“ফুচকা” এই নামটা শুনলেই তো জিভে জল চলে আসে। কুড়মুড়ে গোলাকৃতির একটা ভেতর মশলাদার ঝাল ঝাল চটপটি আর তার উপর টকমিষ্টি তেঁতুল জল। আস্ত একটা ফুচকা মুখে পুরে নিয়ে কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে যায়, এর পর মুখে স্বাদের যে ঝড় ওঠে সেটার তুলনা কি অন্যকিছুর সঙ্গে হয়? কিন্তু কি ভাবে বাংলায় এল ফুচকা?
আরও পড়ুনঃ এই গাছের পাতা খান, পৃথিবীর কোন রোগ আপনাকে স্পর্শ করতে পারবে না
আমাদের আশেপাশে এমন খুব কম মানুষদেরই খুঁজে পাওয়া যাবে যারা ফুচকা খেতে ভালবাসে না। আমাদের কাছে এই খাবারটি এত এত প্রিয় অথচ সেই ফুচকার ব্যাপারে বিস্তারিত আমরা কজনই বা জানি? খুব কম জনই জানে মুখোরচক ফুচকা দুই বাংলা সহ পুরো উপমহাদেশেরই একটি বিখ্যাত জনপ্রিয় জলখাবার কিংবা স্ন্যাকস।
আরও পড়ুনঃ বিপদ এড়াতে ভেজাল দুধ কিভাবে চিনবেন জেনে নিন
ফুচকার আছে নানারকমের ধরন। গোলগাপ্পা, ফুলকি, টিক্কি, পানি কে বাতাসে, ফুচকা, গুপচুপ, বাতাসি, পাকাডা, পানিপুরি কিংবা পাকোরিসহ নানা নাম।এসবের নামকরণের নজিরগুলো বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।
আরও পড়ুনঃ গরম ভাতের সঙ্গে কি খেলে অনেক রোগ থেকে আরোগ্য পাবেন
গোলগাপ্পার নামকরণ গোল একটা ফুচকাকে এক গাপ্পায় অর্থাৎ একেবারে মুখে পুরে নেওয়ার কারণে হয়েছে। আবার পানিপুরি বলা হয় ফুলন্ত মচমচে পুরির ভেতর টক-ঝাল-মিষ্টি জল দিয়ে খাবার কারণে।
আরও পড়ুনঃ মদ খেলে বাড়ে স্মৃতিশক্তি কমে স্নায়ুরোগ
ফুচকার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রচলিত নাম হলো পানিপুরি, যার উদ্ভব হয়েছিল দক্ষিণ বিহারের মগধে। প্রথম দিকে ফুলকি নামে পরিচিত এই খাবার সম্পর্কে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক জার্নাল অব ইন্ডিয়া বিশদ বিবরণ রয়েছে। ওই বিবরণে এ খাবারের উৎপত্তিস্থল হিসেবে অবশ্য বারানসির কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ চিকেন খেলেও বাড়ছে বিপদ বলছে রিপোর্ট
জনপ্রিয় খাবার লুচির ক্ষুদ্র সংস্করণকে শক্ত কুড়মুড়ে করে খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে মোগলাই খানার সংস্পর্শে এসে এর গাঠনিক আঙ্গিকে পরিবর্তন আনেন ভারতীয়রা। সাধারণ শক্ত লুচি পরিণত হয় মসলাদার-রসাল গোলগাপ্পা তথা পানিপুরিতে, যা বঙ্গদেশে ফুচকা নামে পরিচিত।
আরও পড়ুনঃ যৌবন ধরে রাখতে এই ভেষজ পাতার জুড়ি নেই
মরুভূমি অঞ্চল রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে পাতাসি নামে পরিচিত এ খাবারকে তামিলনাড়ুতে পানিপুরি নামে ডাকা হয়। তবে পাকিস্তান, নয়াদিল্লি, জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, মধ্য প্রদেশ ও হিমাচল প্রদেশে এর নাম গোলগাপ্পা।
আরও পড়ুনঃ আমলকির আছে বেশ কিছু অসাধারণ উপকারিতা
তেলেঙ্গানা, উড়িষ্যা, ছত্তিশগড়, হায়দরাবাদের অনেক অঞ্চলে একে ডাকা হয় গুপচুপ নামে। কিন্তু নেপালে এবং শ্রীলংকায় এ খাবার জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ফুলকি নামে। ফুচকাকে একান্ত দক্ষিণ এশীয় কুজিন হিসেবে ধরা হয়।
আরও পড়ুনঃ শরীরের ভারসাম্য বাড়াতে ব্যায়াম
অঞ্চলভেদে নামকরণের ভিন্নতার পাশাপাশি এর পরিবেশনের পদ্ধতিতেও ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। আর মূল পার্থক্যটি লক্ষ করা যায় পুর তৈরিতে। নানা জায়গায় আলুর পুর, সবজির পুর, স্যালাডের পুর, ঘুঘণির পুর কিংবা কেবল ডাবলি মিশ্রিত টকমিষ্টি জল ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুনঃ একটু সতর্ক হন দূরে থাকুন ক্যানসারের হাত থেকে
কোনও কোনও এলাকায় ঝালের পরিবর্তে মিষ্টিজাতীয় পুর ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে সব ঠিক থাকে, কেবল তেঁতুল জলের পরিবর্তে দেখা যায় ধনিয়া পাতার চাটনি, পুদিনা মিশ্রিত জল, লেবুর জল কিংবা মিষ্টি খেজুর জল।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বজুড়ে বাড়ছে নারীদের স্তন ক্যানসার, ভয়াবহ এই রোগের প্রধান ৮টি লক্ষণ
তবে দেশজুড়েই দই-ফুচকা বা টক দই সহযোগে পরিবেশিত ফুচকা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছে। যেখানে পুরে নানারকম বুট, চানাচুর, মিষ্টি পাপড়ের সঙ্গে দেওয়া হয় বাদাম কুচি। উপরে তেঁতুল জলের বদলে থাকে টক-মিষ্টি দই।
আরও পড়ুনঃ অবশ্যই জেনে রাখুন বাচ্চার কাশি ও হাঁপানি নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ
সাধারণত শহর-গ্রামের আনাচে কানাচে ছোট ছোট বোল, ভ্যান এবং শপিং কমপ্লেক্স কিংবা স্কুল কলেজের পাশের দোকানগুলোই ফুচকা বিক্রির আখড়া। এখন সিনেমা হলের আশেপাশে বা যেকোন অঞ্চলেই বিকালের পর ফুচকাওয়ালা দেখা যায়।
আরও পড়ুনঃ অনেক অসুখ দূরে রাখতে অবশ্যই প্রতিদিন বাঁধাকপি খান
দেশ বিদেশের নানা ব্লগ, ট্রাভেলিং এবং ফুড ডকুমেন্টারি অনুষ্ঠানগুলোতে ফুচকার কথা উঠে এসেছে বারবার। ফুড অ্যান্ড ট্রাভেলিং চ্যানেল “টিএলসি” এবং “ফক্স ট্রাভেলার”-এ বহুল প্রচলিত অনুষ্ঠান ফুড সাফারিতে ফুচকাকে আখ্যায়িত করা হয়েছিল “আ কম্পলিট বেঙ্গলি স্ট্রিটফুড” হিসেবে।
আরও পড়ুনঃ গাজর এর অসাধারণ উপকারিতা জেনে নিন
সম্প্রতি এক গবেষণায় ফুচকার ব্যাপারে মজাদার এক তথ্য উঠে এসেছে আর তা হলো- ফুচকার স্বাদ খুব দ্রুত মুখের টেস্ট বাডগুলোতে সঞ্চারিত হয় যার কারণে মন খারাপ থাকলে তা সহজেই ভাল হয়ে যায়।
আরও পড়ুনঃ সহজেই ঘরোয়া উপায়ে চোখের নিচের কালো দাগ দুর করুন
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।