অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টার জেলার কোনডাভেডুতে এক কৃষককে পিটিয়ে ও বিষ খাইয়ে মারার অভিযোগ উঠল মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নিজের ফসল ভর্তি জমিতে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি করতে জমি দিতে অস্বীকার করেছিলেন কৃষক কোটেশ্বর রাও ওরফে কোটাইয়া। এরপরেই ওই চাষিকে বিষ খাইয়ে ও পিটিয়ে খুন করে পুলিশ। আর এই নিয়েই সরগরম গোটা দেশ। সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে বিজেপি। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ।
মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সভা ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টার জেলার কোনডাভেডুতে। কৃষক কোটেশ্বর রাও ওরফে কোটাইয়ার ক্ষেতটাই ছিল সভাস্তলের সবচেয়ে কাছে। কিন্তু নিজের ভরা পেঁপে ক্ষেতে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর হেলিকপ্টার নামতে জমি ছাড়তে অস্বীকার করেছিলেন তিনি। পরিস্কার না করে দিয়েছিলেন অন্ধ্র পুলিশকে। আর মুখ্যমন্ত্রীর সভা চলাকালীনই কোটাইয়ার রক্তে মাখামাখি মৃতদেহ পাওয়া গেল তাঁরি ওই পেঁপে ক্ষেতেই।
অপরাধ, মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর হেলিকপ্টার নামবে জেনেও জমি ছাড়তে না চাওয়া। অভিযোগ, এরই শাস্তি হিসাবে ওই চাষিকে পিটিয়ে ও বিষ খাইয়ে খুন করে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে গুন্টার জেলার কোনডাভেডুর সব চাষী কৃষক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে রাজ্যের রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেও নিহত কৃষকের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু।
নিহত কৃষকের নাম কোটেশ্বর রাও ওরফে কোটাইয়া। চন্দ্রবাবুর হেলিকপ্টার নামার কিছুক্ষণ আগেই পেঁপে ক্ষেত থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, তাঁকে হাসপাতালে পৌঁছনোর থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন পুলিস আধিকারিকরা। স্থানীয় চাষি কৃষকরাই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ পেয়েও অনেক পরে চাপে পড়ে, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধীরা। তাদের দাবি, পুলিশি পিটিয়ে মেরেছে ওই কৃষককে। তাঁর ভরা পেঁপে ক্ষেতে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামতে দিতে অস্বীকার করায় এই পরিণতি হয়েছে কোটেশ্বরের।
ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে একটি ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, অচৈতন্য ওই কৃষককে কাঁধে করে একটি গাড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন ২ ব্যক্তি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের অন্যতম বিরোধী দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস।
বিজেপির তরফে সিবিআই তদন্ত দাবি করে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামার জমি না দেওয়াতেই ওই কৃষককে পিটিয়ে আধমরা করে তারপর তাঁর মুখে বিষ ঢেলেছে পুলিশই। যদিও তা অস্বীকার করেছে পুলিশ। সবমিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে চরম অস্বস্তিতে চন্দ্রবাবু নাইডুর সরকার।