The News বাংলা, কলকাতাঃ এবার আর কোন ভুল নয়। ২০১৪ থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০১৯ এর লোকসভায় আর ভুল করতে চাইছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। প্রার্থী বাছাইয়ে এবার কড়া সতর্কতা নিয়েছেন খোদ দলনেত্রীই।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করার রণকৌশল পরিবর্তন করছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। এবারের প্রার্থী বাছাই করায় ‘রাজনৈতিক কৌশল’ নিতে চাইছে দল। দলের মধ্যে নতুন চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, দল চাইছে যে এবার শুধুমাত্র তারকাদের উপরে ভরসা করে টিকিট বন্টন করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না।
টিকিট দেওয়ার সময় রাজনৈতিক পেক্ষাপট দেখে, কাজের নিরিখে লোকসভার প্রার্থী বাছাই করার উপরে জোর দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। রাজনীতির উপর ভিত্তি করেই ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের রণকৌশল নির্ধারণ করা সঠিক হবে, বলে মনে করছেন দলীয় উচ্চ পদাধিকারীরা। ইতিমধ্যেই দলে আলোচনা শুরু হয়েছে যে প্রার্থী বাছাই ক্ষেত্রে সমস্ত দিক খুঁটিয়ে দেখার পর কোন সিদ্ধান্তে যাওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ
প্রকাশ্যে গ্রুপ চ্যাট রেকর্ডিং, জেলাশাসকের স্ত্রীর ভাষাও সমান অশ্লীল
মন্দির মনোরঞ্জনের জায়গা নয়, স্বর্ণমন্দিরে নিষিদ্ধ সেলফি ছবি ভিডিও
একদিনে বহিষ্কৃত দুই তৃণমূল সাংসদ, দিদিকে ছেড়ে মোদীর দলে আর কে কে
এই নিয়ে দলের অন্দরমহলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে এখন যেসব তারকারা দলে রয়েছেন তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কি হবে? আদৌ তাঁরা কি এবারের লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাবেন? তাপস পাল, সন্ধ্যা রায়, শতাব্দী রায়, প্রসূন ব্যানার্জী, মুনমুন সেন, দেব সহ একঝাঁক অন্য পেশার লোক কি তাহলে টিকিট পাবেন না?
রাজনৈতিক পেক্ষাপট না থাকার কারণে আগেও দলকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। বিশেষ করে তাপস পালের বেফাঁস মন্তব্য ও রোজভ্যালিতে তাঁর যুক্ত থাকার কারণে আগেই স্পষ্ট যে এবার তাঁর টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ক্ষীণ। ঠিক সেইভাবেই দেবের নিজের ফিল্ম জগতের ব্যস্ততা রয়েছে।
একইভাবে সন্ধ্যা রায় ও মুনমুন সেনের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। শতাব্দী রায় ও প্রসূন ব্যানার্জীর কিছুটা হলেও অন্যদের থেকে সন্তোষজনক অবস্থান রয়েছে। কিন্তু টিকিট পাকা নয়। বাকিদের জায়গায় কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাতে পারে দল, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ
ঐতিহাসিক কুম্ভমেলা সম্পর্কে একনজরে সব কিছু জেনে নিন
কুম্ভমেলায় বিশ্বরেকর্ড গড়ল যোগীর রাজ্য, তৈরি হল আস্ত একটা শহর
সোনিয়া রাহুলকে ১০০ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি দেওয়ার নোটিশ
তাই সংসদের টিকিট বাছাই করার ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস এবার শুধু আবেগ দিয়ে নয়, তার পাশাপাশি রাজনৈতিক দূরদর্শিতাকেও কাজে লাগিয়ে এগোতে চায়। বুধবারই বহিষ্কার করা হয়েছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁন ও বীরভূমের বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরাকে। এরপরেও যা জানা যাচ্ছে, আরও প্রায় ৯-১০ জন তৃণমূল সাংসদ এবার কোনরকমেই আর টিকিট পাচ্ছেন না।
তৃণমূল অন্দর থেকে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে, ২০১৯-এর লোকসভায় টিকিট অনিশ্চিত তৃণমূলের ৯ বর্তমান সাংসদের। নদীয়ার কৃষ্ণনগরের সাংসদ তাপস পাল, দক্ষিণ ২৪ পরগণার মথুরাপুর লোকসভার সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়া, হুগলীর আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, মেদিনীপুরের সাংসদ সন্ধ্যা রায়, বাঁকুড়ার সাংসদ মুনমুন সেন, বর্ধমান-দুর্গাপুর এর সাংসদ মমতাজ সংঘমিত্রা রায়, উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুরের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী, হাওড়া লোকসভার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়।
এদের মধ্যে বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় ও হাওড়া লোকসভার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় টিকে গেলেও যেতে পারেন শেষ পর্যন্ত। তবে অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমে চান না শতাব্দী রায়কে। সেক্ষেত্রে শতাব্দী রায় এর আসন বদলান হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ
বাংলায় রাস্তায় বিজেপির রথ চলবে কিনা ঠিক হবে আগামী মঙ্গলবার
গুরুবারে শুরু অযোধ্যায় রাম মন্দির বাবরি মসজিদ শেষ লড়াই
ভোটের হাতিয়ার, লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাস হিন্দু সংরক্ষণ বিল
সূত্রের খবর, প্রায় ৯-১০ জন সাংসদ নানা কারণে এবার টিকিট নাও পেতে পারেন। এর মধ্যে স্বাস্থ্যজনিত কারণ যেমন রয়েছে, তেমন কোনও কোনও সাংসদের পাঁচ বছরের রিপোর্ট কার্ড না-পসন্দ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। কারোর উপর আবার মুকুল রায় বা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচেন তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য ৪২-এ ৪২। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ঘাসফুলের আঘাতে উড়ে গিয়েছিল কাস্তে-হাত-পদ্ম। ৩৪টি আসনে জয় পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধীদের মধ্যে ৪টি আসন পেয়ে কিছুটা মান রেখেছিল কংগ্রেস।
তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২০১৯-এর পর ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন আরও হাড্ডাহাড্ডি হবে। সেক্ষেত্রে মমতা নিজের টিমকে আরও সুসজ্জিত করতে চাইছেন। তাই লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবার অনেক সতর্ক হচ্ছেন তিনি। তারকা নয়, এবার তাই রাজনৈতিক প্রার্থীর দিকেই জোর দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।