লোকসভা ভোটে লজ্জাজনক ফলের পর; শোভনের বিজেপি যাওয়া আটকাতে উদ্যোগী মমতা। তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া নেতাদের আবার ফিরিয়ে নিতে; উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম নাম অবশ্যই ভাই শোভন চাটার্জী।
শুধু মন্ত্রীত্ব নয়, কলকাতার মেয়র পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় শোভন চাটার্জীকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে। শেষ হয় কয়েক দশকের দিদি-ভাইয়ের সম্পর্ক।
ব্যক্তিগত জীবনে তোলপাড় চলেছে। স্বাভাবিক কারণেই মানসিকভাবে প্রবল চাপের মুখে ছিলেন একটা সময়। এরকমই কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন দমকলমন্ত্রী ও আবাসন মন্ত্রী শোভন চ্যাটার্জী। যদিও সবটাই হয় ‘দিদির’ নির্দেশেই। কারণ হিসাবে উঠে এসেছিল; শোভনের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এর ঘটনা।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে ছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চ্যাটার্জী। বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে স্ত্রী রত্নার সঙ্গে চরম বিরোধ চলছে তাঁর।
মিল্লি আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এক সময়ে কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন; ওয়েবকুটার সদস্য থাকলেও ২০১৪-তে তিনি যোগ দেন; তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপায়। সেখানে তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তিও ছিল অনেক বেশি।
ওয়েবকুপায় অবস্থানের জেরে; তৃণমূলের পদাধিকারী মহলে তাঁর পরিচিতি বাড়তে থাকে। যোগাযোগ গড়ে ওঠে মেয়র শোভন সহ একাধিক পদস্থ আমলা এবং মন্ত্রীর সঙ্গে।
এরপরেই মমতার নির্দেশে ভেঙে দেওয়া হয়; তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েরকুপার রাজ্য কমিটি। বাদ দেওয়া হয় তাঁর ঘনিষ্ঠ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠের এই পদ থেকে অপসারণ; খুব একটা ভাল ভাবে নেননি শোভন। এরপর মেয়র ও মন্ত্রিত্ব পদ থেকে শোভনের পদত্যাগ। আর সেই থেকেই বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা।
শোভন এবং বৈশাখী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন; বলে বিজেপিও দাবি করে লোকসভা ভোটের আগে। তবে এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব; কোনও রকম মন্তব্য করেনি। ভোটের আগেই দিল্লিতে গিয়ে দলের সদর দফতর থেকে; বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেবেন বলে জল্পনাও তৈরি হয়। কিন্তু বৈশাখী নিজে সে সব জল্পনা নস্যাৎ করে দেন।
লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর ফের সেই শোভনকেই আবার; দলের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিতে চান মমতা। তবে শর্ত মেনে বান্ধবী বৈশাখীকে ছেড়ে; ফের তৃণমূলে যে শোভন ফিরবেন না; সেটা একেবারেই পরিষ্কার।