায়াবতীর দাবি মেনে আসন বন্টন করা হলে জোটের জয় হত না।
মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের তিন নেতা কমলনাথ, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দ্বিগবিজয় সিং এবং জ্যোতিতাদিত্য সিন্ধিয়ার মধ্যে থাকা ‘লড়াই’ নির্বাচনের প্রচারে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কংগ্রেসের দাবি, দলের মধ্যে কোথাও কোনও সমস্যা নেই।
আরও পড়ুন: ধর্মান্তরকরণের উদ্দেশ্যে এসে আদিবাসীদের হাতে নিহত মার্কিন খ্রীষ্টান মিশনারী
কংগ্রেসের দাবি, বিজেপির থেকে তাঁর দল ২.৮ শতাংশ বেশি ভোট পেতে পারে। অন্যদিকে, বেশিরভাগ জনমত সমীক্ষা বলেছে সামান্য হলেও এগিয়ে বিজেপি। একটি জনমত সমীক্ষা বলছে, ১১৬ টি আসন পেতে পারে বিজেপি। সরকার গড়তে এই আসনই দরকার।
অন্যদিকে, মিজোরামের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী লাল থানওয়ালা তৃতীয় বার জয় পেতে মরিয়া। অন্যদিকে, খাতা খুলতে চায় বিজেপি। ১৯৮৭ সালে পূর্ণাঙ্গ রাজ্য হওয়ার পর থেকে কংগ্রেস এবং মিজোরাম ন্যাশনাল পার্টির দখলে থেকেছে মিজোরাম। এ পর্যন্ত কোনও দল টানা তিনবার সরকার গড়েনি মিজোরামে।
আরও পড়ুন: মায়ের পর এবার মোদীর বাবাকে নিশানা করে কুমন্তব্য কংগ্রেসের
মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড় এবং মিজোরামের ভোট গণনা ১১ ডিসেম্বর। ৫ রাজ্যের এই বিধানসভা ভোটে অর্থাৎ ২০১৯ এর ফাইনালের আগে কারা এগিয়ে থাকছে তা ওইদিনই জেনে যাবে ভারত।