অযোধ্যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জমায়েতে অশান্তির আশঙ্কায় সংখ্যালঘুরা

688
Image Source: Google

The News বাংলা, অযোধ্যা: লোকসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে, রামমন্দির নিয়ে উত্তেজনার পারদ ততই চড়তে শুরু করেছে। প্রতিবারের মতোই এবারের লোকসভা ভোটেও রামমন্দিরের দাবী অন্যতম বড় ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে। আর সেই নিয়েই অযোধ্যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জমায়েতে অশান্তির আশঙ্কায় শঙ্কিত সংখ্যালঘুরা। ফের একবার ১৯৯২ এর স্মৃতি ফিরছে বাবরি মসজিদ এলাকায়।

Image Source: Google

সম্প্রতি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, তাঁর এক বক্তব্যে রাম জন্মভূমিতেই রামমন্দির গড়ার কথা উল্লেখ করেন এবং সাংবিধানিক পথেই রামমন্দির সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তির কথা জানান। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও রাম জন্মভূমি অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি করতে সুর চড়িয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ রাম মন্দির না বাবরি মসজিদ, লড়াই পিছিয়ে গেল

সুপ্রিম কোর্টে রামমন্দির সংক্রান্ত মামলা এখনও অমীমাংসিত। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছে, জানুয়ারীর আগে রামমন্দির সংক্রান্ত মামলার দিনক্ষণ জানানো সম্ভব নয়। এদিকে বিজেপি তথা সংঘ পরিবার বরাবর রামমন্দির তৈরিকে তাদের নির্বাচনী প্রচারের হাতিয়ার করে এসেছে।

Image Source: Google

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং গত বছর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপির অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে অনুঘটকের কাজ করেছে রামমন্দির রাজনীতি। এর ২০১৯ এও সেই একই ইস্যু উঠে আসতে চলেছে লোকসভা ভোটে।

আরও পড়ুনঃ পুরাণ শিক্ষা না ভোট কোন লক্ষ্যে মোদীর ‘শ্রী রামায়ণ এক্সপ্রেস’

কিন্তু সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে, আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে যে রামমন্দির তৈরির দিশা দেখানো সম্ভব হচ্ছে না, তা ভালোই বুঝতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। তাই আগেভাগেই রামমন্দির ইস্যুকে তীব্রতর করে জনগনের কাছে পৌঁছাতে চাইছে সংঘ পরিবার। রামমন্দিরের দাবিতে দেশজুড়ে সমাবেশের ডাক দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে, যার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হতে চলেছে অযোধ্যা, বেঙ্গালুরু, নাগপুর এবং দিল্লিতে।

Image Source: Google

ফৈজাবাদের নাম পরিবর্তন থেকে শুরু করে রাজা দশরথের নামে বিমানবন্দর বা অযোধ্যায় রামের মূর্তি স্থাপনের ঘোষণায় ইতিমধ্যেই হিন্দুত্বের হাওয়া তোলার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তারই মধ্যে আগামী ২৫শে নভেম্বর জোড়া সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও শিবসেনা।

Image Source: Google

শিবসেনার জমায়েতে স্বয়ং উদ্ধব ঠাকরে বক্তৃতা রাখবেন। দুটি সমাবেশেই লক্ষাধিক লোকের জমায়েত হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। আর এই জোড়া সমাবেশ নিয়েই আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে। সিঁদুরে মেঘ দেখছেন তাঁরা।

Image Source: Google

রামমন্দির নিয়ে ইকবাল আনসারি নামে এক মামলাকারী, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা প্রদানের আর্জি জানিয়েছেন। অনেকেই ইতিমধ্যে অযোধ্যা ছাড়ার কথাও চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।

আরও পড়ুনঃ মোদীর ভারতে সর্দার প্যাটেলের রেকর্ড ভাঙবে ছত্রপতি শিবাজীর মূর্তি

অযোধ্যায় ফের জমা হচ্ছেন সেই করসেবকরা। যদিও এই বিষয়ে বিশেষ হেলদোল নেই উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের। সংখ্যালঘুদের ভয়ের কারন নেই উল্লেখ করেও সাধুসন্তদের সমাবেশকেই সীলমোহর দিয়েছে যোগী প্রশাসন।

Image Source: Google

১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর এইরকমই এক পরিস্থিতিতে বিতর্কিত বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয় করসেবকরা। এতে সমর্থন ছিল শিবসেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপির। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা বাঁধে। এতে প্রায় ২ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। সেবারও শান্তিপূর্ণ অবস্থানের আশ্বাস দিয়েছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।

ঘটনা আবার সেই একই দিকে গড়াচ্ছে। এবারেও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না তো? কোন ঝামেলা হবে না তো? অযোধ্যায় সংখ্যালঘুরা কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন